দৈনিক খবর

প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে সংসদে দাঁড়িয়ে আ.লীগ নেতার বিস্ফোরক মন্তব্য

দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি বর্তমান সময়ে এসে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগকে সরকার থেকে হঠাতে নানা ধরনের কর্মসূচী দিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতা আ.লীগ নেতাদের পালানোর জায়গা নিয়েও বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। আ.লীগের অনেক নেতা ক্ষমতা থেকে বিএনপির নামিয়ে দেওয়া প্রসংগে বেশ দাপটের সাথে জবাব দিয়ে যাচ্ছেন। এবার সংসদে দাঁড়িয়ে ভোটের হিসাব কষে দেখালেন আ.লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও সংসদ সদস্য একেএম রহমতুল্লাহ।

জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা-১১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য একেএম রহমতুল্লাহ বি”/স্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে (অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের) হওয়ার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু সেখানকার টেবিল, বাতাস থেকে শুরু করে সবই চোর। সেজন্য আমি যাইনি। পরে আমাকেও মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আমি তাতেও রাজি হইনি।

রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে রহমতুল্লাহ এসব কথা বলেন।

রহমতউল্লাহ বলেন, “আমি ঢাকার এমপি। এখনকার মধ্যে মোস্ট সিনিয়র এমপি, এখানে মতিয়া আপা আছেন, আমার চেয়ে সিনিয়র পাঁচ-ছয়জন আছেন। আমার এখন ৭৫ চলছে। হ্যাঁ, ৭৬ চলছে। আমি ফিরোজ রশিদের (জাতীয় দলের সংসদ সদস্য) সাথে একসাথে লেখাপড়া করতাম। আমার ছেলের বয়স ৪৯ বছর। অনেকে প্রশ্ন করেন, আমি পাঁচবারের এমপি। কেন মন্ত্রী হলাম না?’

তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ, হানিফ সাহেব (অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ) প্রয়াত হওয়ার পর মেয়র মেয়র অফার (প্রস্তাব) করেছিলেন। আমি আপারে বললাম, আমি সেখানে যাব না। সেখানে চুরি আছে। টেবিলে চুরি করে, বাতাসে চুরি করে এবং এখানের মধ্যে সব চোর। আমি যাব না। তারপর আমাকে মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব কারণে আমি তখন রাজি হইনি।

নিজের ব্যবসার কথা বলতে গিয়ে এই সরকার দলের সংসদ সদস্য বলেন, “ঢাকা শহরের প্রথম ট্যাক্স বাহাদুর হিসেবে আমি নির্বাচিত হয়েছি। আমার অনেক কোম্পানি আছে। আমি শুধু দুটি নাম বলব। একটি অ্যাপেক্স ট্যানারি। আপনারা এপেক্স ট্যানারিকে ভালো করেই জানেন। আরেকটি হচ্ছে। এফডি ফুটওয়্যার। এটা আমার ছেলে করছে। এটার টার্নওভারও (বার্ষিক লেনদেন) ৫০০ কোটি টাকা। আমার ছেলে বাংলাদেশে একটি বড় ওষুধের কারখানা বানাবে, ৮০ বিঘা জমি কেনা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে ব্যাংকে কোনো ঋণ নেই, আমাদের কী সম্পত্তি আছে তা আমরা প্রকাশ্যে বলব না, এটা শুধু মতিয়া আপা ও প্রধানমন্ত্রীকে বলবো।

এ সময় তিনি বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করেন। রহমতুল্লাহ বলেন, আমি আহলে হাদীসের প্রধান উপদেষ্টা। সারা দেশে এর প্রায় আড়াই কোটি ভোটার রয়েছে। আমার চামড়া সরবরাহকারী এবং তাদের পরিবার মিলে প্রায় এক কোটি। সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা তো দূরের কথা, তারা (বিএনপি) আওয়ামী লীগের একটি আসনও নিতে পারবে না।

তবে তার এই বক্তব্য ঘিরে তেমন কোনো সমালোচনা না হলেও আ.লীগের অনেক নেতা অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে কয়েকজন নেতা বলেছেন, তিনি একজন সিনিয়র নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী তাকে মন্ত্রী হিসেবে চাওয়ার বিষয়টি ভুল কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী ভালো বোঝেন কখন কোথায় কাকে রাখতে হবে, তার সিদ্ধান্ত দলের জন্য কল্যানকর হবে, এটা নিশ্চিত।

Related Articles

Back to top button