দৈনিক খবর

৫০ বছর ধরে কোরআনের পুরনো কপি সংরক্ষণ করছেন যিনি

প্রায় ৫০ বছর যাবৎ পবিত্র কোরআনের পুরনো কপি সংগ্রহ করে বাঁধাই করেন জর্দানের মোহাম্মদ আল-আয়াসিরা। ভাবে নিজ উদ্যোগে দুই লাখের বেশি কপি বাঁধাই করে বিভিন্ন দেশে বিতরণ করেছেন তিনি।

১৯৭০ সালে জর্দানের জারাশ প্রদেশের সাকিব শহরে ‘সারখাতু আমিলি ওয়াতানিন’ নামে কোরআনের কপি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন আল-আয়াসিরা। তখন থেকেই ছোট্ট পরিসরে কাজ করতে থাকেন।

প্রতিদিন প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে কোরআনের সংগৃহীত কপির বাঁধাই ও মেরামতের কাজ করে যান তিনি। তাঁর উপনাম আবু জাকারিয়া। ১৯৬৬ সালে সপ্তম শ্রেণি পড়েছেন তিনি। এরপর নিয়মতান্ত্রিক পড়াশোনা বেশি দূর আগায়নি। পরবর্তী নিজ চেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত গেলেও শেষ হয়নি তা। এর পর থেকে কর্মজীবনে ঢুকে পড়েন।

কোরআনের পুরনো কপি সংরক্ষণের উদ্যোগের পেছনের গল্পটি ছিল একটু অন্যরকম। ৫০ বছর আগে আরবি লেখা কাগজের টুকরো নোংরা জায়গায় পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। কোরআনের ভাষার এমন দৃশ্য তাঁকে পীড়া দেয়। ১৯৭০ সালে তিনি পুরনো বই সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন; যেন কেউ তা ময়লার জায়গায় ফেলে না দেয়। এ কাজে প্রথম থেকেই তাঁর পাশে ছিলেন আবু জাকারিয়ার দুই স্ত্রী। তাঁর ১৬ সন্তানও সংরক্ষণ ও বাঁধাইয়ের কাজে তাঁকে সহযোগিতা করে।

মুহাম্মদ আল-আয়াসিরা বলেন, ‘যেসব বইয়ের বাঁধাই সম্ভব নয়, আমি তা শরিয়তসম্মত উপায়ে নষ্ট করে ফেলি। বিশেষত কোরআনের অনুলিপিগুলো যথাযথভাবে তা বিনষ্ট করি। আমার কাছে একটি আগুনের চুল্লি রয়েছে, যেখানে একসঙ্গে ছয় হাজার কপি পোড়ানো যায়। পুড়িয়ে ফেলার পর ছাইগুলো আমি এমন স্থানে পুঁতে ফেলি যেখানে কোনো মানুষ হাঁটে না।’

কোরআন ও বইয়ের পুরনো কপি সংরক্ষণেই থেমে যায়নি আল-আয়াসিরার উদ্যোগ। বাঁধাইয়ের পর তা বইপ্রেমী পাঠকদের কাছে বিনা মূল্যে বিতরণ করেন তিনি। আর কোরআনের পুরনো কপি বাঁধাইয়ের পর বিভিন্ন দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় তিনি আফ্রিকার দেশগুলোতে ২১ হাজারের বেশি কোরআনের কপি পাঠিয়েছেন।

Related Articles

Back to top button