গর্ভধারণের অক্ষমতা? কারণ হতে পারে “স্ট্রেস”
গর্ভধারণের প্রক্রিয়াটিতে যেমন নারীপুরুষ উভয়েরই অংশগ্রহণ দরকার হয়, তেমনি গর্ভধারণে অক্ষমতার পেছনেও নারী বা পুরুষ বা উভয়েরই ভূমিকা থেকে থাকে। অনেক সময়ে গর্ভধারণে অক্ষমতার কারণে বেশ বড় রকমের মানসিক চাপে থাকেন সেই দম্পতি। কিন্তু জানেন কি, এই স্ট্রেস হয়ে উঠতে পারে গর্ভধারণে অক্ষমতার অন্যতম কারণ।
Human Reproduction জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা যায়, যেসব নারীর শরীরে থাকে বেশি পরিমাণে আলফা-অ্যামাইলেজ তারা গর্ভধারণের ক্ষেত্রে অন্যদের চাইতে ২৯ গুণ কম সক্ষম। এই আলফা-অ্যামাইলেজ হলো এমন এক এনজাইম যা আমাদের শরীরে স্ট্রেসের পরিমাণ চিহ্নিত করে।
এই গবেষণার জন্য ৫০০ জনেরও বেশি নারীকে বেছে নেওয়া হয় যাদের বয়স ছিলো ১৮-৪০ বছরের মাঝে। তাদের শরীরে বন্ধ্যাত্বের কোনো উপসর্গ ছিলো না এবং তারা গর্ভধারণের চেষ্টা করছিলেন।
গবেষণা শুরুর দিনে একবার এবং সেই প্রত্যেকের ঋতুচক্রের শুরুতে একবার করে তাদের স্যালিভার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গবেষণা চলাকালীন ১২ মাস পর্যন্ত এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শরীরে স্ট্রেস নির্দেশ করে এমন দুই এনজাইম কর্টিসল এবং আলফা-অ্যামাইলেজ তাদের স্যালিভায় কি পরিমাণে আছে তা বিশ্লেষণ করে দেখা হয়।
আমেরিকান এই গবেষণায় স্ট্রেস এবং গর্ভধারণে অক্ষমতার মাঝে এই সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। আগেও এক ইউরোপীয় গবেষণায় উচ্চ মাত্রায় স্ট্রেস থেকে গর্ভধারণে অক্ষমতার সংযোগ পাওয়া গিয়েছিলো।
যেসব নারীর শরীরে আলফা-অ্যামাইলেজের পরিমাণ বেশি থাকে, তাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা কম থাকে। এর উল্টোটাও সত্য অর্থাৎ শরীরে আলফা-অ্যামাইলেজ কম থাকলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই আলফা-অ্যামাইলেজের উচ মাত্রা নারীর বন্ধ্যাত্বের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে প্রায় দুই গুণ।
গবেষণার ফলাফল থেকে বোঝা যায়, যেসব নারীরা গর্ভধারণের চেষ্টা করে চলেছেন তাদের উচিৎ স্ট্রেস কমিয়ে রাখার জন্য যোগব্যায়াম, ধ্যান এসব প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া।
অনেক সময়েই দেখা যায়, গর্ভধারণে অক্ষমতার কারণে দম্পতিরা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এতে বরং স্ট্রেস আরও বাড়ে এবং গর্ভধারণ আরও কঠিন হয়ে পড়ে। গর্ভধারণের চেষ্টা করার আগেই উভয়ের উচিৎ নিজেদের শরীরে কোনো সমস্যা আছে কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেওয়া এবং এর পর সব রকমের স্ট্রেস থেকে নিজেদের মুক্ত রাখা।