দৈনিক খবর

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আনন্দে রঙিন মেঘলা বিকেল

গতকালের আকাশটা ছিল একটু ভারী। হালকা মেঘ আড়াল করে রেখেছিল সূর্যের কিরণ। শহর থেকে একটুখানি দূরে পূর্বাচলে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের নিজস্ব ক্যাম্পাস ততক্ষণে পরে নিয়েছে নতুন যাত্রার পোশাক। গতকাল থেকেই যে, বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাসের নতুন পথচলার শুরু।

পূর্বাচলের ৯ নম্বর সেক্টরের ক্যাম্পাসে সকাল থেকেই সাজ সাজ রব। ক্যাম্পাসজুড়ে নানা জিনিসের পসরা। কোথাও ছবি তোলার জায়গা। কোথাও আছে মেডিকেল ক্যাম্প। খাবারের দোকানও রাখা হয়েছে হালকা নাস্তার জন্য। আর ক্যাম্পাসের পুরো আঙিনায় কনসার্টের প্রস্তুতি। মঞ্চ, পেছনে আছে এলইডি স্ক্রিন। বিকেল হলেই এখানে গানে আর বাদ্যে মাতবেন শিক্ষার্থীরা। গাইবে জি স্টেট, অতৃতীয়, বোবা আর মূল আকর্ষণ নেমেসিস তো আছেই!

সূর্যটা ধীরে ধীরে পশ্চিমে হেলে পড়লে ক্যাম্পাস মুখর হয়ে উঠতে থাকে শিক্ষার্থীদের পদচারণায়। বলে রাখা ভালো, মূলত দুটি বিষয় নিয়ে ছিল গতকালের আয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম সমাবর্তন হয় এ বছর। সেই সমাবর্তনের রিইউনিয়ন কনসার্ট আর পূর্বাচলে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব ক্যাম্পাসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। দুটি আয়োজনকে ঘিরে ধীরে ধীরে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।

কনসার্ট মঞ্চের বাইরে ঘুরছিলেন সবাই। কেউ ছবি তুলছেন। কেউ তুলছেন সেলফি। আবার অনেক বন্ধু মিলে করছেন গল্প। আরিফ হোসেন সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করছেন। নিজের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘দারুণ লাগছে। ঢাকার ব্যস্ততার বাইরে একটুখানি রিলিফ পাওয়া গেল। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি। বেশ কাটছে।’

এক কর্ণারে করা হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্প। ফরাজী হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে সেখানে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। ছিল ফুডকোর্ট। সেখানে চলে খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে জমপেশ আড্ডা। গুচ্ছ গুচ্ছ দলে শিক্ষার্থীরা মেতেছেন আড্ডায়, উচ্ছ্বাসে।
খানিক পরে মঞ্চের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বোঝা যায়, কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে কনসার্ট। জি স্টেট তাদের র‌্যাপ আর ডিজে পারফর্ম করে মাতিয়ে তোলে। এরপর মঞ্চে আসে অতৃতীয়। তারা তাদের গান পরিবেশন করে। টেকনিক্যাল ঝামেলার কারণে পারফর্ম করতে পারেনি বোবা।

এরই মধ্যে অনুষ্ঠানস্থলে চলে আসেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আজকে অত্যন্ত আনন্দিত যে, একটা সাকসেসফুল সমাবর্তন অনুষ্ঠান করলাম। যেহেতু মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাদের প্রধান অতিথি ছিলেন, ওই দিন কনসার্ট করা অ্যালাউ করেননি। আজকে আমরা আমাদের পারমানেন্ট ক্যাম্পাসে এই কনসার্টের আয়োজন করেছি। এগুলো সবকিছুই তোমাদের জন্য। তোমরা গর্ব করে বলতে পারবে স্থায়ী ক্যাম্পাসের কথা। তোমাদের উপস্থিতি আমাদের সব সময় উৎসাহিত করে নতুন করে বড় কিছু করার জন্য। আমাদের পারমানেন্ট ক্যাম্পাসও আগামী ‍দুই বছরের মধ্যে তোমরা ভালোভাবে দেখতে পারবে।’

অনুষ্ঠানে স্থায়ী ক্যাম্পাস উদ্বোধন করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন চাকরিতে প্রথম যোগ দেই নারায়ণগঞ্জে ম্যাজিস্ট্রেট ছিলাম, তখন এই শহরে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। আমার চাকরি শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে, অথচ এই শহর এখনো জমল না। নাফিজ ভাই যে এখানে ক্যাম্পাসের কাজ শুরু করেছেন, এর দ্বারা পূর্বাচল শহর জমে উঠবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। আলোচনা শেষে অপেক্ষার প্রহর কাটে। মূল আকর্ষণ নেমেসিস ব্যান্ড ততক্ষণে উঠে যায় মঞ্চে। শিক্ষার্থীরা চিৎকার দিয়ে তাদের স্বাগত জানান। নেমেসিস ব্যান্ডের গানে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্থায়ী ক্যাম্পাসে গতকালের সন্ধ্যা নামে।

Related Articles

Back to top button