দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে বিমা কোম্পানির যোগসূত্র রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে বিমা কোম্পানির যোগসূত্র রয়েছে। এটাই বাস্তবতা। তিনি বলেন, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বদনাম হোক সেটা চাই না। কারও চাপের কাছে আপনারা মাথা নত করবেন না। আজ বুধবার (১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বিমা দিবস-২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দাবিদার দাবি করবে বড় একটা, তার প্রকৃত ক্ষতিটাকে যাচাই-বাচাই করেই অর্থ দেবেন। সেটা কেন করা হয় না? আমি মনে করব, যারা তদন্ত করতে আসে তারাও কি এর ভাগিদার? তাদেরও নিশ্চয়ই হাত আছে? সেটাও আমার সন্দেহ হচ্ছে। তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে বিমা করে না সেটা ঠিক না। কিন্তু ক্ষেত্রে বিশেষে দেখা যায়, এক সময় গার্মেন্টসে শুধু আগুন লাগতো। হঠাৎ কোনো এক গার্মেন্টসে আগুন লাগে। তারপর ইন্স্যুরেন্সের টাকা চায়। এবার মোটা অংকের একটা টাকা চাইলো। তখন আমি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে বললাম যে, আপনারা এখন টাকা দেবেন না, আমি তদন্ত করব। তদন্ত করে দেখা গেল, ওই গার্মেন্টসের এক মেয়ে শ্রমিককে ২০ হাজার টাকা দিয়ে আগুন দিয়ে তারপর ইন্স্যুরেন্সের মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়। যেখানে কিছু নেই, যেখানে তারা বসে খাওয়া-দাওয়া করতো, সেখানে আগুন দেওয়া হয়েছিল। ওই মহিলাকে যখন ধরা হলো তখন সে স্বীকার করলো তাকে দিয়ে এটা করা হয়েছে। এতো ঘন ঘন আগুন একটা জায়গায় লাগবে কেন? সেক্ষেত্রে বীমা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকা দরকার।
তিনি আরও বলেন, আগুনে কতটুকু ক্ষতি হলো সেটা যথাযথভাবে তদন্ত করা দরকার। যথাযথভাবে তদন্ত না করে, কারও চাপে পড়ে কোনো টাকা দেবেন না। একটা ফ্লাটে কী সম্পদ থাকতে পারে যে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি তাকে ৪০ কোটি টাকা দেবে। আপনাদের কাছে এর জবাব আছে? তাহলে কী ভাবে গেল সাধারণ বীমা থেকে। আমার কাছে এই ধরনের একটা ঘটনা এসেছে সামনে। আমি এটাও তদন্ত করাবো। কত সম্পদ একটা ফ্লাটের মালিকের কাছে আছে যে তার ৪০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেল আর বীমা থেকে টাকা নিয়ে গেল। যার ঘরটা সবচেয়ে বেশি পুড়ল তার বীমাও নেই, সে কিছু পেল না। এসব বিষয়ে সকলের একটু নজর দিতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবন-জীবিকার জন্য ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে দায়িত্ব নিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ওই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বসেই ছয় দফা প্রণয়ন করেছিলেন। পুরো বিষয়টা টাইপ করেছিলেন মোহাম্মদ হানিফ। পরে এটা একজন বিজ্ঞ ব্যক্তিকে দিয়ে ট্রান্সলেশন করা হয়। আমাদের যে স্বাধীনতা অর্জন বা ছয় দফা প্রণয়ন, ছয় দফার ভিত্তিতে ৭০ এর নির্বাচন- সবই কিন্তু ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বসেই করা হয়। তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে ইন্স্যুরেন্সের এক যোগসূত্র রয়ে গেছে, এটা বাস্তবতা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে দায়িত্ব নেন সেই কোম্পানির মালিক তার বন্ধু ছিলেন। তিনি তাকে দায়িত্ব নিতে বলেন। সে কারণে তিনি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ করতেন। তবে এটা বেশি দিন টেকেনি। কারণ ১৯৬২ সালে আবার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, বাবা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করেছেন, গাড়ি পেয়েছেন, আমরাও বেশ ভালোভাবে আছি, এই সময়টা বাবা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে আমাদের একটা আত্মার যোগাযোগ আছে।