দৈনিক খবর

প্রেমের টানে বাংলাদেশে কলকাতার কলেজছাত্রী, ফিরে গেলেন শূন্য হাতেই

কবিতা সরকার (২৬)। কলকাতার রানার ঘাট এলাকার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু কলেজে পড়াশোনা করেন। গত ৩ ডিসেম্বর ভোমরা বন্দর দিয়ে বাংলাদেশি প্রেমিকের কাছে ছুটে আসেন। উদ্দেশ্য ছিল চট্টগ্রামের অলংকার মোড় এলাকার প্রেমিক সাইফুল খানের সঙ্গে দেখা করা। কিন্তু সেই প্রেমিক তাকে ধোঁকা দিয়েছে। হৃদয় ভঙ্গের বেদনা সামলে সেই তরুণী সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে তিনি কলকাতায় চলে গেছেন।

ওই তরুণী কলকাতা রানাঘাটের নন্দীঘাট বৃদ্ধাকূল এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা একজন রাজমিস্ত্রি। পরিবারে বাবা-মা এবং ছোট একটি বোন রয়েছে। জানা গেছে, প্রায় দুই মাস চট্টগ্রামে থাকার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি খুলনায় আসেন ওই তরুণী। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় খুলনার বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে তিনি ভিসার জন্য আবেদন করেন। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত তাকে ভিসা দেয়া হয়।

প্রেমের টানে কলকাতার কলেজছাত্রী বাংলাদেশে আসলেও তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। বাংলাদেশে এসে সে বড় ভুল করেছে। ফেসবুকে ৪ বছর প্রেম করার পর প্রতারণার শিকার হবেন সেটা আগে বুঝতে পারেননি তিনি। সেলসম্যানের চাকরির টাকা জমিয়ে তিনি কলেজে লেখাপড়ার পাশাপাশি পাসপোর্ট ও ভিসা করেছিলেন। প্রথমে একবার ভিসা করলেও বাংলাদেশে আসতে পারেননি।

কবিতা সরকার গণমাধ্যমকে জানান, চট্টগ্রামের অলংকার মোড়ের সাইফুল খানের সঙ্গে চার বছর ধরে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বাড়ি থেকে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। চট্টগ্রামে সাইফুলের কাছে প্রায় দুই মাস তাদের ভাড়া বাড়িতে ছিলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি খুলনা এসে শেফালী সরকারকে তার বিপদের সব কথা বলেন। পাশাপাশি তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ভারতে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা চান।

রায়েরমহলের বাসিন্দা শেফালী সরকার বলেন, গত ৩ ডিসেম্বর ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় ওই তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ভোমরা বন্দরের বিনেরপোতা থেকে আমরা একসঙ্গে সাতক্ষীরায় আসি। তিনি চট্টগ্রামের যাওয়ার জন্য আমার সাহায্য চান। আমি তাকে একটি বাসে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেই। দীর্ঘ দুই মাস পর গত ১ ফেব্রুয়ারি আমাকে ফোন করেন ওই ছাত্রী। ভারতে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা চান। আমি ওই দিনই রানীকে খুলনাস্থ ইন্ডিয়ান সহকারী হাইকমিশনারের কাছে নিয়ে যাই।

শেফালী সরকার আরও জানান, ওই ছাত্রী আমাকে ‘মা’ বলে ডেকেছে। তাই যতটুকু পেরেছি তার পাশে দাঁড়িয়েছি। বর্তমানে ওই তরুণীর সঙ্গে চট্টগ্রামের ছেলের কোনো সম্পর্ক নেই।

Related Articles

Back to top button