খাদ্য ও পুষ্টিস্বাস্থ্য টিপস

দারুণ কার্যকরী চিংড়ি দূর করবে ১০ টি শারীরিক সমস্যা

যদিও চিংড়ি একটি মাছ নয়, একটি পোকা, তবুও আমরা একে চিংড়ি মাছ হিসেবেই চিনে থাকি। যারা মাছ খেতে পছন্দ করেন না তারাও চিংড়িমাছ বেশ মজা করেই খেয়ে থাকেন। সকলের কাছেই চিংড়ির তৈরি খাবার অনেক পছন্দের।

কিন্তু আপনি জানেন কি? শুধু স্বাদই নয় চিংড়ির রয়েছে অসাধারণ স্বাস্থ্যউপকারিতা। চিংড়ি মাছ খাওয়ার অভ্যাস প্রায় ১০ ধরণের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এবং মারাত্মক কিছু রোগ থেকেও মুক্তি দিয়ে থাকে। তবে যাদের চিংড়ি মাছে অ্যালার্জি রয়েছে তারা এর থেকে দূরে থাকুন।

১) ক্যান্সার প্রতিরোধ করে –

চিংড়ি মাছে প্রায় ৫৭% সেলেনিয়াম থাকে। মাত্র ১০০ গ্রাম চিংড়ি মাছ থেকে অনেকটা সেলেনিয়াম পাওয়া সম্ভব। ইন্সটিটিউট বফ ফুড রিসার্চের গবেষকগণের মতে এই সেলেনিয়াম দেহে ক্যান্সারের কোষ গঠনে বাঁধা প্রদান করে থাকে। এই চিংড়িমাছের সেলেনিয়ামের সাথে ব্রকলি, পাতাকপি, ফুলকপির সালফোরাফেইনের মিশ্রণ এই প্রতিরোধ আরও বাড়িয়ে তোলে।

২) রক্তস্বল্পতা দূর করে –

চিংড়িমাছ আমাদের দেহের ভিটামিন বি১২ এর চাহিদা প্রায় ২৫% দূর করে। এবং দেহের রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অর্থাৎ রক্তের লাল কণিকা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে করে রক্তস্বল্পতা দূর হয়।

৩) শারীরিক দুর্বলতা কাটায় –

অনেকেই নানা সময় শারীরিক দুর্বলতায় ভুগে থাকেন যার পেছনে দেহে আয়রনের ঘাটতি দায়ী থাকে। চিংড়ি মাছ আমাদের দেহের ১৭% আয়রনের চাহিদা পূরণ করে এবং এনার্জি সরবরাহ করে। এতে করে শারীরিক দুর্বলতা কেটে যায়।

৪) হাড়ের ক্ষয় রোধ করে –

চিংড়ি মাছের মদ্ধে রয়েছে প্রায় ১৪% ফসফরাস। চিংড়ি মাছ খাওয়ার অভ্যাস দেহের ফসসরাসের চাহিদা পূরণ করে যা হাড়ের ক্ষয় রোধ করে ও হাড়কে মজবুত করতে বিশেষভাবে কাজ করে।

৫) ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে –

আমাদের মুটিয়ে যাওয়ার প্রথম ও প্রধান কারণ দেহে ফ্যাট জমা। চিংড়ি মাছের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৩% নিয়াসিন যা ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনকে এনার্জিতে পরিবর্তন করে এবং দেহে ফ্যাট জমতে বাঁধা দেয়।

৬) বিষণ্ণতা দূর করে –

মাত্র ১০০ গ্রাম চিংড়ি মাছে রয়েছে প্রায় ৩৪৭ মিলিগ্রাম ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। গবেষকদের মতে এই ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কে সেরেটেনিন উৎপন্ন করে যা বিষণ্ণতা দূর করতে বিশেষভাবে সহায়ক।

৭) মুত্রথলির নানা সমস্যা থেকে রক্ষা করে –

গবেষণায় দেখা যায় জিংক মুত্রথলি সংক্রান্ত নানা রোগ ও ইনফেকশন থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে। এমনকি মুত্রথলির ক্যান্সারের হাত থেকেও রক্ষা করে। চিংড়ি মাছের ১০০ গ্রামে পাওয়া যায় ১০-১৫ মিলিগ্রাম জিংক যা আমাদের মুত্রথলির সুস্থতা নিশ্চিত করে।

৮) থাইরয়েডের সমস্যা দূর করে –

চিংড়িমাছের প্রায় ১০% কপার আমাদের থাইরয়েড গ্রন্থির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে সহায়তা করে।

৯) ডায়বেটিসের হাত থেকে রক্ষা করে –

চিংড়িতে রয়েছে ৮% ম্যাগনেসিয়াম। গবেষণায় দেখা যায় ম্যাগনেসিয়াম দেহকে টাইপ ২ ডায়বেটিসের হাত থেকে রক্ষা করে। এবং রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

১০) ত্বক, চুল ও নখের সুরক্ষা করে –

চিংড়িমাছ আমাদের দেহের প্রায় ৪২% পর্যন্ত প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে থাকে। যা আমাদের ত্বক, চুল এবং নখের সুরক্ষায় কাজ করে। এবং এই প্রোটিনের চাহিদা পূরণ না হলে দামী ব্যান্ডের কোনো প্রোডাক্টের মাধ্যমেই ত্বক, চুল ও নখের সুরক্ষা সম্ভব নয়।

Related Articles

Back to top button