দৈনিক খবর

তখন মাথায় বুদ্ধি ছিল না, বিয়ের আগে যে গুনাহ করেছি, তার জন্য মাফ চাই: প্রভা

দীর্ঘদিন প্রেমের পর ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট পালিয়ে ছোট পর্দার অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা বিয়ের জিয়াউল ফারুক অপূর্বকে বিয়ে করেছিলেন সাদিয়া জাহান প্রভার। তবে এর আগেই একই বছরের ১৬ এপ্রিল রাজিব হাসানের সঙ্গে বাগদান সেরেছিলেন তিনি।

যাই হোক, বিয়ের বেশকিছু দিন পর রাজীবের সঙ্গে প্রভার একান্ত মুহূর্তের কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ব্যাপক ভাইরাল হতে দেখা যায়। রাজীবের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে অপূর্বর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় প্রভার।

প্রভা লিখেছেন- ‘প্রতারণা করিনি! আমি চুপ থাকার মানে এই নয় যে আপনি আমার সম্পর্কে যা খুশি বলতে পারেন। আমি শুধু ভেবেছিলাম তোমাকে প্রমাণ করে লাভ কি; উপরে যিনি আছেন, কার কাছে যাব, কে বিচারক, তিনিই জানেন।

‘বিয়ের আগেই সম্পর্ক করে যে গুনাহ আমি করেছি সেই গুনাহর জন্য জনতার কাছে আমি প্রতিনিয়ত মাফ চাচ্ছি মাফ চাইব। কিন্তু যতদিন বেঁচে থাকব তোমার কাছ থেকে অনেক সোয়াব ইনকাম করব! কারণ আপনি না জেনে আমাকে গালি দেন। না বুঝেই সে আমাকে একতরফা প্রতারণা করেছে।

তিনি লেখেন- ‘শোনেন…. প্রথমে রাজীবকে সব খুলে বললাম আর বিয়ের কথা শুরু হয়।। কারণ আমাদের আট বছরের সম্পর্কের অলমোস্ট প্রায় ৫-৬ বছরই ব্রেকআপ থাকতো।। রাজীব আমাকে কখনোই সম্পর্ক থেকে বের হতে দেয়নি। এটা ছিল তার মানসিক সমস্যা। ভাঙা সংসারের ছেলে! কারণ তার বাবা তার মাকে ছেড়ে খুব অল্প বয়সে অন্য নারীকে বিয়ে করেছিলেন। তাই হয়তো তার মনে সেই জেদ ছিল যে তাকে কেউ ছেড়ে যেতে পারবে না! এবং তাই এটি আমাকে ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলি ক্যাপচার করার বিভিন্ন উপায়ে বিশ্বাস করে। যাই হোক, আপনি যদি বিভিন্ন সাইবার ক্রাইমের গল্প পড়ে থাকেন, ছেলেরা কীভাবে মেয়েদের বোঝায়, তাহলে আরও পরিষ্কারভাবে জানতে পারবেন।

“আমি অনেকবার রাজীবকে ছেড়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমাদের ব্রেক আপ হয়ে গেছে, ব্রেকআপের পর আমি অন্য কোথাও বিয়ে ঠিক হয়েছে, সেই বিয়ে আমি করিনি। রাজীব পড়াশোনা করেনি। আমি তাকে ক্লাস নাইনে পড়ার সময় থেকেই চিনি। কিন্তু আমি অনার্স থার্ড থাকাকালীন সেমিস্টার, সে অনার্স ফার্স্ট সেমিস্টার।কেন জানো, কারণ সে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল!কিন্তু বারবার রেজাল্ট খারাপ হওয়ায় ইউনিভার্সিটি তাকে বের করে দেয় এবং টাকা নিয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।

তিনি আরেকটি বিষয়ে রাজি হবেন, কিন্তু তিনি কোনো আয় রোজগার করেননি। রাজীবের বাবার টাকা ছিল। কিন্তু রাজীবের সাথে আমার আরেকটা সমস্যা ছিল তা হল রাজীব কিছু আয় করতে চায় না! বললেন, আমার বাবার এত কিছু আছে, আমি কেন রোজগার করব। এই জিনিস নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া হতো। সবচেয়ে বেশি ছিল শিক্ষা নিয়ে। এই সব বিষয়ে আমাদের অনেক ব্রেকআপ হয়েছে!’

তিনি লিখেছেন- ‘যাইহোক, ওই ছেলেটিকে আমার বিয়ে করার কথা ছিল, আংটি বদল হয়েছিল কিন্তু আংটি বিনিময়ের আগে আট মাস আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। আমি যেমন বলেছি, আমাদের আট বছরের সম্পর্কের মধ্যে অনেক ব্রেকআপ হয়েছিল। তাই যখন বিয়ে শুরু হল, আমি রাজীবকে বলেছিলাম যে আমি গত এত মাস ধরে যার সাথে সম্পর্ক করছি, আমি সেই ছেলে, তার প্রতি আমার ক্রাশ আছে; কিন্তু বুঝলাম, এটা হবে না, হবে না- এমন কথায় তার সঙ্গে সাফাই দিলাম। আমার বয়স তখন ২২ এবং আমার কোন বুদ্ধি ছিল না। যদি থাকত তাহলে প্রথমত রাজীবের প্রেমে পড়তাম না।

প্রভা লিখেছেন- ‘যদিও এখনো বুদ্ধি পাইনি। তবে আমার কাছে মনে হয়, বিয়ের আগে ওকে সব জেনে রাখি, মাঝখানে কারো সাথে সম্পর্ক না থাকলেও! (আমি যাকে বিয়ে করেছি তার কথা বলছি পরে পালিয়ে বিয়ে করেছি) এর বিপরীত প্রভাব পড়ে।

“আমাদের বাগদানের পর থেকে আমি প্রায় প্রতিদিনই রাজীবের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিতাম। বিভিন্ন কারণে ঝগড়া হতো। সে অনেক মিথ্যা বলতো। সব কিছুই মিলায় ছিল যখন আমি তাকে বিয়ে করতে প্রস্তুত ছিলাম না, আমি তাকে বিয়ে না করার জন্য বারবার অনুরোধ করেছিলাম।” তার।আমাদের বিয়ে ছমাসও চলবে না!আমি আমার বাড়িতেও এই কথা বলেছিলাম।কিন্তু আমার বয়স অনেক বেশি। ২২/২৩ বছরের একটা মেয়ে বিয়ে তো করতেই হবে বলেন! যাইহোক এ সমস্ত কথা আর নাই বলি!’

তিনি লিখেছেন, ‘পলায়ন করে বিয়ে করার ঘটনা সম্পর্কে আপনি তেমন কিছু জানেন না। এই ঘটনার পর বেশ কয়েকদিন ধরে রাজীব আর আমার মধ্যে বড় ঝগড়া, তুমুল ঝগড়া হতো। রাজীব বুঝল আমার মন নেই। কেন বুঝতে পেরে, আমি তাকে ভেঙে দিয়েছিলাম এবং নিজেকে বলেছিলাম যে শুধুমাত্র আংটি পরা ছিল, কিন্তু অন্য কিছু ঘটেনি। এটা এখানে শেষ করা যাক. কিন্তু সে কোনো বদমাশ নয়, তার ওপরে তার মানসিক সমস্যা ছিল। মাথায় ছিল তার বাবা তার মাকে ছেড়ে চলে গেছিলো, তাকে ছেড়ে কেউ যেতে পারবে না, তার কাছে তো প্রমাণ আছে!

প্রমনের কথা মনে পড়ল, একবার ওকে জিজ্ঞেস করতে চাইলাম, ওরা কোথায়, চল একসাথে দেখি। তখন সে আমাকে বলছিল, তুমি কি পাগল; আমি সব মুছে দিয়েছি যাতে তুমি আমার বউ হবে। আসলে, এটি মুছে ফেলা হয়নি. এখন বুঝতে চাইছেন, মানসিকভাবে কতটা অপরাধী মানসিকতার মানুষ!? আসলে তাকে পুরোপুরি দোষ দেওয়া যায় না! এমন পরিবেশে, যেখানে বাবা ছিল না, একজন মানুষ কষ্টের মধ্যে বসবাস করে, মানুষের সাথে মেলামেশা করতে পারে না, ধীরে ধীরে অপরাধী হয়ে উঠবে।

প্রভা লিখেছেন, ‘এরপর তিনি এ বিষয়ে আমার বাসায় বসেছিলেন। আমার বাবা-মা আমাকে সত্যি বলতে বকাঝকা করে। আমি আমার বাবা-মাকে কষ্ট দিয়েছি, আমি আমার বাবা-মাকে না বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্যের হাত ধরেছিলাম… কিন্তু যে ব্যক্তি আমাকে তার হাত ধরতে বলছে সেও তখন ভুল ছিল। লোকটি আমাকে পছন্দ করলেও আমি তাকে সত্যিই পছন্দ করতাম। বাড়িতে বিয়ের এত চাপ ছিল যে, আমি অসহায় হয়ে বললাম, তোমার আমাকে বিয়ে করা ঠিক আছে, কিন্তু আমি সব খুলে বললাম এবং বিয়ের জন্য গেলাম। কার প্রেমে পড়েছিলাম, আমাদের ব্রেকআপের পর সম্পর্ক থাকতে পারে! তাহলে কেন তুমি মনের মধ্যে বিষ রাখলে যে তুমি তাকে পছন্দ করো না, এই বিষয়ে তোমার সম্মতি দিতে হবে না, তোমার অন্য জায়গায় সম্পর্ক ছিল, আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারব না, তুমি মনে মনে জেদি, সে আমার হবে! কারণ আমার বাবা আমার মাকে ছেড়ে অন্য নারীকে বিয়ে করেছেন। যাই হোক!

সেদিন বাড়িতে এমন অবস্থা হয়েছিল, আমার মনে হয়েছিল এখান থেকে যাবার এটাই একমাত্র উপায় এবং তাছাড়া আমাকে ডেকে বলা হয়েছিল বাসা থেকে চলে যেতে, বাবা-মায়ের সাথে কথা বলতে। তুমি বের হলে বিয়ে করব। ওহ, আমার প্রাক্তন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমাকে অনেক ভালবাসত যখন আমার প্রাক্তন স্বামী আমার সাথে ছিলেন। বিশেষ করে আমার শ্বশুর, তাই আমি বরং আশাবাদী ছিলাম। ভেবেছিলাম বিয়ের পর বাবা মা মেনে নেবে! তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে! যাই হোক, বাইরে গিয়ে বিয়ে করলাম। সকালে রাজীবকে ফোন করে জানালাম আমার বিয়ে হয়েছে। তার খুশি হওয়া উচিত। দুদিনের মধ্যেই তিনি মুছে ফেলা (আসলে মিথ্যা) নথিগুলোকে প্রকাশ্যে আনেন।

প্রভা লিখেছেন, ‘এবং যেহেতু আমি ধর্মীয়ভাবে অন্যায় করেছি, সামাজিকভাবে আমি কোনো অন্যায় করিনি, তাই ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী এই ঘটনার পর আমার প্রাক্তন স্বামীর আমাকে আরও সমর্থন করা উচিত ছিল। আমি মারা যেতে পারতাম. আ’ত্ম”হ”’ত্যা” ”করলে আল্লা’হর কাছে যেতে পারব না এই ভ’য়ে আ’মি’ আ”’ত্মহ”ত্যা’ করিনি। তাই জীবন সুন্দর হয়েছে।’

এদিকে এতো আলোচনা মধ্যেও গত এক দশকেরও অধিক সময় ধরে পর্দায় নিয়মিত অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছেন প্রভা। কে কি বলল, তাতে কান না দিয়ে নিজের মতো করেই চলতে চাইছেন তিনি।

Related Articles

Back to top button