দৈনিক খবর

একইসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন মা-মেয়ে; মা করেছেন পাস আর মেয়ে করেছে ফেল

মারুফা আক্তার কারিগড়ি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জলঢাকা উপজেলার শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব সরকারি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন। তিনি জিপিএ- ৪ দশমিক ৩৮ পেয়েছেন। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় মা-মেয়ে একইসঙ্গে দিয়েছিলেন এইচএসসি পরীক্ষা। প্রকাশিত ফলাফলে মা মারুফা আক্তার পাশ করলেও অকৃতকার্য হয়েছেন মেয়ে শাহী সিদ্দিকা। মারুফার মেয়ে শাহী সিদ্দিকা একই কলেজ থেকে দিনাজপুর বোর্ডের অধীনে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অকৃতকার্য হয়েছেন।

২০০৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন মা মারুফা। সে পরীক্ষার আগেই পরিবারের সিদ্ধান্তে বিয়ে হয় তার। এরপর থেমে যায় তার লেখা পড়া। বিয়ের পর একে একে জন্ম দেন দুই ছেলে ও দুই মেয়ের। কিন্তু লেখাপড়ার সে স্বপ্নকে মরতে দেয়নি কখনো। লালিত সে স্বপ্নে ১৫ বছর পর লেখাপড়া শুরু করে ২০২০ সালে মেয়ের সঙ্গে পাশ করেন এসএসসি পরীক্ষায়। এবার মেয়ের সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলেন তিনি। মারুফার পাসের খবরে খুশি কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠি এবং স্বামী-সন্তানেরা।

মারুফার বাবার বাড়ি উপজেলার নাউতারা গ্রামে। বিয়ে হয় একই উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের পূণ্যোঝার গ্রামের সাইদুল ইসলামের সঙ্গে। স্বামী পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী। ওই দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে শাহী সিদ্দিকা বড়। দ্বিতীয় ছেলে দশম শ্রেণি, তৃতীয় ছেলে অষ্টম শ্রেণি ও ছোট মেয়ে পড়ছে পঞ্চম শ্রেণিতে।

পরীক্ষার পাশের আনন্দে মারুফা বলেন, বিয়ের ১৫ বছর পেরিয়ে গেছে। চার ছেলে-মেয়েকে লাণপালন করতে গিয়ে নিজের লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি। নিজেকে শিক্ষিত মানুষ হিসেবে পরিচিত করতে দীর্ঘ সময় পর স্বামীর উৎসাহে বড় মেয়ে শাহীর সঙ্গে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া শুরু করি। সে যাত্রায় এসএসসি পাশের পর এবার মেয়ের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে এইচএসসি পাশ করলাম। তবে মেয়ে পাশ না করায় পুরো আনন্দটা উপভোগ করতে পারছি না পরিবারে সাথে। আমার পাশে মেয়ে খুশি হলেও সে পাস না করায় আমি কষ্ট পেয়েছি।

মারুফা আক্তারের স্বামী সাইদুল ইসলাম বলেন, স্ত্রীর সাফল্যে খুশি হলেও কষ্ট হচ্ছে মেয়ের জন্য। তবে আমার স্ত্রী যতদূর পড়াশোনা করতে চায় তাতে আমার সহযোগিতা থাকবে।

Related Articles

Back to top button