Countrywideদৈনিক খবর

আমি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছি, মিডিয়া আমার বিরুদ্ধে একতরফা লিখেছে: বিচারক রুবাইয়া

ক্ষমতার প্রভাব ঘটিয়ে নিজের মেয়ের পক্ষপাতিত্ব করে এবার বিপাকে বিচারক রুবাইয়া। বিচারকের মেয়ে হওয়া স্কুলের শিক্ষকরাও তার মেয়েকে কিছু বলতো না। এই নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করার এই ছাত্রী ও তার মায়ের সাথে ঘটে গিয়েছে অমানবিক ঘটনা। বিচারকে পা ধরতে হয়েছে তাদের।

অভিভাবকের পা ছুঁতে বাধ্য করার’ অভিযোগে বগুড়া আদালত থেকে প্রত্যাহার করা বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। মঙ্গলবার রাতে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি করেন।

রুবাইয়া ইয়াসমিন বলেন, ‘আমি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছি। মিডিয়া আমার বিরুদ্ধে একতরফা লিখেছে। তারা আমার বা আমার পরিবারের কথা বলার জন্য অপেক্ষা করেনি। বিচারের ভার জাতির কাছে, দেশের মানুষের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে যুক্ত বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন আরও বলেন, ‘আমার নিজের সন্তান র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়েছে। আর কোনো ছাত্র যাতে র‌্যাগিং-গুন্ডামি-এর শিকার না হয় সেজন্য আমি প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানিয়েছি।

এসময় বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে গণমাধ্যমে জবানবন্দি দেন। সেই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারকরা শেয়ার করছেন।

বিবৃতিতে রুবাইয়া ইয়াসমিন বলেন, আমি কাউকে পা বাড়াতে নির্দেশ দেইনি বা কাউকে পা দিতে বাধ্য করিনি। এটি একটি অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অযৌক্তিক অভিযোগ। আমার মেয়ে 4 (চার) মাস ধরে মাহি এবং আফ্রিদা নামে দুই মেয়ের একটি গ্রুপের সদস্যদের দ্বারা র‌্যাগিং ও বুলিং-এর শিকার হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই স্থানীয় মেয়েদের র‍্যাগিং এবং উত্পীড়ন সহ্য করে আসছিলেন এবং তাদের সাথে থাকার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তারা সব সময় র‌্যাগিং এন্ড বুলিং করে আসছে যে আমার মেয়ে বিচারকের মেয়ে, সে বেশি সুযোগ-সুবিধা পায়, বিচারক আসলে সরকারের সেবক, বিচারক জনগণের সেবক। সত্য হল আমি একজন জনসেবক এবং জনসেবায় নিয়োজিত। কিন্তু 13 বছর এক মাস বয়সী একটি শিশুকে র‌্যাগিং ও উত্‌পীড়ন করা তার মা জনসেবক, বিচারক পাবলিক কমলা, জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া একটি অন্যায় আচরণ। ছাত্ররা বিচারক ও তার মেয়েকে নিয়ে মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে যাতে তাদের র‌্যাগিং ও বুলিং বিষয়গুলো মিডিয়ার সামনে না আসে এবং বিচার বিভাগকে নিয়ে অপমানজনক কথা ছড়িয়ে বিচারকদের বিরুদ্ধে জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি করছে।

“আমি মিডিয়া থেকে দূরে রয়েছি এবং আমার এবং আমার শিশুকন্যার গোপনীয়তার কথা মাথায় রেখে কোনো বিবৃতি দিইনি। কিন্তু মিথ্যা অপবাদ সহ্য করা আমার পক্ষে কঠিন, তাই আমি সত্যকে সামনে রেখেছি।

উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ বগুড়ায় অভিভাবককে পা রাখতে বাধ্য করার অভিযোগে বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়।

কোনো কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছেন বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মেয়ে রুবাইয়া ইয়াসমিন ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলের নিয়মানুযায়ী, সব শিক্ষার্থীর ক্লাসরুম ঝাড়ু দেওয়ার কথা, কিন্তু বিচারকের মেয়ে কখনও শ্রেণীকক্ষ ঝাড়ু দেয় না। বিষয়টি নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।

গত সোমবার (২০ মার্চ) রাতে বিচারকের মেয়ে স্কুলের একটি ফেসবুক গ্রুপে তার সহপাঠীদের নিয়ে কটূক্তি করে একটি পোস্ট লেখেন। এতে কয়েকজন সহপাঠী ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করেন।

পরদিন মঙ্গলবার সকালে বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন বিদ্যালয়ের অভিভাবক সমাবেশে আসেন এবং প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে ৩ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ডেকে পাঠান। তিনি সাইবার ক্রাইম মামলা দায়ের করার হুমকি দেন, দাবি করেন যে ফেসবুকে তাকে এবং তার মেয়েকে নিয়ে ‘অপমানজনক কথা’ বলা হয়েছে।

এক পর্যায়ে বিচারক ছাত্রীর মাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. রাবেয়া খাতুন বিচারকের পক্ষে শিক্ষার্থীদের রায় দেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে থাকেন সাধারণ মানুষ। তারা বিচারকের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন।

তবে এই বিষয় গুলোকে অশ্বিকার করেছে সেই বিচার করক। তার কথা গুলো না শুনেই এক তরফা নিউজ করা হয়েছে বলে দাবি তার। ঘটনা সম্পর্কে এক তরফা শুনে নিউজ বানায়ে দেওয়া উচৎ না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Related Articles

Back to top button