জেনে রাখুনযৌন স্বাস্থ্যশিশুর স্বাস্থ্য

কীভাবে বুঝবেন আপনার আদরের সন্তান যৌন হয়রানির শিকার?

শিশু যৌন হয়রানির শিকার দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। যে কোনো স্থানে যে কারো দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হতে পারে আপনার আদরের সোনামণি। বিশেষ করে কাছের মানুষজন দ্বারাই এই কাজ বেশি হয়ে থাকে। হয়তো আপনি পরম বিশ্বাসে নিজের আদরের সন্তানটিকে একজন যৌন নিপীড়কের হাতে তুলে দিচ্ছেন অথচ আপনি তা টেরও পাচ্ছেন না। আপনার সন্তান আপনাকে আকারে ইঙ্গিতে বোঝাতে চাইলেও নজর করছেন না আপনি। কিন্তু এতে আপনার সন্তানের মনের ওপর পড়ছে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব। তার শৈশব একেবারে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাই যতো ব্যস্তই থাকুন না কেন নিজের সন্তানের দিকে একটু নজর দিন। দেখুন তো তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন এসেছে কিনা? যে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে তো? একজন অভিভাবক হিসেবে নিজেকে সচেতন করে তুলুন আজই।

১) আচার আচরণে পরিবর্তন

শিশু অনেক বেশি চুপচাপ হয়ে পড়েছে কিনা লক্ষ্য করুন অথবা অল্পতেই অনেক বেশি রাগারাগি ও চিল্লাচিল্লি করে কিনা দেখুন কিংবা টাকে কি সব সময় ভয় পেতে দেখেন কিনা খেয়াল করে দেখুন। যদি কোনো শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয় তার মনের ওপর যে প্রভাব পড়ে তার কারণে সে তার স্বাভাবিক আচরণ থেকে সরে আসে। সুতরাং দেখুন এই লক্ষণগুলো রয়েছে কিনা আপনার শিশুর মধ্যে।

২) কিছু নতুন ব্যাপার লক্ষ্য করছেন কিনা ভেবে দেখুন

আঙুল চোষা, রাতে বিছানায় পস্রাব করে ফেলা, অন্ধকার ভয় পাওয়া এবং অপরিচিত মানুষ দেখলে অনেক বেশি ভয় পেয়ে যাওয়ার সমস্যা। এই সমস্যা যদি আগে থেকে না থেকে থাকে আপনার শিশুর মধ্যে অর্থাৎ ইদানীং বেশি লক্ষ্য করে থাকেন তবে তার দিকে বিশেষ নজর দিন।

৩) বিশেষ কোনো স্থানে এবং বিশেষ কোনো ব্যক্তির কাছে যেতে ভয় পাওয়া

আপনার সন্তান যদি বিশেষ কোনো স্থানে এবং কোনো বিশেষ স্থানে যেতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ভয় পায় তাহলে অবশ্যই তা তার দুষ্টামি ভাববেন না। হতে পারে সেই স্থান বা ব্যক্তি দ্বারা তার মনের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। সুতরাং এইসকল ব্যাপার এড়িয়ে না গিয়ে সতর্ক থাকুন।

৪) ঘুমে সমস্যা হওয়া

আপনার শিশুর যদি ইদানীং ঘুমাতে অনেক বেশি সমস্যা হয় এবং প্রায়ই দুঃস্বপ্ন দেখে চিৎকার করে তবে হয়তো ভাবতে পারেন সে কোনো কিছু দেখে ভয় পেয়েছে। অনেকেই ব্যাপারটি গুরুত্ব দিয়ে দেখেন না। কিন্তু তার ভয়ের কারণটা খুঁজে বের করা জরুরী। কারণ সকল লক্ষণ মিলে গেলে ধরে নিতে পারেন এটিও আপনার শিশুর যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার লক্ষণ।

৫) দেহে জখম, যার সঠিক ব্যাখ্যা খুঁজে না পাওয়া

বাচ্চারা ব্যথা পেলে কান্না করে এবং সে তা তার মাকে দেখায় এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু যদি দেখেন আপনার সন্তানের শরীরে নানা স্থানে ব্যাথার চিহ্ন যা সে নিজে থেকে আপনাকে দেখায় নি এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেও কোনো সঠিক উত্তর পাচ্ছেন না তখন সন্তানের ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকুন।

৬) স্বাভাবিক কাজকর্ম থেকে সরে আসা

যদি আপনার শিশুটি তার প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয় যেমন স্কুলে যেতে অনীহা, ভালো সুডেন্ট হওয়া স্বত্বেও খারাপ রেজাল্ট, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে অনীহা, খাওয়া দাওয়ায় অনীহা বিশেষ করে নিজের পছন্দের খাবারও খেতে না চাওয়া ইত্যাদি তাহলে আপনি নিজের সন্তানের প্রতি নজর দিন। কারণ এগুলো নিপীড়নের শিকার হওয়ার লক্ষণ।

৭) ইঙ্গিতপূর্ণ ছবি আঁকা

যখন বাচ্চারা এই ধরণের নিপীড়নের শিকার হয় তখন সে তা প্রকাশ করতে পারে না। সে অনেকাংশেই আকার ইঙ্গিতে প্রকাশ করতে চায়। এবং তারা বেছে নেয় ছবি আঁকার পথটাকে। দেখুন তো আপনার বাচ্চা ইঙ্গিতপূর্ণ কোনো ছবি আঁকছে কিনা এবং একই ছবি বারবার আঁকছে কিনা। কারণ এই সবই তার মনের ভাষা প্রকাশের মাধ্যম।

Related Articles

Back to top button