জাতীয়দৈনিক খবর

শেষ সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীকে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ

মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিতে সেই ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি থেকে শুরু। বাকি জীবনে সময়ের বাঁকে বাঁকে কাজ করেছেন মানুষকে স্বল্প খরচে স্বাস্থ্য সেবা, ওষুধ কেনার সুযোগ করে দেয়ার মিশনে। শেষ বয়সে এসে দেশে সুস্থ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সুষ্ঠু ভোটাধিকার প্রয়োগের লড়াই সক্রিয় ছিলেন রাজনীতির মাঠে। সবশেষ জাতীয় নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে কথা বলেছেন ভোটের জন্য। সবশেষ গত মার্চে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনায় যোগ দিয়ে দেখা হয়ে যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। কুশল বিনিময় শেষে সেখানে তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের পরামর্শ দেন সরকার প্রধানকে।

বিএনপি ঘরানার বুদ্ধিজীবী হিসেবে প্রচারণা থাকলেও বাস্তব কথা বলতেন কাউকে ছাড়তেন না জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সরকারের কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি খোদ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেও নানা সময় কথা বলেছেন ডা. জাফরুল্লাহ। আবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে নিয়েও কথা বলেছেন বহুবার। এজন্য রোষানলেও পড়তে হয়েছে তাকে। তবুও পিছপা পা হননি এই মানুষটি।

গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রের সব পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ও পেশাজীবীরাও আমন্ত্রিত ছিলেন। অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়ে শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও হুইল চেয়ারে বসে বঙ্গভবনে গিয়েছিলেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের ফাঁকে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘুরে ঘুরে অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর টেবিলের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। এসময় মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাস্থ্যখাতে অসামান্য অবদান রাখা এই মানুষটির সঙ্গে আপনমনে কথা বলছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

সেই ছবিতে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী যখন দাঁড়িয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলছেন তখন পাশে নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও তার স্ত্রী দাঁড়িয়ে ছিলেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সংসদের হুইপ আ স ম ফিরোজকেও একটি ছবিতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কুশলাদি বিনিময়ের এক পর্যায়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দ্বাদশ নির্বাচন ইস্যুতে সৃষ্ট সংকট নিরসনে বিএনপিসহ বিরোধী দলকে সংলাপে ডাকতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেন।

যদিও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই আহ্বানে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলে জানা গেছে। উল্টো তিনি অতীতে সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করা, আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর গুলশানের কার্যালয়ে গেলেও গেট বন্ধ করে রাখা, একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সংলাপের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

Related Articles

Back to top button