দৈনিক খবর

আজ ভালোবাসার বসন্ত, ছোঁয়া যেন লেগেছে নাগরিক জীবনে

শীতের রুক্ষতা-রিক্ততা মুছে প্রকৃতিতে বইছে ফাল্গুনী হাওয়া। বিপুল ঐশ্বর্যের ঋতু-ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। আজ পয়লা ফাল্গুন। ‘আজি দখিন দুয়ার খোলা/ এসো হে এসো হে এসো হে আমার বসন্ত’—কবিকণ্ঠের এ প্রণতির মাহেন্দ্র লগন এলো। এলো ‘দখিন সমীরণের শিহরণ’ জাগানোর অনুপম দিন। মাতাল হাওয়ায় কুসুম বনের বুকের কাঁপনে, উড়াল মৌমাছিদের ডানায় ডানায়, নিরাভরণ বৃক্ষে কচি কিশলয় জেগে উঠবার আভাসে আর বনতলে কোকিলের কুহুতান জানান দিচ্ছে :‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে…।’

ভালোবাসার উৎসবের দিন আর বসন্তের ফাগুন একই দিনে এসে হাজির। তাতে কী! প্রকৃতি যখন কোকিলের সুরে কথা কয়, নানান রঙের সমাহারে রঙীন হয়। তখন ঠিকই বেরসিক নাগরিক মনে ভালবাসার বসন্ত কড়া নাড়ে। ভালবাসাই সহজ করে দেয় চাওয়া পাওয়ার নানা বিচ্যুতি।

রোদ পালানো এক বিকেলের হাতছানিতে মন বলে উঠে, কী জানি নাই কী জানি নাই। হঠাৎ মৃদুমন্দ হাওয়া কোনো এক উদাসী মেয়ের এলোকেশে দোলা দিলে মনের গোপনে কুঠুরিতে হানা দেয় অজানা সুর। যে নগরে আবেগ চুরি হয় প্রতিক্ষণে সে নগরে ভালবাসা আর বসন্ত মাঝে মাঝে নিরুপায় বোধ করতেই পারে। তবুও ব্যস্ততাকে পেছনে ঠেলে যারা উপলব্ধি করতে পারেন ভালবাসার মৌসুমকে, তারা খানিক হারিয়ে যায় ভাল লাগায়।

প্রিয় বন্ধুর সাথে এথায়-ওথায় ছুটে চলা। বন্ধুর সঙ্গে কত-কথা, খুনসুটিতে দিন পার। বাধা হয় না নিত্যদিনের কানে তালা লাগা শব্দ শহরের দূষণ-ধুলো।

আবহমান বাংলার নৈসর্গিক প্রকৃতিতে এখন সাজসাজ রব। হিমেল পরশে বিবর্ণ প্রকৃতিতে জেগে উঠছে নবীন জীবনের প্রাণোল্ল­াস। নীল আকাশে সোনা ঝরা আলোকের মতোই হৃদয় আন্দোলিত-আলোড়িত-আপ্লুত। আহা! কি আনন্দ আকাশে বাতাসে…। ঋতুচক্র এখন যেন আর পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না। কুয়াশার চাদরমোড়া শীত তার তীব্রতা ছড়াতে না ছড়াতেই এলো বসন্ত। প্রকৃতির দিকে তাকালে শীত বর্ষার মতো বসন্তকেও সহজে চেনা যায়।

Related Articles

Back to top button