Countrywideদৈনিক খবর

শুধু মা নয় মেয়ের সাথেও অসামাজিক কাজ, অবশেষে গনপ্রহরের পর পুলিশে সোপর্দ করে এসআই জাহাঙ্গীরকে

ন্যায় বিচারের জন্য মানুষ পুলিশের কাছে যায়। তবে পুলিশে যদি অন্যায় কাজ করে তার বিচার কি হবে? এমনই প্রশ্ন এলাকাবাসীর। সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া একটি ঘটনায় এসআই জাহাঙ্গীর নামের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে এলাকাবাসী গণপ্রহার করে পুলিশে সোপর্দ করে। যে ঘটনার রীতিমতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে ।

এক নারী ইউপি সদস্য ও তার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে শ্লী/”লতাহানির অভিযোগে এক যুবককে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।

শুক্রবার (১০ মার্চ) রাতে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার রাধনগড় ইউনিয়নের রাধানগড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে রুহিয়া থানায় কর্মরত এসআই জাহাঙ্গীর আলমের নারী কে/”লেঙ্কা”রির ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা। জাহাঙ্গীর আলম ঠাকুরগাঁও রুহিয়া থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত। আর ভিকটিম একই উপজেলার রাধানগড় গ্রামের বাসিন্দা।

নিহতের স্বামী বলেন, আমার স্ত্রী ইউপি সদস্য তাই রুহিয়া থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে দেখা করি।জাহাঙ্গীর প্রায়ই আমাদের বাড়িতে মাদক নিয়ে আসত।

এর মধ্যে সে আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন আপত্তিকর কাজ করতে বলতো এবং তার সাথে আপত্তিকর কাজে লিপ্ত হতো। সেই সাথে জাহাঙ্গীর আমার দশম শ্রেণির মেয়েকে বেশ কয়েকবার খারাপ কাজের প্রস্তাবও দেয়।

আমার স্ত্রী ও মেয়ে তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জাহাঙ্গীর আরও বেপরোয়া আচরণ করতে থাকে। আমি প্যারালাইসিসের রোগী। এসআই জাহাঙ্গীর প্রচুর মাদক সেবন করেন। সে আমাকে মাদক সেবনে বাধ্য করত।

এরই মধ্যে সে মাদক সেবন করে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে আমার বাড়িতে এসে আবারও আমার স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়। এ সময় আমি ও পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে ঘরে আটকে রেখে গণধোলাই করি। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ এসে তাকে আটোয়ারী থানায় নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীর একজন খারাপ মানুষ। এর আগেও সে অনেক নারীর জীবন নষ্ট করেছে। পুলিশে কাজ করায় কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পায়। তার মতো নারীপ্রেমী লম্পট পুলিশ আর দেখিনি।

আল্লাহ তার বিচার করবেন। ওই পুলিশকর্মী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর নিজেই একজন পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে কে? কে তার বিচার করবে?

স্থানীয় সাংবাদিক আলমগীর, আকাশ ও আনোয়ার জানান, আটোয়ারী উপজেলার রাধানগড় এলাকায় পুলিশের এক এসআই এক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার খবর পেয়ে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে যাই।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি রুহিয়া থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে স্থানীয় লোকজন আটক করেছে। পরে আটোয়ারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জাহাঙ্গীর আলমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর রুহিয়া থানার ওসি সোহেল রানা এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে তার থানায় নিয়ে আসেন। এই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আদালতে মাদক ও নারী কেলেঙ্কারির মামলা চলমান রয়েছে।

তবে অভিযুক্ত এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে ফোনে একাধিকবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

এ বিষয়ে রাধানগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু জাহেদ বলেন, পুলিশের একজন এসআইয়ের সঙ্গে সামান্য ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। পরে পুলিশ আসলে সমস্যার সমাধান করে।

রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা জানান, ওই নারী এসআই জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই টাকা আনতে জাহাঙ্গীর তার বাড়িতে যায়। তার পর কি হয়েছে জানি না।

আটোয়ারী থানায় যোগাযোগ করলে তারা ভালো বলতে পারবে। তবে আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সোহেল রানার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উল্লেখ্য, এর আগে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও মাদক সেবনের নামে ভুয়া কাবিন সই করে এক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক করে আসছিল এই পুলিশ সদস্য।

পরে ওই নারী সংবাদ সম্মেলন করে ঠাকুরগাঁও আদালতে এসআই জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমকে পীরগঞ্জ থেকে রুহিয়া থানায় বদলি করা হলে গতরাতে নারী ও মাদকের অভিযোগে আবারো গ্যাং ওয়াশিং-এর শিকার হন জাহাঙ্গীর নামের এক পুলিশ সদস্য।

শুধু এসআই জাহাঙ্গীর নয় এর আগেও অনেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এ সকল পুলিশ কর্মকর্তারা অসামাজিক কাজ করে তাকে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। এদেরকে সবার সামনে দৃষ্টান্ত শাস্তি দেওয়া হলে অন্যরা শুধরে যাবে বলে মতবাদ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

Related Articles

Back to top button