দৈনিক খবর

১৭ বছর পর বাবাকে খুঁজে পেলেন সাবিনা

দীর্ঘ ১৭ বছর আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন গ্রামের বাসিন্দা তীন্দ্রনাথ (৭০)। পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। একসময় তাকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন স্বজনরা। কিন্তু হারিয়ে যাওয়ার ১৭ বছর পর তাকে ফিরে পেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

যতীন্দ্রনাথ ধামইরহাট উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবিনা এক্কার বাবা। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় ডাংগী বিএসএফ ক্যাম্প যতীন্দ্রনাথকে পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের (১৪ বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ১৪ বিজিবি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাবিনা এক্কার বাবা যতীন্দ্রনাথ মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে ১৭ বছর আগে নিজ বাড়ি থেকে হারিয়ে যান। গত ২১ ফেব্রুয়ারি সাবিনা লোক মারফত জানতে পারেন,

তার বাবা ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট থানার রায়নগর গ্রামের মন্দিরে অবস্থান করছেন। এরপর বাবাকে ফিরে পেতে পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের (১৪ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল হামিদ উদ্দিনের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন সাবিনা।

লে. কর্নেল হামিদ উদ্দিন জানান, বিষয়টি জানার পর ডাংগী বিএসএফ ক্যাম্পকে অবগত করা হয়। তারাও মানসিক ভারসাম্যহীন যতীন্দ্রনাথকে ফিরিয়ে দিতে আশ্বস্ত করেন। পরে সোমবার রাত ৯টায় সীমান্ত পিলার ২৬০/৭-এস এর কাছে বিএসএফ সদস্যরা তাকে হস্তান্তর করেন।

এরপর যতীন্দ্রনাথকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যতীন্দ্রনাথের মেয়ে সাবিনা এক্কা বলেন, তারা দুই ভাই ও দুই বোন। বড় বোন মিন্না এক্কা। ২০০১ সালে তিনি দশম শ্রেণিতে পড়তেন। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

পরবর্তীতে মিন্না এক্কা মারা যাওয়ায় পরিবারের সবাই ভেঙে পড়েন। যতীন্দ্রনাথ অনেক সময় উল্টাপাল্টা ও অ;সং;লগ্ন কথা বলতে থাকেন। ২০০৬ সালে একদিন কাউকে কিছু না বলেই শার্ট-প্যান্ট পরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি।

সাবিনা বলেন, ‘আমার স্বামী নারায়ণ চন্দ্র তার চিকিৎসার জন্য ৪-৬ মাস পর পর ভারতে যান। চিকিৎসা শেষে যতটুকু সময় পান বিভিন্ন এলাকা ও মন্দিরে খোঁজখবর নেন এবং মানুষকে ছবি দেখান।

পরে একসময় বাবার ছবি দেখে স্থানীয়দের একজন চিনতে পারেন। পরে বালুরঘাট রায়নগর কালিমন্দিরের বারান্দায় বাবার সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে খড়ের মধ্যে শুয়েছিলেন। পরে স্বামী ভিডিও কলের মাধ্যমে বাবাকে দেখান এবং নিশ্চিত হতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘বাবার অবস্থা দেখে মনে হয়েছিল এ বাংলার মাটিতে হয়তোবা আনতে পারবো না বা শেষকৃত্য হবে না। পরে বিজিবিকে বিষয়টি জানালে তারা বাবাকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।’

Related Articles

Back to top button