Nationalদৈনিক খবর

ডা. জাফরুল্লাহ কখনো বিদেশে চিকিৎসা নেননি, বিনা খরচে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রস্তাবও ফিরিয়েছেন

না ফেরার দেশে চিলি গেছেন গণস্বাস্থ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডক্টর ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী। দেশের স্বাস্থ্য ব্যাবস্থার উন্নয়নে নানা কাজ করে গেছেন তিনি তিনি ছিলেন একজন জনস্বাস্থ্য চিন্তাবিদ। তিনি সবসময় দেশে একটি কার্যকর সাশ্রয়ী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চেয়েছেন। নিজের উদ্যোগে তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত একটি সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা তৈরি করেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। এই হাসপাতালেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এমনকি বাইরে থেকে কোনো ডাক্তার নিতেও রাজি হননি।

জাফরুল্লাহ আইসিইউতে থাকা অবস্থায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। চারদিক থেকে সব রকমের চেষ্টা চলছে; কিন্তু তার অবস্থা ভালো হচ্ছে না। কিন্তু আমরা স্যারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করছি না। করোনার সময় তার অবস্থা এখানকার চেয়েও খারাপ ছিল। তবে তার ইচ্ছা জনস্বাস্থ্যের বাইরে কোনো চিকিৎসা না নেওয়া। চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরেও যাবেন না, এটাই তার শেষ কথা।

২০২০ সালে, কোভিড মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক ছিল। এমনকি সে সময় বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেন।

৩ জুলাই, ২০২০ তারিখে প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি সাক্ষাত্কারে, ডাঃ জাফরুল্লাহকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
কিডনি ব্যর্থ হলে তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়। তিনি তা করেননি। সে প্রস্তাবে রাজি নন কেন জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমাকে বহিষ্কার করা হবে না। বিদেশ যাবো না।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও নেইডা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই
তার মতে, তার কিডনি সমস্যা প্রথম শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের দিকে। এরপর, বিদেশী বন্ধুরাও তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিল – এটি মনে করিয়ে দিলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘হ্যাঁ। আমাকে হার্ভার্ড বলেছিল যে তারা বিনামূল্যে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করবে। আমি বললাম, বাকিটা করবেন? আমি শুধু এটা করব. আমি বললাম, আমার দেশে চিকিৎসা করাতে চাই, চিকিৎসার উন্নতি চাই। সবার সুযোগ পাওয়া উচিত।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা একটি কিডনি প্রতিস্থাপন কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছি। করোনা না থাকলে প্রায় এই দিনেই শুরু হয়ে যেত।

উল্লেখ্য,গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত বুধবার তাকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Related Articles

Back to top button