দৈনিক খবর

ইজতেমায় পুরোনো পত্রিকা-পলিথিন ১০ টাকা, অজুর পানি ২০

গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা ঘিরে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের শুরু হয়েছে জমজমাট ব্যবসা। ইজতেমা মাঠের বাইরে দেশের বৃহৎ জুমায় অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের কাছে অজুর পানি ২০ টাকা, পুরোনো পত্রিকা ও নামাজের জন্য পলিথিন ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) টঙ্গীর স্টেশন রোড কামারপাড়ার আশপাশ এলাকা ঘুরে এমনি চিত্র চোখে পড়ে।

জুমা নামাজের আগে মুসল্লিদের কাছে ঘুরে ঘুরে পুরনো পত্রিকা বিক্রি করছিলেন শাহ আলম। তিনি জানান, বছরের অন্যান্য সময় বাসে ফেরি করে খাদ্যসামগ্রী ও সন্ধ্যায় বাদাম বিভিন্ন বিক্রি করেন।

মুসল্লিদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে পুরনো পত্রিকা কেজি দরে কিনে প্রতি দুই পাতা ১০ টাকায় বিক্রি করছেন। অনেক মুসল্লি নামাজের জন্য কোন ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই চলে আসেন, জায়নামাজও আনেন না। তারাই মূলত তার ক্রেতা। তাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে তিনি পত্রিকা বিক্রি করছেন। এতে সামান্য আয় হলেও মুসল্লিদের সুবিধাই তার কাছে মূল বিষয়।

একইভাবে পলিথিন কেটে বিক্রি করছিলেন শামসুল ইসলাম। অন্যান্য সময় শামসুলও ফেরি করে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় মালামাল বিক্রি করেন। তিনি বলেন, অন্যান্য সময় বেচা-বিক্রি ভালো থাকলেও ইজতেমার সময় ফেরির ব্যবসা খুব একটা হয় না।

বসে থাকলে তো আর সংসার চলবে না। তাই বাজার থেকে পলিথিন এনে নামাজের জন্য উপযোগী পলিথিন ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করে সামান্য আয় করছি। পাশাপাশি মুসল্লিরাও উপকার পাচ্ছেন। কেউ দামাদামি করে পাঁচ টাকা দিলেও মুসল্লিদের ফিরিয়ে দিচ্ছি না।

ইজতেমায় মহাসড়ক ও বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থানরত মুসল্লিদের অজুর পানির জন্য খরচ করতে হচ্ছে ২০ টাকা। কোথাও কোথাও চাহিদা বেশি দেখলে এক বদনা পানি ২৫-৩০ টাকা করেও বিক্রি হচ্ছে।

আইনুল ইসলাম বলেন, মুসল্লিদের জন্য বদনা কিনতে হয়েছে। পানিও দূর থেকে টেনে আনতে হয়েছে। আমরা কয়েকজন মিলে ব্যবসার টাকা জোগাড় করেছি। আমরা ব্যবসার উদ্দেশ্যে নয় মুসল্লিদের নামাজের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখেছি।

নামাজের জন্য পুরোনো পত্রিকা কিনেছেন জুমার নামাজে অংশ নিতে আসা আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, ভালুকা থেকে মোটরসাইকেল দিয়ে শুক্রবার সকাল ৭টায় বাড়ি থেকে রওনা হয়েছি টঙ্গীর উদ্দেশ্যে। ধারণা করেছিলাম মাঠের ভেতর জায়গা পাব, তাই নামাজের জন্য জায়নামাজ সঙ্গে আনা হয়নি। কিন্তু অতিরিক্ত মুসল্লির চাপে ভেতর যাওয়া আর সম্ভব হয়নি। তাই ১০ টাকায় দুজন পত্রিকা কিনে মহাসড়কেরই নামাজ আদায় করতে বাধ্য হয়েছি।

সাইদুল ইসলাম নামের অপর এক মুসলি জানান, টাকার চাইতে প্রয়োজনটাই বেশি। যদিও ১০ টাকা নিচ্ছে, কিন্তু প্রয়োজনটা ১০ টাকার চাইতে বেশি।

Related Articles

Back to top button