দৈনিক খবর

রাষ্ট্রপতির আসনে বসতে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর আইনি বাধা নিয়ে এবার মুখ খুললো নির্বাচন কমিশনার

বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন দুদকের সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তবে তার এই রাষ্ট্রপতি পদ গ্রহণ করতে দেখা দিয়েছিলো কয়েকটি গুরুতর প্রশ্ন। আর সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন দেশের বর্তমান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। সাহাবুদ্দিনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর।

এ নিয়ে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি একটি অলাভজনক পদ হওয়ায় ২২তম সভাপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের দায়িত্ব নিতে কোনো আইনি বাধা নেই। গতকাল মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।।

আইনে আছে যে, দুদক কমিশনাররা লাভজনক কোনো পদে যেতে পারেন না। রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক নাকি লাভজনক নয়, এটি নিয়েও একটি প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে ইসির ব্যাখ্যা কী?

এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি মো. আলমগীর বলেন, “দুদকের আইনে বলা আছে কমিশনাররা লাভজনক পদে যেতে পারবেন না। কিন্তু আপনারা জানবেন যে নির্বাচন কমিশন যখন এটা করেছে, তখন আইন জেনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ যখন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন আদালতে মামলা ছিল। কারণ বিচারকদের ক্ষেত্রে আইন একই, তারা লাভজনক পদে যেতে পারে না।

তিনি বলেন, ‘কারণ ওই সময় একটি মামলা ছিল এবং সেই মামলায় হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, আদেশের বিরুদ্ধে কোনো স্থগিতাদেশ ও কোনো আপিল নেই। আমাদের সামনে হাইকোর্টের একটি সুনির্দিষ্ট উদাহরণ রয়েছে, রাষ্ট্রপতি পদকে লাভের পদ বলা যাবে না। ওই রায়ে বলা হয়, ‘লাভজনক পদ’ বলতে যাঁরা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী। এটা স্পষ্টভাবে বলা আছে. এটা তার (মোঃ সাহাবুদ্দিন) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। রাষ্ট্রপতির পদে বসতে তার কোনো আইনি বাধা নেই।

মো: আলমগীর বলেন, “একটা জিনিস বুঝতে হবে যে, লাভজনক পদ বলতে কী বোঝায়, সেই তালিকা দেওয়া না থাকলেও লাভজনক পদ সম্পর্কে খুবই স্পষ্ট। তবে লাভের পদের ক্ষেত্রে বলা হয়, যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে সরকারের ৫০ শতাংশের বেশি টাকা প্রজাতন্ত্রের কাজে নিয়োজিত থাকলে সেই নিয়োগকে বলা হবে লাভজনক পদ।এখানে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী, তারা কোনো কর্মকর্তা নিয়োজিত নন। প্রজাতন্ত্রের কাজ। এগুলো সাংবিধানিক পদ।যেহেতু সাংবিধানিক পদ আর লাভজনক পদের সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না।

“এবং যেহেতু এটি নিয়ে একটি মামলা ছিল এবং আমাদের আইন যা বলে তা হল – যদি হাইকোর্ট বা আপিল বিভাগের রায় থাকে তবে সেই রায় আইন হিসাবে গৃহীত হবে।” রায়ে বলা হয়েছে, বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের মামলায় যখন তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন মামলাটি খারিজ হয়ে যায় এবং আদালত স্পষ্টভাবে বলে দেন যে, মহামান্য রাষ্ট্রপতির কার্যালয় কোনো লাভজনক পদ নয়। এটি একটি সাংবিধানিক অবস্থান। তাই এটা তার জন্য কোনো বাধা হবে না,” যোগ করেন ইসি আলমগীর।

এ দিকে উনি যদি আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এর মাধ্যমে কি সুযোগটা বন্ধ করে দেওয়া হলো না? এটি কি আইনসিদ্ধ হলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটা অবশ্যই বৈধ। একাধিক প্রার্থী না থাকলে এবং মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর পাওয়া গেলে তার মনোনয়নপত্র সঠিক ও বৈধ বলে আইনে স্পষ্টভাবে লেখা আছে। তারপর ওই সময় তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবেন। এটা প্রত্যাহার করার জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই।’

প্রসঙ্গত, এ দিকে গতকাল শেষ হয়ে গেছে ২২তম রাষ্ট্রপতি মনোনয়নের শেষ তারিক। আর এর মাধ্যমেই নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নাম ঘোষণা করা হয় এবং সেই অনুযায়ী দেয়া হয় গেজেট।

Related Articles

Back to top button