চালকের বুদ্ধিমত্তায় রক্ষা পেল ডুবতে বসা টেকনাফগামী দুই জাহাজ
দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন-টেকনাফ নৌপথের দুটি যাত্রীবাহী ট্রলারের তিন শতাধিক যাত্রী চালকের বুদ্ধিমত্তায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে অ;ল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে। এতে পর্যটকদের মাঝে আ;ত;ঙ্ক সৃষ্টি হয়। আ;তঙ্কি;ত হয়ে তাদের অনেকে কান্নাকাটি করেন। নারী, শিশুসহ অসুস্থ হয়ে পড়েন কয়েকজন।
প্রায় উল্টে ও ডুবতে বসা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও ভাইরাল হাওয়ার পর থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। কিন্তু জাহাজ মালিকরা বলছেন ভিন্ন কথা।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাগরের মাঝে বাতাসের তীব্র গতি ও ঢেউয়ে দোল খাচ্ছিল জাহাজ দুইটি। উত্তার ঢেউয়ের মাঝে জাহাজ দুটি একবার পানির ভিতর যায় আবার বেরিয়ে আসছে। এ অবস্থায় জাহাজে থাকা পর্যটকরা ভয়ে আ;তঙ্কি;ত হয়ে আমাদের ‘বাঁচান, বাঁচান’ বলে আহাজারি করছে।
ভালোবাসা দিবস (১৪ ফ্রেবুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে ফেরার পথে এমভি পারিজাত ও সুকান্ত নামক দুটি জাহাজ উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ে দোল খেতে খেতে ডুবতে যাচ্ছিল। তবে দক্ষ চালকের কারণে রক্ষা পায় জাহাজ দুটি।
জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে এমভি পারিজাত জাহাজটি টেকনাফের উদ্দেশে রওনা হয়। জেটিঘাট থেকে ছেড়ে আসার ১৫ মিনিটের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে দমকা হাওয়ায় ঢেউয়ের কবলে পড়লে পর্যটকেরা আ;তঙ্কি;ত হয়ে পড়েন। এ সময় অনেকেই কা;ন্নাকা;টি করতে থাকেন। আবার অনেকে ভয়ে লাইফ জ্যাকেট নিয়ে ছু;টাছু;টি করতে থাকেন। এসময় জাহাজে ভ;য়ান;ক পরিবেশ তৈরি হয়।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় টেকনাফের দমদমিয়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে এমভি পারিজাত জাহাজে প্রায় দুইশ পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপ বেড়াতে গিয়েছিলেন।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জাহাজটি সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তখন জাহাজে সোমবার বেড়াতে যাওয়া অর্ধশতাধিক পর্যটকও যুক্ত হন।
পারিজাত জাহাজে থাকা মোশারফ নামে এক পর্যটক বলেন, নতুন করে জীবন ফিরে পেলাম। মনে করেছিলাম ডুবেই যাবো। কিন্তু চালকের দক্ষতার কারণে আমরা রক্ষা পাই।
তিনি আরোও বলেন, এই সময় জাহাজে থাকা শিশু, নারী ও পুরুষেরা পযটকেরা অনেকে কান্নাকাটি ও বমি করেন। অনেকেই বমি করার পাশাপাশি লাইফ জ্যাকেট পড়ার জন্য ছোটাছুটি করেন।
এমভি পারিজাতে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জাহাজটিতে প্রায় আড়াই শ পর্যটক ছিলেন। সেন্টমার্টিন জেটি থেকে ছেড়ে আসার ১৫ মিনিটের মধ্যেই সাগরের ঢেউয়ের কবলে পড়ে জাহাজটি। জাহাজটি তখন এমনভাবে দুলতে থাকে, সবাই ভয় পেয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। এই জাহাজে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছিলেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে জাহাজটি টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছায়।
এ ব্যাপারে জানতে জাহাজের টেকনাফের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সোহেলের ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ট্যুরিস্ট পুলিশের টেকনাফের উপপরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দমকা হওয়ার কবলে পড়লে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে জাহাজটি দুলতে থাকে। এতে করে পর্যটকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে সাবাই নিরাপদেই ফিরেছে।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন জাহাজ মালিক ও জাহাজ মালিকদের সংগঠন স্কোয়াবের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, পূর্ণিমার কারণে জাহাজ সামান্য দুলছিল। এটি স্বাভাবিক ঘটনা। সাগরে যখন পানি ও বাতাসের গতি বৃদ্ধি পায় তখন জাহাজে একটু রোলিং হয়, জাহাজ একটু দুলতে থাকে। এটি আতঙ্কের কিছু নয়।