দৈনিক খবর

রাশিয়ার জাহাজ বাংলাদেশে ভিড়তে না দেওয়ায় যে প্রতিক্রিয়া জানালো রাশিয়া

বাংলাদেশে রূপপুর পরমানু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশ ও সারন্জামাদি নিয়ে রাশিয়ার পাঠানো জাহাজ ভিড়তে দেয়নি সরকার, যেটা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃস্টি হয়েছে। তবে কী কারনে বাংলাদেশে জাহাজটি ভিড়তে দেয়নি সে বিষয়ে রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকেতলব করেছে দেশটির মন্ত্রনালয়। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এবং এই ঘটনার পর রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা সে বিষয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রুশ জাহাজ বাংলাদেশে ভিড়তে না দেওয়ার ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কের মাঝে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এছাড়াও বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ককে ব্যবসায়িক স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে মন্ত্রনালয়।

রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী ইউক্রেনে সাম”/রিক অভিযান শুরু করে যেটা এখনও অব্যাহত রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা তখন দেশটির ৬৯টি জাহাজের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এরই অংশ হিসেবে রাশিয়ার একটি জাহাজকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়নি বাংলাদেশ। পরে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ফজলুল হালিম রানা বলেন, কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এ ধরনের তলব একটি স্বাভাবিক ঘটনা।

বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সবচেয়ে বেশি আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে রাশিয়া। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে, রাশিয়া মার্কিন-অনুমোদিত জাহাজের নাম এবং রঙ পরিবর্তন করে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সরঞ্জাম পাঠায়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে জাহাজটিকে বন্দরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ।

এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে জাহাজ ভিড়তে না দেওয়ার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্কের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরীন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক ব্যবসায়িক স্বার্থেও গুরুত্বপূর্ণ।

সেহেলি সাবরীন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। তাই তাদের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের কথা শোনা। ‘

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ফজলুল হালিম রানা বলেন, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে এ ধরনের তলব একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তিনি আরও বলেন, ভারতও রাশিয়ার এই জাহাজটিকে তাদের বন্দরে ভিড়তে দেয়নি। কিন্তু তারা ভারতকে তলব করেনি। ‘

তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রভাব পড়বে না এমন ধরনের মন্তব্য করা হলেও কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি সৌজন্যমূলক মন্তব্য কিনা সে বিষয়টিও হালকা ভাবে দেখছে না বাংলাদেশ। তবে রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অক্ষুন্ন থাকার কথা বলেছে দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আপ”ত্তির কারণে রাশিয়া বাংলাদেশের জাহাজটি ভিড়তে না দিলে সেটি ভারতের বন্দরে ভিড়ে সারন্জামাদি খালাস করার কথা বললেও ভারত জাহাজটিকে ভিড়তে দেয় না যার কারণে জাহাজটি পূনরায় রাশিয়াতে ফিরে যায়।

Related Articles

Back to top button