Countrywideদৈনিক খবর

ব্যাংক ঋণের সুদের হার বাড়ানোর সিন্ধান্ত চুড়ান্ত, জানা গেল কত শতাংশ বৃদ্ধি পাবে

বর্তমান আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজার পরিস্থিতির কারণে সুদের হারও ব্যাপকভাবে ওঠানামা করছে। ফলে নির্দিষ্ট সুদের হার দিয়ে মুদ্রাবাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না ব্যাংকগুলো। সেজন্য সুদের হার পরিবর্তন করতে হবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী ঋণের সুদহার সীমা মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলস্বরূপ, ব্যাংকিং খাত শীঘ্রই 9-6 ফিক্সড রেট ক্যাপ সিস্টেম থেকে বেরিয়ে আসবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ঋণের সুদের হার সীমা তুলে নেওয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে বাড়তি সুদ নেওয়ার প্রক্রিয়ায় ‘রেফারেন্স রেট’ নির্ধারণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি মাসে যা ট্রেজারি বিল এবং বন্ডের 6 মাসের গড় সুদের হার বিবেচনা করে স্থির করা হবে। পরবর্তী মুদ্রানীতিতে বিস্তারিত জানানো হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত হারে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সুদ যোগ করে ঋণ দিতে পারে। গত রোববার (২ এপ্রিল) ব্যাংকারদের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার নির্ধারণের এই করিডোর পদ্ধতির নামকরণ করছে ‘স্মার্ট’ (স্বল্প মেয়াদী মুভিং এভারেজ)। তিনি বলেন, আগামী মুদ্রানীতিতে বিস্তারিত জানানো হবে। তিনি উল্লেখ করেন যে এটি ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। তিনি বলেন, “যদি দেখা যায় যে গড় সুদের হার ১ শতাংশ বা তার নিচে চলে গেছে, বা এমন পর্যায়ে রয়েছে – যা বাজারমুখী নয়, তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার বুঝে সুদের হার নির্ধারণ করবে এবং রেফারেন্স রেট ঘোষণা করবে।”

নতুন এই ব্যবস্থা চালু হলে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদের হারের ওঠানামার কারণে প্রতি মাসে গ্রাহকদের ঋণের সুদের হারে পরিবর্তনের সম্ভাবনার কথা বলছেন ব্যাংকাররা।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার 12 মার্চ বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে ফিলিপাইনের উদাহরণে সুদের ‘করিডোর’ ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। বাজারভিত্তিক ‘রেফারেন্স রেট’ প্রবর্তনের বিষয়টি দেশে তখন সামনে আসে, যার ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ ও বিনিয়োগের সুদের হার নির্ধারণ করবে।

প্রসঙ্গত, 2020 সালের এপ্রিল থেকে, সরকার স্বল্প সুদের হারে ব্যবসায়ীদের টাকা দেওয়ার জন্য ক্রেডিট কার্ড ছাড়া ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ 9 শতাংশ সুদের হার সীমা নির্ধারণ করে। সম্প্রতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে যে ভোক্তা ঋণের অধীনে বিতরণ করা গাড়ি এবং ব্যক্তিগত ঋণে 12 শতাংশ পর্যন্ত সুদ নেওয়া যেতে পারে। তবে লিখিতভাবে কোনো নির্দেশনা না দেওয়ায় অধিকাংশ ব্যাংক তা বাস্তবায়ন করেনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী জুলাই থেকে বন্ডের গড় সুদের হারের সঙ্গে ব্যাংক রেট যোগ করে সুদের হার পদ্ধতির নতুন পদ্ধতি কার্যকর করা হবে। এতে সুদের হার বাড়বে। এমন পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই আমানত সংগ্রহের ওপর জোর দিয়েছে অনেক ব্যাংক। কিছু ব্যাংক ইতিমধ্যেই মেয়াদি আমানতে ৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিচ্ছে। ঋণের সুদের হারও বাড়ছে। যদিও ঋণের সুদের হারের সীমা বহাল রাখার দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৬ মাসের ট্রেজারি বিলের ক্ষেত্রে সুদের হার নির্ধারণ করা হবে। ট্রেজারি বিলের সুদের হারে অতিরিক্ত ৩ শতাংশ যোগ করা যেতে পারে। বর্তমানে, 6 মাসের ট্রেজারি বিলের সুদের হার 6.99 শতাংশ। ফলে এখন পর্যন্ত ঋণের সুদ সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ হতে পারে। এই পদ্ধতির নাম দেওয়া হয়েছে শর্ট টার্ম মুভিং এভারেজ বা স্মার্ট। তবে এটিও এক ধরনের নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা বলে মনে করেন ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা। তারা বলে যে এটি বাজারে আগ্রহ ছেড়ে দেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। কিন্তু তারপরও আমানতকারীদের খুব একটা লাভ হবে না। বড় ঋণগ্রহীতারা উপকৃত হবেন।

তবে ব্যাংকাররা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত ভালো মন্দ। এনসিসি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নুরুল আমিন বলেন, ‘ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিলের সুদের হারে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সুদ নিতে পারে। তাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ফলে এটাকে খোলাবাজার বলা যাবে না, বরং মন্দের জন্য ভালো। যেমনটা হয়েছে ডলারের ক্ষেত্রে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক যে পদ্ধতিতে কাজ করতে চায় তার মাধ্যমে বাজার পরিপক্ক হলে পরবর্তীতে খোলা যাবে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের খুব বেশি লাভ হবে না। এতে শুধু বড় শিল্পপতি, ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা লাভবান হবেন না। কারণ, ব্যাংক ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে ১০ শতাংশ সুদ নিলে আমানতকারীকে দেবে ৬ শতাংশ। আর এখন মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ। আমানতকারীরা ব্যাংকে টাকা রাখতে আগ্রহী হবে না।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এখন কাঠামো তৈরির কাজ করছেন।

এই সিদ্ধান্ত, বাস্তবায়িত হলে, সুদের হার সংক্রান্ত প্রথম আন্তর্জাতিক মানের নীতি হবে।

বাজারে ৫টি সরকারি বন্ড রয়েছে। এসবের মাধ্যমে সরকার ঋণ নেয়। এগুলো হলো 2, 5, 10 এবং 20 বছরের বাংলাদেশ

প্ল্যাগণ্ট ব্যক্তিগত খাত পাসের পাস। তিনি বলেন, ‘ওই ও বিউটির মূল্যবৃদ্ধির কারণে শিল্পের বড় ধরনের বিরোধ অনেক হয়েছে।

জানা গেছে, বর্তমান ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের সুদের হার হার ৯ শতাংশ বেঁধে দেওয়া আছে। আইএমএফ আমার সীমান্ত জুনের মধ্যে প্রত্যাহার করার শর্ত চাপুন।

মধ্যবর্তী নতুন সিদ্ধান্তের ফলে আমানতের সুদের হারও বাড়বে। বর্তমানে ৪ আমানতের সুদের হার থেকে ৬ শতাংশ। সাধারণের নাম ১০ থেকে ১২ ভাগ সুদেবর আমানত নিচ্ছে। সকলের কাছে পৌঁছে দিতে সুদের হারও বেশি।

জানা গেছে, খাতে আমানত বাড়তে শুরু করেছে। আপনার থেকে আগে কথা নেওয়া টাকা আবার জমা দেওয়া হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, সব দেশেরই আমান ফিরতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য, গত ডিসেম্বরে প্রশাসন ব্যবস্থায় আমানত দেখা যাচ্ছে ২ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে ৮ নভেম্বরে আমানত ছিল ১৪ হাজার ৮৬ হাজার ৮৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে তারিখে ১৪ তারিখে ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। অবশ্য শর্তের নভেম্বরে আমানত ছিল ৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে গত ১৪ তারিখে ৯০ হাজার ৪৩ কোটি টাকা।

এই সুধের হার বাড়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে অবস্থা তবে এই সময়ে এই সিদ্ধান্ত তাদের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা দেওয়া হবে এবং এই সময়ে সুদের হার বাড়ানোর কোনও মতেই উচিৎ না।

Related Articles

Back to top button