দৈনিক খবর

বিদেশি সবজি চাষে স্বাবলম্বী পঞ্চগড়ের কৃষকরা

বেশ কয়েক বছর যাবত ধরে তারা বিদেশি সবজি উৎপাদন করে আসছেন। তাদের উৎপাদিত সবজি রাজধানীর বিভিন্ন নামিদামি হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে ও সুপারশপে বিক্রি করছেন। বিদেশি নানা জাতের সবজি চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার সাইফুল ইসলাম ও আলমগীর হোসেন নামে দুই চাষি।

কৃষক সাইফুর ইসলাম পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার মাগুড়া গ্রামের ও আলমগীর হোসেন বাগানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তারা বেশ কয়েক বছর যাবত বিদেশি নানা প্রজাতির সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তারা আইচবার্গ লেটুস, ব্রকলি, রেড ক্যাবেজ, রোমান, স্যালারি পাতা, ক্যাপসিকাম, পাচলি, চাইনিজ ক্যাবেজ প্রভৃতি চাষ করেন। তাদের দেখাদেখি অনেকেই বিদেশি সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এইসব সবজি রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানের নামিদামি হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে ও সুপারশপে বিক্রি করেন।

সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি অনেক বছর আগে ঢাকার সাভারে একটি বিদেশি সবজির ফার্মে বিদেশি সবজির চাষ শিখেছি। তারপর বাড়ি এসে জমি লিজ নিয়ে বিদেশি সবজির চাষ শুরু করি। প্রথমে সমস্যায় পড়লেও পরে ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগের ফলে এই সবজির চাহিদা সম্পর্কে জানতে পারি। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে আমি আইচবার্গ লেটুস, ব্রকলি, রেড ক্যাবেজ, রোমান, স্যালারি পাতা, ক্যাপসিকাম, পাচলি, চাইনিজ ক্যাবেজ প্রভৃতি চাষ করছি। উৎপাদিত সবজি ঢাকা সহ অন্যান্য স্থানে অবস্থিত নামিদামি হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সুপারশপে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছি। স্থানীয়ভাবে এই সবজির চাহিদা তেমন নেই।

সরেজমিনে মাগুড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পাতা কপির মতো দেখতে থাইল্যান্ডের আইচবার্গ লেটুস জাতের সবজি চাষ হয়েছে। জমি থেকে তুলে ২-৩ দিন পর পর ঢাকার নামিদামি রেস্টুরেন্টগুলোতে পাঠানো হচ্ছে। এভাবেই বিদেশি সবজি উৎপাদন ও বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন সাইফুল।

সাইফুলের বিদেশি সবজি চাষ দেখে বাগানপাড়া এলাকার আলমগীর হোসেনও বিদেশি সবজি চাষ করছেন। তিনি বলেন, আমি ১ বিঘা জমিতে থাইল্যান্ডের সবজি আইচবার্গ লেটুস চাষ করছি। এই বিদেশি সবজি চাষে সাইফুল ইসলাম আমাকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন। ইতোমধ্যে আমার জমি থেকে সবজি তুলে বাজারজাত করা শুরু করেছি। স্থানীয় বাজারে এ সবজি পরিচিত না থাকায় আমাকে ঢাকায় পাঠাতে হচ্ছে। আশা করছি সামনে আরও বেশি জমিতে আরও কয়েক প্রজাতির সবজি আবাদ করবো। বেশ দাম পাচ্ছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই জেলার মাটি দোআঁশ ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় বিদেশি সবজি চাষে চাষিদের সমস্যায় পড়তে হয়। ফলনও ভালো হয়। চাষিরা আইচবার্গ লেটুস, ব্রকলি, রেড ক্যাবেজ, রোমান, স্যালারি পাতা, ক্যাপসিকাম, পাচলি, চাইনিজ ক্যাবেজ, বিটরুট, স্কোয়াশ, ফ্রেঞ্চ বিনের মতো সবজি চাষ করছেন। আশা করছি বিদেশি সবজি উৎপাদন কৃষিক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে। আমরা চাষিদের বিদেশি সবজি চাষের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করছি।

Related Articles

Back to top button