দৈনিক খবর

কনের বাবাকে ক্ষতিপূরণ দিলেন বিয়েতে না আসা সেনাসদস্য বর

অবশেষে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বিয়েতে না আসায় কনের বাবাকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন সেনাসদস্য সেই বর। গতকাল শুক্রবার ২৪ ফেব্রুয়ারি এক সালিশের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই লাখ টাকা ধার্য করা হয়। এরপর কনের বাবার হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম জাকারিয়া আলম।

তবে কনের বাবা প্রাপ্ত ২ লাখ টাকা গ্রহণ না করে গ্রামের অসহায় বা দুঃস্থ পরিবারের কোনো বিবাহ উপযুক্ত মেয়ের বিয়েতে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তাই টাকাগুলো চেয়ারম্যানের কাছে আমানত হিসেবে রেখে দিয়েছেন তিনি। এর আগে গত রবিবার ১৯ ফেব্রুয়ারি বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক থাকলেও দিনভর অপেক্ষার পরও বর না আসায় বিয়ে হয়নি। এ ঘটনায় ভেঙে পড়েন কনে ও কনের বাবা।

এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী ওমর ফারুকের ছেলে মো. হুসাইন। তিনি বর্তমানে বরিশাল লেবুখালী সেনানিবাসে সেনা সদস্য হিসেবে কর্মরত।

এ বিষয়ে কনের মামা সাজ্জাদ হোসেন জানান, দুই পরিবারের দেখাশোনা সম্পন্নের পর বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। হুসাইন ও তার পরিবারের সিদ্ধান্তেই গত রোববার নির্ধারিত দিন ছিল বিয়ের। দেনমোহরও ধার্য হয় ৭৫ হাজার টাকা। এর দুদিন আগে ছেলে ও তার পরিবারের সদস্যরা কনেকে নাকের নথ পরিয়ে দিয়ে আসেন। রবিবার ২০ থেকে ২৫ জন বরযাত্রীসহ বর আসার কথা কনের বাড়িতে। সব আয়োজন সম্পন্ন করে প্রতীক্ষায় ছিল কনের পরিবার। পরে বিকেলে জানা যায়, বর আসবে না।

সাজ্জাদ আরও জানান, বিয়েতে যদি মত না-ই থাকে, তাহলে ছেলে নিজ থেকেই আমার ভাগ্নিকে দুইবার কেন দেখতে এলো? এ ছাড়া শুনেছি ছেলে তার নিজ কর্মস্থলে উল্টো মেয়ের পরিবার ও নিজের বাবার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছে। এরপর আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, সম্প্রতি ছেলের বাবা বিদেশ থেকে বাড়িতে আসেন। পরে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে হুসাইন বিভিন্ন গ্রামে মেয়ে দেখতে শুরু করে। এক মাসে তারা ১৫ থেকে ১৮ স্থানে মেয়ে দেখেন। তবে সে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

তিনি আরও জানান, মেয়ের বাবা একজন অসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি তার শেষ সম্বল দুটি গাভী বিক্রি করে মেয়ের সুখের জন্য ছেলের দাবিকৃত মেয়ের সোনার গহনা ও হবুজামাইয়ের জন্য একটা পালসার মোটরসাইকেল দিতে রাজি হন। এ অবস্থায় কনে ও তার বাবা খুবই ভেঙে পড়েন। দুই থেকে তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

Related Articles

Back to top button