দৈনিক খবর

বিবস্ত্র করে ভিডিও: তোমার হাতে-পায়ে ধরে মাফ চাই, তুমি এরকম করো না, বললেন সেই ছাত্রীলীগ নেত্রী

চলতি মাসের গত কয়েকদিন আগেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে র‌্যাগিংয়ের নামে রাত ১১ টা থেকে প্রায় তিন ঘন্টা পর্যন্ত ফুলপরী খাতুন নামে এক শির্ক্ষাথীর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় ছাত্রলীগের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীরা।

তবে শিগগিরই ওই ঘটনায় ফুলপারীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সঙ্গীরা।

তারা ফুলপরীকে বলল, তুমি এমন করো না। তোমার হাতে-পায়ে ধরে মাফ চাই।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের কার্যালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সামনে ফুলপরী এ কথা বলেন।

ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় আজ তদন্ত কমিটির কার্যালয়ে ভিকটিম ছাত্রী ফুলপরী ও আসামিদের মুখোমুখি করা হয়।

ইবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ছাড়াও আসামিরা হলেন- তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, ইসরাত জাহান মিম, হালিমা খাতুন উর্মি।

ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী অফিস থেকে বের হয়ে সাংবাদিকরা ঘেরাও করে ভেতরে কী হয়েছে জানতে চান।

জবাবে তিনি বলেন, আসামিদের জানিয়েছি। তারা আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আমি বললাম এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। প্রশাসন যা যা লাগবে তাই করবে। তারা কাঁদছিল। অন্তরা (সানজিদা চৌধুরী) আমাকে অনেক অনুরোধ করেছে। তাদের কান্না কান্না ভাব। কেঁদে ফেলবে এমন অবস্থা।। আমি তখন বললাম যে আমি মাত্র চার-পাঁচ দিন ক্যাম্পাসে আছি। কিন্তু তুমি আমার কথা ভাবলে না। এখন সেটাই করবে প্রশাসন। এ সময় তারা অনেক কান্নাকাটি করেন।
তিনি তাদের ভয় পান কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, আমি কোনো ভয় পাইনি।

অন্যদিকে, অভিযুক্তরা অফিস থেকে বেরিয়ে এসে তাদের মুখে তালা মেরেছে। অনেক প্রশ্ন করা হলেও মুখ দিয়ে কিছুই বের হয়নি। সব প্রশ্নের জবাবে তিনি চুপ হয়ে গেলেন।

তবে অফিসে কেঁদেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তাবাসসুম নামের এক আসামি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘তোমার কি মনে হয় আমরা কেঁদেছি?’ তাহলে আপনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না- এমন প্রশ্নের জবাবে তাবাসসুম বলেন, ‘না, আমরা কমিটিকে যা বলার বলেছি। . ‘

তদন্ত কমিটির ডাকে দুপুর ১২টায় ক্যাম্পাসে আসেন ফুলপরী খাতুন। পরে তাকে প্রধান ফটক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনে রেবাকে মণ্ডল কার্যালয়ে নিয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. একই সঙ্গে কার্যালয়ে তদন্ত কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে ভিকটিম ও আসামিকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকাল ৪টায় উভয় পক্ষই কার্যালয় থেকে বের হয়। কার্যালয় থেকে বের হয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি।

উল্লেখ্য, গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে হলের মধ্যেই ফুলপরী খাতুনকে নির্মম নির্যাতনের পর বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ওই ছাত্রলীগ নেত্রী। পরবর্তীতে এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন।

Related Articles

Back to top button