দৈনিক খবর

ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়া দুইশিশুকে ৪০ ঘণ্টা পর উদ্ধার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায় ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়া শিশু বলছে, ‘আমাকে এখান থেকে বের করে নাও, আমি তোমার জন্য যেকোনো কিছু করবো’। বয়সে বড় বাচ্চাটা অনেকটা ফিসফিস করে বলছে, ‘আমি তোমার চাকর হয়ে থাকবো’। মেয়েটার এমন কথার জবাবে একজন উদ্ধারকর্মী বললেন, ‘না…না’।

জানা যায়, সিরিয়ার হারেম শহরের কাছে ছোট এক গ্রাম বেসনায়া-বেসিনেহ। ওই গ্রামের দুই বোন তুরস্ক-সিরিয়ায় ঘটে যাওয়া ভয়ংকর ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়েছে। দুজনই বয়সে শিশু। বড় বোনটি ছোট বোনটিকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। উদ্ধারকর্মীদের উদ্দেশে এই নরক থেকে উদ্ধারের আর্ত আবেদন জানাচ্ছে মেয়েটি।

এদিকে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বড় বোনটির নাম মরিয়ম। ভিডিওতে দেখা যায়, সে তার ছোট বোনটিকে আগলে রেখেছে। আলতো করে ছোটটির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তারা পরস্পরের সঙ্গে চাপাচাপি করে কোনরকমে শুয়ে আছে। হতে পারে তারা বিছানাতেই ছিল। আর সেখানেই চাপা পড়েছে। ছোট বাচ্চাটির নাম ইলাফ। তাদের বাবা জানায়, ইলাফ ইসলামিক নাম, যার অর্থ ‘সুরক্ষা’।

এই ঘটনার বয়ান দেন মুস্তাফা জুহির আল-সাঈদ। তিনি জানান, তার স্ত্রী এবং তিন সন্তান গত সোমবার ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার কয়েক ঘণ্টা আগেই শুয়ে পড়েছিলেন। বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারলাম মাটি কাঁপছে…আর পলেস্তারা আমাদের মাথায় পড়তে শুরু করেছে। আমরা দু’দিন ধরে এই ধ্বংসস্তুপের নিচেই আটকে ছিলাম। আমরা এমন এক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম, আশা করি এই অনুভূতি কারও জীবনে না আসুক’।

আল-সাঈদ জানান, এভাবে চাপাপড়া অবস্থায় তিনি এবং তার পরিবার উচ্চস্বরে কোরআনের আয়াত পাঠ করছিলেন যেন কেউ না কেউ তাদের আওয়াজ শুনতে পান। মানুষ আমাদের আওয়াজ শুনতে পারেন এবং আমাদের উদ্ধার করা হয়, আমার স্ত্রী এবং সন্তানদের। খোদার প্রতি কৃতজ্ঞতা আমরা বেঁচে আছি এবং যারা আমাদের উদ্ধার করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’ মরিয়ম এবং ইলাফকে ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে কম্বলে মুড়িয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলে।

Related Articles

Back to top button