দৈনিক খবর

কোনো সিনিয়র পারফর্ম না করলে হাতুরা তাকে বাদ দেবে : পাপন

দেশের তারকা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম, মাহমুদ উল্লাহ, মমিনুল হক, এমনকি সাকিব আল হাসানের সঙ্গে চন্দিকা হাতুরাসিংহের সম্পর্ক ভালো নয়। প্রথম মেয়াদে হাতুরার পদত্যাগের অন্যতম কারণ ছিল সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে তার বিবাদ। এবারও পরিস্থিতি তেমনই আছে। দ্বিতীয় মেয়াদে সবচেয়ে বেশি আশঙ্কা করা হচ্ছে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে। সিনিয়রদের মাঝে একমাত্র সাকিবই তিন ফরম্যাটে খেলছেন। তার পারফরম্যান্সটাই উল্লেখযোগ্য। কিন্তু বাকিরা তো পারছেন না পারফর্ম করতে। এসব সিনিয়রের ওপর এবার কঠোর হতে যাচ্ছে বিসিবি।

ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, কোনো সিনিয়র ক্রিকেটার পারফর্ম করতে না পারলে হাতুরাসিংহে তাকে নির্দ্বিধায় দল থেকে বাদ দিয়ে দেবেন! পাপনের ভাষায়, ‘এটা খুবই কঠিন হবে (সিনিয়রদের সঙ্গে হাতুরার সুসম্পর্ক)। এমনকি ডমিঙ্গোর সঙ্গেও সিনিয়রদের সমস্যা হয়েছিল…। আমি নিজেই এই মেয়াদে বিসিবির সভাপতি হতে চাইনি, কারণ আমি জানতাম আমাকে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের খেলোয়াড়দের সমস্যাটা হলো, তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমাদের কিছু বলে না। হাতুরাসিংহের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে, কারণ আমি জানি, যদি কোনো সিনিয়র ক্রিকেটার পারফর্ম না করে, হাতুরাসিংহে তাকে দল থেকে বাদ দিয়ে দেবে।’

এদিকে দেশের তারকা ক্রিকেটার তামিম-সাকিবের বন্ধুত্ব তাঁদের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের মতোই শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে এখন তারুণ্যে। বিকেএসপিতে অনূর্ধ্ব-১৫ দলের ক্যাম্পে তামিমের সঙ্গে প্রথম দেখা সাকিবের। অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-১৮ দলেও খেলেছেন একসঙ্গে। জাতীয় দলে আসার পর গাঢ় হয় দুজনের বন্ধুত্ব। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দুজনের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। কয়েকবার গণমাধ্যমেও উঠে এসেছিল এসব তথ্য।

এবার বিষয়টি আরও পরিষ্কার করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সম্প্রতি ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই কথা আড়াল করেননি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বিসিবি বস বলেন বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর নয়!

নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘এটি একটি স্বাস্থ্যকর ড্রেসিংরুম নয়, এটি আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি। এই ব্যাপারটা (সাকিব ও তামিমের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল), এটা এমন নয় যে আমি এটা সমাধানের চেষ্টা করিনি। আমি তাদের দুজনের সঙ্গেই কথা বলেছি এবং আমি বুঝতে পেরেছি যে এই মুহূর্তে তাদের মধ্যকার সমস্যাগুলি নিষ্পত্তি করা সহজ নয়। এই আমার পর্যবেক্ষণ… তাদের উভয়কে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে – আমরা জানি না আপনাদের মধ্যে কি চলছে, তবে আপনারা যে ম্যাচে বা সিরিজ খেলছেন, সেখানে এই সমস্যাগুলি সামনে আসতে পারে না। তারা দুজনেই আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এটি খেলার সময় থাকবে না।’

এদিকে মাঠের বাইরে যাই হোক বিসিবি সভাপতির চাওয়া ড্রেসিংরুমে যেনো সব স্বাভাবিক থাকে। পাপন বলেন, ‘তাদের (সাকিব ও তামিম) মাঠে এবং ড্রেসিংরুমেও কথা বলতে হয়। ড্রেসিংরুমের পরিবেশও খারাপ ছিল তবে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এই সিরিজ থেকে (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন হোম সিরিজ) আমি অন্তত ড্রেসিংরুমে এটি (তাদের সম্পর্ক) পরিবর্তন করতে চাই। তারা বাইরে যা করে তা আমার জন্য চিন্তার বিষয় নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা এই গ্রুপিং এবং এটাই বাস্তবতা। আমার আর অন্য কিছুতে সমস্যা নেই। আমি শুধুমাত্র এই গ্রুপিং সম্পর্কে ভীত এবং আমি কিছুদিন আগে এটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। বিশ্বকাপেও ওদের হোটেলে না থাকার পরও যা দেখেছি শুনেছি… বিশ্বাস করতে পারছি না এটা কিভাবে সম্ভব! সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতে হলে আমাদের এর অবসান ঘটাতে হবে কারণ একটা জিনিস সবারই বোঝা দরকার তা হল গ্রুপিং করার সুযোগ নেই।’

Related Articles

Back to top button