দৈনিক খবর

জুয়ার আসরে সর্বস্বান্ত হয়ে শায়খ আহমাদুল্লাকে মেইলে যা বললেন যুবক

জুয়ার আসরে সর্বস্বান্ত হয়ে শায়খ আহমাদুল্লাকে ই-মেইল করেছে রাকিব নামের এক যুবক। মেইলে ওই যুবক আত্মহত্যার কথাও জানিয়েছে।

যুবকের পাঠানো ই-মেইল ফেসবুকে শেয়ার করে শায়খ আহমাদুল্লাহ লিখেছেন- জুয়ার আসর থেকে সর্বস্বান্ত হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই তরুণ। বড় বেদনার সঙ্গে লেখা এই মেইল পাঠিয়ে আমাদের মাধ্যমে জাতিকে সতর্ক করতে চেয়েছে তিনি। ছেলেটি এখন দুনিয়াতে আছে কি না জানি না। তবে তার এই বার্তার মধ্যে এ দেশের লক্ষ লক্ষ যুবকের জন্য শিক্ষা রয়েছে।

জুয়া এখন আর স্থানীয় ক্ষুদ্র কোনো আসরের নাম নয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক চক্রের তত্ত্বাবধানে সারাবিশ্বে পরিচালিত হচ্ছে বিধ্বংসী এই অপকর্মটি। গত ফুটবল বিশ্বকাপে প্রতিষ্ঠিত অনেক ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেল এ দেশের তরুণদের ভেতর জুয়ার বিষ পুশ করেছিল। জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন প্রচারের অপরাধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ইতোমধ্যে কয়েকজন ইউটিউবারকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

জুয়াকে আল্লাহ শয়তানের কাজ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আল্লাহ যাকে শয়তানের কাজ বলেন, তার মধ্যে মানবজাতির কোনো কল্যাণ থাকতে পারে না। যার অসংখ্য নমুনা আমাদের চোখের সামনে আছে। এখনই যদি এই অপকর্মের শেকড় উপড়ে ফেলা না হয়, তবে রাকিবের মতো অসংখ্য যুবক জুয়ার বিষে শেষ হয়ে যাবে। ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের সাজানো সংসার ও পরিবার।

রাকিব নামের যুবক যে ইমেইল পাঠিয়েছে তাতে লেখা রয়েছে-

আমার মতো যেনও কেও না হয়।

আসসালামুয়ালাইকুম হুজুর, জানি না কি ভাবে শুরু করবো তবুও বলছি, জানি না আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবে কি না, কারণ আমি জানি আমার জীবনে আর কয়েকটা ঘণ্টা বাকি আছে। কারণ আমি গত ২ দিন 1x bet এ বাজি খেলে ৮০ হাজার লস খেয়েছি, এই টাকাটা আমার বাড়ির ২ মাসের কিস্তির টাকা। আর আমি বাড়িতে বলতেও পারবো না, মা ওই টাকা আমি নিয়ে শেষ করে ফেলেছি। তাই নিয়ত করেছি আজকে রাতে জীবনের সব চেয়ে বড় ভুলটা করবো। আমার কিছু করার নাই, সবাই ভালো থাকবেন আর ভুলেও জুয়ার কথা মনে আনবেন না।

হুজুর আমি বোঝাতে পারবো না ২ দিন হলো কোন অবস্থায় আছি। ২-৩ দিনের মধ্যে মনে হয় কিস্তি দিতে হবে। আর আমার পক্ষে এই টাকা ম্যানেজ করাও সম্ভব না, আর এখন আমার জন্য একমাত্র পথ খোলা আছে আমার মারা যাওয়া, তাই সেটাই করার জন্য ভাবছি .. ভালো থাকবেন আমার জন্য দোয়া করবেন। জানি ক্ষমা পাওয়ার মতো কাজ করছি না তবুও ক্ষমা চাচ্ছি, এইটা আমার বর্তমান অবস্থার কথা বললাম। ১০টা ঘুমের ওষুধও খেয়েছি একটু আগে, জানি না কালকের সকালটা দেখতে পারবো কি না।

আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়ো,

এই মরণ ব্যাধি জুয়া যেনও আমার মতো কেউ খেলে না, কারণ যে খেলবে আমার মতোই ঝরে যেতে হবে। এখন বুঝতে পেরেছি .. কিন্তু কিছু করার নাই .. ভালো থাকবেন আর আপনাকে জানানোর উদ্দেশ্য হলো প্রতি রাতে আপনার ওয়াজ না শুনে ঘুমালে ঘুম ধরে না। আমি আপনার এত পাগল, ভালো থাকবেন আর আপনার মাধ্যমে যুবকদের একটু সতর্ক করবেন দয়া করে।

আল্লাহ হাফেজ ভালো থাকবেন, আর আমার জন্য দোয়া করবেন, আজ বুঝলাম মানুষ কেন আত্মহত্যা করে।

Related Articles

Back to top button