opinionদৈনিক খবর

খালেদা জিয়াকে ডিসপ্লে করা সেই স্কুলের প্রিন্সিপালকে নোটিশ পাঠাইসে ইউএনও আজগর, দ্রুত ইউএনও থেকে ডিসি হচ্ছে সে: সায়েফ

সম্প্রতি নড়াইলে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠনে মহিয়সী নারীদের সাথে বেগম খালেদা জিয়াকে ডিসপ্লে করা নিয়ে বেঁধেছে বিতর্ক যা নানা আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে এই প্রসঙ্গ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখক সায়েফ সিরাজ। নিচে সেটি তুলে ধরা হল –

এক সময় সিভিল সার্ভিসের চাকরির বেশ নাম ডাক ছিলো।
কিন্তু সেটার একটা কারন মেধাবীরা সিভিল সার্ভিসে আসতো।
যারা শুধু তাদের কাজে আচরনে মেধার রিফ্লেকশন দেখাতো না, একইসঙ্গে ব্যক্তিত্বের একটা থ্রেশোল্ডের ওপরে থাকতো সব সময়।

যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ।
সময়ের সাথে সিভিল সার্ভিস এখন লারেলাপ্পা সার্ভিস হয়ে যাইতেসে।
স্পেশালী যেই দেশে ডেমোক্রেসী মৃত, ডিক্টেটরের পদলেহন করে ওপরে উঠতে হয়, সেখানে মেধাবী অফিসাররা মরে যায়, চাটুয়ারা ওপরে ওঠে।

বাংলাদেশ একনায়কতন্ত্রের আন্ডারে পড়ার পর থেকে এখানকার সিভিল সার্ভিস এখন লারেলাপ্পা সার্ভিস।
বলতেসিলাম নড়াইল আর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুইটা ঘটনা প্রসঙ্গে।

নড়াইলে একটা বাচ্চা মেয়ে স্কুলের যেমন খুশি তেমন সাজোতে বেগম খালেদা জিয়া সাজায় সেই স্কুলের প্রিন্সিপালকে শো কজ নোটিশ পাঠাইসে ইউএনও আজগর আলী।
লোকটা এই কাজ রাজনৈতিক প্রেশার থেকে করে নাই – এটা আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন।
এটা তার স্বপ্রনোদিত একটা কাজ।

ইয়েস, আওয়ামী লীগের মত একটা ইতর প্রাণী সর্বস্ব দল বেগম খালেদা জিয়ার যেকোন প্রকার প্রেসেন্স নিয়ে অ্যালার্জিক আচরন করবে এটা নিশ্চিত।
কিন্তু সেটা করবে জাতীয় পর্যায়ের কিছুতে।

এই ২০ কোটি আদমের দেশে কিন্ডারগার্টেন আছে হাজার হাজার।
তার ভেতরে নড়াইলের এক চিপায় এক স্কুলে একটা ছোট বাচ্চা মেয়ে খালেদা জিয়া সাজায় তাদের কিছু যাবে আসবেনা।

এই আজগর আলী নামের ইউএনও এটা করার কারন সে জানে নিউজটা মিডিয়ায় আসলেই কেল্লাফতে।
খুব দ্রুত ইউএনও থেকে ডিসি হবে।
ওপরের নেক নজর পাওয়ার জন্যই লোকটা এই কাজ করসে।

আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি শাহগির কোন ভালো পরিবারে বড় হইসে বলে আমার বিশ্বাস হয়না।
এই দূর্মুল্যের বাজারে একটা গান গাওয়া নিয়ে একজন ছাপোষা স্কুল শিক্ষকের বেতন বন্ধ করা, তাও আবার রোজার মাসে, একমাত্র খাস ছোটলোকই এই আচরন করতে পারে।
তো এই আচরন এই ডিসি শাহগির ক্যানো করসে।
ওপরের নেক নজর পাওয়ার জন্য।

মেলোডি সাবট্র্যাক্টেড, বাস্তবের ফ্যাক্ট হচ্ছে দ্বারকানাথের নাতির লেখা এই গান বাংলাদেশবিরোধী।
এই নাতি এই গান লিখসিলো বঙ্গভঙ্গ বিরোধিতায় যেই বঙ্গভঙ্গ ছিলো পূর্ব বাংলার মানুষের ভাগ্যউন্নতির জন্য সুপার এসেনশিয়াল।

আমি আর ধর্ম কার্ড খেলতেসি না যদিও সেটা আগলী ট্রুথ।
সো বাংলাদেশ বিরোধী এই গানে আমার কিছু যায় আসেনা।
এই গানের অজুহাতে একজন কষ্টে সংসার চালানো সাধারন শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে এই ডিসি শাহগির তার নামটা নিউজে নিয়ে আসলো।

ওপরে ইশারা দিলো, আমি আপনাদের বাঙালী চেতনার বিশ্বাসী দারোয়ান।
এবার আমাকে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি করেন।
এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নবাব আব্দুল গনি রোডে ট্রান্সফার করেন।
সব ধান্দার হাটবাজার।

এগুলোকে সিভিল সার্ভিস বলেনা।
বাইদা ওয়ে, অতো দাদার জেনারেশন জাহির করতেসিনা।
আমি নিজেও আমেরিকায় ফেডারেল সিভিল সার্ভেন্ট।

একটা ডেমোক্রেসি অ্যাক্টিভ দেশে সিভিল সার্ভিসে চাকরির পূর্ন সন্তুষ্টি আমার আছে।
সেই কারনেই বাংলাদেশ লারেলাপ্পা সার্ভিসের এইসব আজগর আলী, শাহগিরদের এইসব আচরণের মূল কারনটা খুজে বের করতে পারি।
আর বাংলাদেশ লারেলাপ্পা সার্ভিস বলে সার্ভিসে থাকা জেনুইন মেধাবী অফিসারদেরকে খাটো করতেসিনা।
উইশ ইউ অল দা বেস্ট !

আপনাদের ঠিক সিদ্ধান্ত, কাজ আর আচরণের মাধ্যমে মানুষ সিভিল সার্ভিসকে আগের মতোই সমীহ করবে এই আশা করি।

সত্যিটা হচ্ছে এখনকার বাংলাদেশে সাংবাদিক, পুলিশ, অ্যাডমিন সার্ভিস, জুডিশিয়ারি, সেনাবাহিনী – কারো প্রতি মানুষ আর ভক্তি শ্রদ্ধা রাখেনা।
এটার দায় আপনাদের, মানুষের না।

Related Articles

Back to top button