দৈনিক খবর

আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন

দিন যতই যাচ্ছে ধানের রূপ ততই বদলে যাচ্ছে। দুচোখ মেলে তাকালে দিগন্তজুড়ে সবুজের সমারোহে সোনালী ধানের শীষ দোল খাচ্ছে বাতাসে। পাকা সোনালী ধানের আভায় স্বপ্ন দেখছে কৃষক। ধানের ভালো ফলনের ভারে ধানের শীষ নুয়ে পড়েছে মাটির দিকে। ধান কাটা শুরু হয়েছে। আর এই অঞ্চলের কৃষক প্রস্তুতি নিচ্ছেন নবান্ন উৎসবের।

বরগুনায় চলতি আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। রোপা আমন চাষের মধ্যে বিআর২৩, ব্রি৭৬-৮৭-৫২ সহ স্থানীয় লোকাল জাতগুলো নির্ধারিত লক্ষ্য মাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি আমন মৌসুমে ৯৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা ছাড়িয়ে কৃষক ৯৯ হাজার ১৪১ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেছেন। আর ধান উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৩৫ মেট্রিক টন।

সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক পরিচর্যা ও রোগবালাই কম হওয়ায় চলতি আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, যেসব ক্ষেতের ধান কাটার জন্য উপযুক্ত হয়েছে, সেসব জমিতে শ্রমিক নিয়ে ধান কেটার সংখ্যা খবই কম। বেশিরভাগ কৃষক এখন মেশিন দিয়ে ধান কাটা, ঝারা সব একসাথে সমাধান হয়ে যায়। অল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো আঁটি বেঁধে গাড়ি ভরে বাজারে অথবা গৃহস্থের গোলায় নিয়ে যাচ্ছেন। এবার সন্তোষজনক কষ্টের বিনিময়ে হাসি ফুটবে বলে কৃষকদের আশা।

সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের কৃষক মামুন জানান, পাঁচ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছেন। ফলন খুব ভালো হয়েছে। কিছু ধান কেটে বাড়িতে এনেছেন। কাটা থেকে মাড়াই পর্যন্ত শ্রমিকরা এক বিঘা (৩২ শতক) প্রতি নিচ্ছেন তিন হাজার থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা। নতুন আমন ধান এক হাজার ৯০৫০- ১০০০ টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

সদর উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়নের কৃষক রাজ্জাক বলেন, আমি ছয় বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছি। মধ্যে কয়েকদিন আগে নিম্নচাপের প্রভাবে বাতাস ও বৃষ্টি হওয়ায় ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও ফলন খারাপ হয়নি। ধানের দাম ভালো হওয়ায় ধান বিক্রি করে সেই জমিতে এখন আলু লাগাবো। আলু তুলে সেখানে ইরি ধানের চাষ করব।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জোবায়দুল আলম বলেন, ভালো ফলন পেতে মাঠ পর্যায়ে আমি ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েছি। এতে চলতি রোপা আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে যা ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা।

Related Articles

Back to top button