দৈনিক খবর

কোথায় রয়েছেন দন্ডপ্রাপ্ত ওসি প্রদীপ, জানে না চট্টগ্রাম নগর পুলিশ

২০২০ সালের ৩১ জুলাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হ”/ত্যাকান্ডের ঘটনা দেশ জুড়ে আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। এই ঘটনায় যার নাম সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন, তিনি হলেন ওসি প্রদীপ কুমার দাসের নাম। তিনি ছিলেন এই ঘটনার মামলার প্রধান আসামি। এদিক তিনি দন্ডিত হওয়ার পর কারাগারে থাকার কথা বলা হলেও তার খোঁজ মিলছে না বলে দাবি করা হচ্ছে।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হ”/ত্যা মামলায় মৃ”ত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কক্সবাজারের টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস আড়াই বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। তবে তিনি কোথায় আছেন তা জানে না চট্টগ্রাম নগর পুলিশ।

প্রায় ২৪ বছর আগে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকায় ডা”/কাতদের গু”/লিতে এক ব্যক্তি প্রয়াত হন। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন চান্দগাঁও থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ। মামলায় সাক্ষ্য দিতে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম নগর পুলিশকে চারবার রিট করেছেন আদালত। প্রতিবারই চিঠির জবাবে নগর পুলিশ বলেছে, ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত নথি ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। তাই সে সময় নগর পুলিশে কর্মরত প্রদীপ এখন কোথায় তা জানা যায়নি। গত ১ ফেব্রুয়ারি নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (সদর) গোলাম ছারোয়ার স্বাক্ষরিত চিঠিতেও একই তথ্য জানানো হয়।

জননিরাপত্তা অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচার চলছে। ২ ফেব্রুয়ারি মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। ওই দিন প্রদীপ ট্রাইব্যুনালে হাজির না হওয়ায় বিচারক মামলার পরবর্তী তারিখ ৭ মার্চ ধার্য করেন।

একাধিক আইনজীবী দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মামলার নথিতে চান্দগাঁও থানার এসআই হিসেবে প্রদীপের ঠিকানা লেখা আছে। এ জন্য তাকে সাক্ষ্য দিতে নগর পুলিশকে বারবার চিঠি দিচ্ছে আদালত। নগর পুলিশ যদি প্রদীপের সর্বশেষ কর্মস্থল বা অবস্থান জানাত, তাহলে আদালত সেখানে চিঠি দিতেন। নগর পুলিশ তার খোঁজ দিতে না পারায় মামলার বিচার বিলম্বিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে গোলাম ছারোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে জানা যায়, তিনি সম্প্রতি অবসরে গেছেন। পরে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, গোলাম ছারোয়ার এক সপ্তাহ আগে অবসরে গেছেন। প্রদীপের সবশেষ কর্মস্থল কেন এত দিন আদালতকে জানানো হয়নি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরবর্তী নির্ধারিত তারিখে তাকে আদালতে হাজির করার চেষ্টা করা হবে।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মো. জাহাঙ্গীর আলম গনমাধ্যমকে বলেন, ২৪ বছরেরও বেশি সময় আগের এই মামলায় আসা”মিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণে প্রদীপের সাক্ষ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত তারিখে সাক্ষী প্রদীপকে আদালতে হাজির করতে নগর পুলিশকে বারবার চিঠি দিয়েছেন আদালত। চিঠির জবাবে বলা হয়, প্রদীপকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা জানে না সে কোথায় আছে। এ কারণে মামলাটি বিলম্বিত হচ্ছে।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, সিনহা হ”/ত্যা মামলায় আদালত প্রদীপকে ২০২০ সালের ৬ আগস্ট কারাগারে পাঠায়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। প্রদীপের আইনজীবী সমীর দাশগুপ্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রদীপ এখন কাশিমপুর কারাগারে।

টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্ট এলাকায় (২০২০ সালের ৩১ জুলাই) অনেকটা নাটকীয় ঘটনার পর পুলিশের গু”/লিতে সাবেক মেজর সিনহা প্রয়াত হন। এই ঘটনার পর, ঐ থানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই প্রদীপের নির্দেশে সিনহাকে নিথর করা হয় এমন দাবি ওঠে। মামলায় হয় ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে এরপর তিনি গ্রেফতার হন। এই সময় তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে।

Related Articles

Back to top button