দৈনিক খবর

চা বিক্রির টাকায় বাবাকে উপহার দিয়ে আফসোস হচ্ছে সেই রনির

রেলওয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আন্দোলন করে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন রনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আন্দোলন করে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

এছাড়া ঢাবি মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেও ক্যাম্পাসে পরিচিতি পান তিনি।

তবে এবার আর কোনো প্রতিবাদ নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘুরে ঘুরে চা বিক্রির টাকায় তার বাবাকে উপহার দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বাবাকে উপহার দেয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তিনি।

ওই ভিডিও’র ক্যাপশনে রনি লিখেছেন, ‘সঙ্গদোষ বা স্রোতের কলুষতায় ভেসে জীবনে অনেক উপার্জন করেছি, বাবা-মায়ের জন্য দামী উপহারও কিনে বাড়ি নিয়ে গিয়েছি। অবজ্ঞাভরে সেগুলো তারা ছুড়ে ফেলে দিতেন ময়লার স্তূপে।

কি যোগ্যতার অভাব জানতে চাইলে তারা বলতেন,‘হালাল রুজি’ বা সৎ উপার্জন। তবে ইহ জীবনে এই প্রথম আমার দেওয়া উপহার আমার বাবা গ্রহণ করলেন। অবাক হলাম চা বিক্রি করা টাকায় উপহার কিনেছি শুনে বাবার চোখে বিন্দুমাত্র বিস্ময়ের ছাপ দেখতে না পেয়ে।

তিনি আরও লিখেন, আজ (মঙ্গলবার) আমার বাবা দিবস। বাবার দীর্ঘদিনের অভিমানের অবসান ঘটানোর সক্ষমতা অর্জনকে দেশের সর্বোচ্চস্তরের স্কিল ডেভেলপমেন্ট মনে হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী লিখেছেন, আফসোস হচ্ছে, এই ব্যক্তিকে এত অল্পতে খুশি করা যায় তবে আগে কেন চেষ্টা করলাম না। মনে হচ্ছে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার স্বাদ অনুভব করছি।

মহান স্রষ্টা আমাদের প্রত্যেককে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর দক্ষতা ও সক্ষমতা দান করুক। আমিন।

উল্লেখ্য, মহিউদ্দিন রনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্ট্যাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত বছরের জুলাই মাসে টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার পর ঈদুল আজহার আগে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অনশন শুরু করেন তিনি। ১৯ দিন অবস্থান করার পর রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছয় দফা দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করে ঘরে ফিরে যান রনি।

এর আগে গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করে আলোচনায় আসেন এই শিক্ষার্থী।

Related Articles

Back to top button