দৈনিক খবর

৪২ বছরে আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন পাক ক্রিকেটার!

মহেন্দ্র সিং ধোনি ক্রিকেট কেরিয়ারে ক’টা সেঞ্চুরি করেছেন? যে কোনও ক্রিকেট ভক্তকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর মিলবে সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু মাহির শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? এই প্রশ্নের উত্তর চট করে মিলবে না। হয়তো খানিক ভেবে বলতে হবে, ধোনি বি-কম পাস।

যেমন অনেকে বলতে পারবেন, বিরাট কোহলি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক’টা সেঞ্চুরি করেছেন। কিন্তু পড়াশোনা কত দূর? টুয়েলভ পাশ করার পর আর এগোননি। আচ্ছা, বিরাট কোহলির সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বাবর আজম কত দূর পড়েছেন? ক্লাস এইটের বেশি এগোয়নি পাক অধিনায়কের পড়াশোনা। হয়তো পাকিস্তান ক্রিকেটে এটাই রেওয়াজ। খেলাতেই ফোকাস বেশি।

তাই স্কুল, কলেজের প্রতি ঝোঁক কম। ব্যতিক্রম কি নেই? বিশ্বকাপজয়ী ক্যাপ্টেন ইমরান খান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করেছেন। রামিজ রাজা, সৈয়দ আনোয়ার, মিসবাহ উল হকরাও যথেষ্ট শিক্ষিত। পাক ক্রিকেটের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে যখন প্রশ্ন ওঠে বারবার, তখন কেউ কেউ ব্যতিক্রমও হন। এতটাই যে, উদাহরণ হয়ে উঠছেন এই সাবেক পাক ক্রিকেটার।

কে এবং কেন দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন? পাকিস্তান ক্রিকেটে কাকে ‘প্রফেসর’ বলা ডাকা হয়, জানেন? ৫৫টা টেস্টে ১০টা সেঞ্চুরি করা পাকিস্তানি ক্রিকেটার তিনি। ২১৮টা ওয়ান ডে খেলে যিনি করেছেন ৬ হাজারেরও বেশি রান। এই কিছুদিন আগেও যাকে ছাড়া কল্পনাও করা যেত না পাকিস্তানের ক্রিকেট। ইনি সেই মোহাম্মদ হাফিজ।

২০২১ সালের নভেম্বর মাসে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। এখন অন্য মাঠে উদাহরণ হয়ে উঠেছেন হাফিজ। কী সেই দৃষ্টান্ত? ক্রিকেট ছাড়ার পর অধিকাংশ প্লেয়ারই ধারাভাষ্য কিংবা কোচিংয়ে চলে আসেন। বাকি জীবনে যাতে আর্থিক স্বচ্ছন্দ বজায় থাকে। কেউ কেউ পা দেন ক্রিকেট রাজনীতিতে। হাফিজ এই পথে হাঁটেননি। তিনি বরং বেছে নিয়েছেন অচেনা পথ।

৪২ বছরের ফের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন পাক ক্রিকেটার। করাচি ইউনিভার্সিটিতে আবার ভর্তি হয়েছেন হাফিজ। হেলথ ফিজিক্যাল এডুকেশন এবং স্পোর্টস সায়ান্স নিয়ে পড়বেন। ২০০৩ সালে পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল তার। তারপর থেকে আর পড়াশোনা করতে পারেননি।

তবে, লেখাপড়ায় যথেষ্ট ভালো ছিলেন। ক্রিকেটের পাশাপাশি তাই চালিয়ে গিয়েছিলেন পড়াশোনা। কিন্তু জাতীয় টিমে পাকাপাকি পা রাখার বাসনায় তাতে ছেদ পড়েছিল। ৪২ বছরের সেই হাফিজ আবার ফিরতে চলেছে ক্লাসরুমে। তার থেকে বয়সে অনেক ছোট সহপাঠীদের সঙ্গে করবেন পড়াশোনা।

করাচি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ডঃ খালিদ মাহমুদ বলেছেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় ইউনিভার্সিটিতে আবার পড়াশোনা করার সুযোগ পাচ্ছে বলে হাফিজ অত্যন্ত খুশি। ইউনিভার্সিটির প্রফেসররা ওকে সব রকম ভাবে সাহায্য করবে। যাতে পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।’

পাকিস্তান ক্রিকেটকে এক সময় যিনি এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, সেই তিনিই আবার তরুণ প্রজন্মের কাছে উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। হাফিজের মতো অদম্য ইচ্ছেশক্তি যাঁদের, তাঁরা ঠিক ফিরে আসেন। সে ক্রিকেট মাঠ হোক আর ক্লাসরুম!

Related Articles

Back to top button