দৈনিক খবর

ইতিহাসের সবথেকে জনপ্রিয় বিমান ‘কুইন অব দ্যা স্কাইস’ আর উড়বে না আকাশে,প্রকাশ্যে কারন

বিশ্বের ইতিহাসের সব থেকে সুন্দর বিমানটির নাম হলো ‘কুইন অফ দ্য স্কাইস’। এটি যখন আকাশে উড়ে তখন মানুষ হা হয়ে দেখে এর বিশালতা আর আর সৌন্দর্য। তবে দুঃখের সংবা এই যে বোয়িং ৭৪৭ মডেলের উড়োজাহাজটিকে আর উড়তে দেখা যাবে না আকাশে।এই মডেলটি আজ থেকে ৫০ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল। বোয়িং ৭৪৭ দ্রুত ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিমান হয়ে ওঠে। কিন্তু অর্ধশত বছরের রাজত্বের পর বিদায় নিতে হলো আকাশের এই রানীকে। এই মডেলের শেষ বিমানটি আমেরিকান কার্গো এয়ারলাইন অ্যাটলাস এয়ারের কাছে হস্তান্তর করেছে বোয়িং কর্তৃপক্ষ।

সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত, বিশ্বে এই আইকনিক বিমানটির ৪৪ টি সক্রিয় যাত্রী সংস্করণ রয়েছে। যদিও মালবাহী বোয়িং ৭৪৭ চলছে তিন শতাধিক। যাইহোক, যেহেতু এই মডেলের উড়োজাহাজটি আর তৈরি করা হবে না, তাই সবচেয়ে জনপ্রিয় উড়োজাহাজটি ধীরে ধীরে ভবিষ্যতে অদৃশ্য হয়ে যাবে।

বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেনের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও স্ট্যান ডিহেল বলেন, বোয়িং মডেল পৃথিবীকে ছোট করে তুলেছে। একই সময়ে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ ও মাল পরিবহনে বিপ্লব ঘটিয়েছে। বোয়িং ৭৪৭ ফেব্রুয়ারী ৯, ১৯৬৯ তারিখে উড্ডয়ন করেছিল। এই মডেলের প্রথম বিমানটি প্যান আমেরিকান ওয়ার্ল্ড এয়ারওয়েজে যোগ দেয়।

শীঘ্রই এটি যাত্রীদের মধ্যে একটি প্রিয় হয়ে ওঠে। মার্কিন প্রেসিডেন্টরা এতে চড়েছেন। হলিউডের অসংখ্য সিনেমায় এই বিমান ব্যবহার করা হয়েছে।

এই বিমানটি প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ১৯৭০ সালে উড়েছিল। এই বিমানটিতে একটি ককটেল লাউঞ্জ রয়েছে, যা ৭০ মিটার লম্বা এবং ৬০ মিটার চওড়া। এতে চারটি ইঞ্জিন এবং দুটি করিডোর রয়েছে। এই বিমানটি একসাথে প্রায় ৫০০ যাত্রী নিয়ে উড়তে পারে। ফলে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে এসেছে এই বিমান। মানুষের কাছে জনপ্রিয় হলেও বাণিজ্যিক কারণে এ বিমানের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এয়ারলাইন্সগুলি এখন কম জ্বালানি খরচ করে এমন আধুনিক বিমান খুঁজছে। এ কারণে বোয়িং এবং এয়ারবাস আরও জ্বালানি সাশ্রয়ী বিমান তৈরি করছে। গত কয়েক বছরে ইউনাইটেড এবং ডেল্টা এয়ারলাইন্স বোয়িং ৭৪৭ বিমান ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং কান্টাসের মতো এয়ারলাইন্সগুলিও বিমানটিকে গ্রাউন্ডেড করেছে।

প্রসঙ্গত, এ দিকে এই বিমানটির রয়েছে অনেক বড় একটি ইতিহাস। বিমানটির ইতিহাস ঘটতে গিয়ে জানা যায় গত অর্ধ শতাব্দীতে, ১,৫৭০টি বোয়িং ৭৪৭ উত্পাদিত হয়েছে। যাত্রী মডেলের সর্বশেষ উৎপাদন ছিল ২০১৭ সালে। ২০১৮ সালে, বিমানটি কোরিয়ান এয়ার লাইনে যোগ করা হয়েছিল। কিন্তু ৭০ এর দশকে এই বিমানের চাহিদা দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে। বোয়িং ৭৪৭ বিশ্ব ভ্রমণের ধারণা বদলে দিয়েছে। এই বিমানটি পর্যটন থেকে যেকোনো ধরনের ভ্রমণকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে এসেছে। এক ধাক্কায়, ফ্লাইটের খরচ অর্ধেক হয়ে গেছে এই কারণে।

Related Articles

Back to top button