দৈনিক খবর

তীব্র শীতে কাঁপছে দেশের মানুষ

দেশের উত্তরের কনকনে হাওয়াই সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশের মানুষকে। কনকনে বাতাসের সঙ্গে যোগ হয়েছে কুয়াশা। আবহাওয়াবিদরাও বলছেন, দেশে তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও বাতাসের কারণে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। গতকাল বুধবার ৪ জানুয়ারি দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল এবং লালমনিরহাটে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাসে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। এমন অবস্থা আরও কয়েকদিন থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে রাজধানীতে ঢাকাতেও জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা ও শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দুদিন ধরে কনকনে ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে নগরীতে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, রাজধানী ঢাকাসহ খুলনা ও রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে গেছে। তীব্র শীতে স্বাভাবিক জীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন নগরীর নিম্ন আয়ের মানুষ।

শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন মানুষ। রাজধানীতে বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার এই তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই হিসাবে তাপমাত্রা কমেছে। সারাদেশের মতো রাজধানীতেও বুধবার সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি। ভোররাত থেকে ঘন কুয়াশায় মোড়া ছিলো ঢাকা। এতে করা যান চলাচল থেকে শুরু করে উড়োজাহাজ উঠা নামা ব্যাহত হয়েছে। কর্মজীবী ও শিক্ষার্থীদের পথে নেমে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

তাপমাত্রা খুব বেশি নিচে নামেনি। কিন্তু সারাদেশেই এখন তীব্র শীতের অনুভূতি। মূলত কুয়াশা ও মেঘের কারণে রোদ উঠতে না পারায় কমে গেছে দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান, একই সঙ্গে উত্তর দিক থেকে বয়ে যাওয়া ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে জেঁকে বসেছে শীত। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই পরিস্থিতি আগামী ৪ থেকে ৫ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে পৌষের হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় কাবু সব বয়সের মানুষ। মৃদু শৈত্য প্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। দিনের বেশিরভাগ সময়ই কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। নাজুক অবস্থা খেটে খাওয়া মানুষের।

মৃদু শৈত্য প্রবাহে নাকাল বিভাগীয় শহর রাজশাহীর মানুষ। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে নিম্ন আয়ের মানুষ। লালমনিরহাটে চরম কষ্টে দুঃস্থরা। বেশি দুর্ভোগে তিস্তা ও ধরলা নদী তীরবর্তী গ্রাম ও চরাঞ্চলবাসী। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে আছেন তারা। কনকনে হিমেল বাতাসে কাঁপছে উত্তরের জেলা মেহেরপুর। সন্ধ্যার পর মানুষের বাইরে চলাচল কমে গেছে। কুয়াশার দাপটে ভোগান্তি বেড়েছে ছিন্নমূলদের। দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।

দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের নয় উপজেলায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। হিমালয় থেকে আসা হিম হাওয়ায় কাবু নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু ও বয়স্করা। রোদের দেখা না মেলায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চলে তাদের। দেশের উত্তরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস; আর কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরো জেলায় বেশিরভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারাদেশে সর্বত্র সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। শ্রীমঙ্গলে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যেও মাঠে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। দীর্ঘ সময় ঘন কুয়াশার কারণে খেতের সবজি বাড়ছে না। ঘন কুয়াশায় যানবাহন চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। কুয়াশার কারণে গাড়ি ধীর গতিতে চালাতে হচ্ছে।

দিনের বেলায়ও সড়কে মহাসড়কে লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে যানবাহনকে। আর ঘন কুয়াশার কারণে বুধবার দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে যোগাযোগের নৌপথ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা বন্ধ ছিলো। গত কয়েক দিন ধরেই মৌলভীবাজারে জেঁকে বসেছে শীত। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে ঘন কুয়াশার কারণে দুপুর পর্যন্ত দেখা মিলছে না সূর্যের। কনকনে ঠাণ্ডায় ক্ষেত-খামারের কাজ আর গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষেরা।

Related Articles

Back to top button