Countrywideদৈনিক খবর

সুনামগঞ্জ থেকে বগুড়া ডেকে আনে স্বামী পরিত্যক্তা তিন সন্তানের জননী, ৯৯৯ কল দিয়েও রেহায় পায়নি জয়নাল

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেম করে প্রতারণার শিকার হয়েছে এমন লোকের সংখ্যা কম নয়। কখনো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেমের মাধ্যমে হারিয়েছেন অর্থ সম্পদ, আবার কখনো নষ্ট হয়েছে অনেক জীবন।  তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের ১৭ বছর বয়সী জয়নালের সাথে।

পরিচয় ফেসবুকে তারপর প্রেম। এর ভিত্তিতে স্বামী পরিত্যক্তা তিন সন্তানের জননীকে সুনামগঞ্জ থেকে বগুড়া ডেকে এনে বিয়ে করে জয়নাল নামের এক যুবক। শনিবার বগুড়ার আশেকপুর ইউনিয়নের পারতেখুর এলাকাবাসী ঘটনাটি জানায়।

কিশোর জয়নাল (১৭) সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাজারগাও গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে। সখিনা বেগম (৪০) নামে একজন বিধবা, তার ১২, ৯ ও ৬ বছর বয়সী ছেলে ও মেয়ে রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সখিনার আচরণে অসন্তুষ্ট হয়ে কিছুদিন আগে সখিনার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকে সে বিভিন্ন ছেলেদের সাথে ফেসবুক ও ভিডিও কলে ফ্লার্ট করতো। ১০ থেকে ১৫ দিন আগে সখিনা ছেলেটিকে ভালোবেসে ডেকে নেয়। এরপর জোরপূর্বক দুই লাখ টাকার কাবিন নিয়ে বিয়ে করানো হয়।

কাবিননামায় দেখা যায়, আশেকপুরের কাজী ছাড়াও শাজাহানপুর উপজেলার খরনা ইউনিয়নের বীরগ্রামের কাজী মুজাহিদকে বিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গীহীন নাবালিকার ছেলের সাথে বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী বলেন, তিনি কিছুই জানেন না।

তার সঙ্গে ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানান সখিনা। বগুড়ায় আসতে বলায় তিনি উপজেলার মাঝিরা বন্দরে আসেন। কিছু লোক সেখান থেকে এনে বিয়ে পড়ায়।

কিশোর জয়নাল জানান, সখিনার সঙ্গে তার মোবাইলে পরিচয় হয়। আমি জানি না সে তিন সন্তানের মা। সে আমাকে প্রায়ই বগুড়ায় বেড়াতে যেতে বলে। পরে কয়েকজন তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়। আমি এখন বাড়ি যেতে চাই কিন্তু যেতে দেব না।

এ ঘটনায় ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা হলে শাজাহানপুর থানার এসআই সাদ্দাম হোসেন, এসআই শামীম আহমেদ ও এসআই আবদুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু তারা কিশোরকে উদ্ধার না করেই ফিরে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, বিয়ে হয়েছে বলে কিছুই করার নেই।

বগুড়া আদালতের আইনজীবী রহিমা খাতুন মেরী বলেন, দেশের আইন অনুযায়ী ছেলেদের বিয়ের বয়স ২২ বছর এবং মেয়েদের ১৮ বছর। এক্ষেত্রে ছেলেটি যুবক ও নাবালক। তাই আইন অনুযায়ী এই বিয়ে অবৈধ। তিন সন্তানের মা অবশ্যই নাবালিকা। একজন নাবালক ছেলেকে প্রলুব্ধ না করলে সে নিশ্চিতভাবেই এতদূর পায়নি। তাই ছেলেটিকে উদ্ধার করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করে বিচারের মুখোমুখি করা প্রয়োজন।

তবে জয়নালের বয়স ১৭ বছর হওয়ায় বিয়েটাকে অবৈধ বলে জানিয়েছেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।  অন্যদিকে অভিযুক্ত ওই নারীর বয়স ৪০ বছরের ঊর্ধ্বে এ বিষয়গুলোকে মাথায় নিয়ে এই দম্পত্যিকে বিচারের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এলাকাবাসী। 

Related Articles

Back to top button