জেনে রাখুনডায়াবেটিসহৃদরোগ

লাল মাংসে বাড়ে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি!!

বিশ্বজুড়ে যত রোগী ক্যান্সার আক্রান্ত হয়, তার মধ্যে আক্রান্তের হিসাবে তৃতীয় বৃহত্তম হলো কোলোরেক্টাল ক্যান্সার। কোলোরেক্টাল ক্যান্সার বলতে বৃহদান্ত্রের ক্যান্সার বোঝায় সিকাম, এসেন্ডিং কোলন, ট্রান্সভার্স কোলন, ডিসেন্ডিং কোলন, রেক্টাম ও এপেন্ডিঙ্-এর ক্যান্সার।

যাঁরা মাংস, বিশেষ করে গরু ও খাসির মাংস বেশি খান ও আঁশসমৃদ্ধ খাবার কম খান তাঁদের মধ্যে কোলন ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

আঁশসমৃদ্ধ খাবার বৃহদান্ত্রের সঞ্চালন বা পেরিস্টালসিসকে দ্রুততর করে ফলে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানগুলো কোলনের সংস্পর্শে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। ফলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কাও কমে। তৈলাক্ত খাবার, টিনজাত খাবার ও ফাস্টফুডও ঝুঁকিপূর্ণ।

সম্প্রতি এক গবেষণায় আরও পাকাপোক্ত হয়েছে এই ব্যাপার। হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিভাগের বিশেষজ্ঞ ড. ওয়াল্টার উইলেট সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন যে লাল মাংস-প্রেমীদের কোলন ক্যান্সার হওয়ার হার শতকরা ১২ ভাগ বেশি। অন্যদিকে প্রক্রিয়াজাত লাল মাংসে মৃত্যু ঝুঁকি তার চেয়েও বেশি।

ড. উইলেট গবেষণায় আরো উল্লেখ করেছেন, যারা নিয়মিত লাল মাংস আহার করেন তাদের মধ্যে ধূমপান, মদ্যপানসহ নানা বদভ্যাস গড়ে ওঠে। এতে বেড়ে যায় হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি। ড. ওয়াল্টার উইলেট-এর গবেষণা তথ্যটি সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে।

যারা সপ্তাহে পাঁচ বেলা গরু, খাসি কিংবা ভেড়ার মাংস খান, এক গবেষণণায় দেখা গেছে, তাদের কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি থাকে। এসব পশুর মাংসকে বলা হয় রেডমিট। রেডমিটকে চিকিত্সা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় অন্যতম ক্যান্সারপ্রবণ খাবার বা কারসিনোজেন।

গবেষণার প্রধান অথার হারভার্ড পাবলিক স্কুলের গবেষক অ্যানপ্যান মনে করেন, মাংসভোজীরা যদি তাদের খাদ্যতালিকায় লাল মাংসের পরিবর্তে মাত্র সপ্তাহে একবেলা মাছ অন্তর্ভুক্ত করেন তবে এ অকাল মৃত্যুর হার ৭ ভাগ কমতে পারে।

প্রক্রিয়াজাত মাংসের ক্ষেত্রে হৃদরোগ, ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে অ্যানপ্যান মনে করেন, এতে সোডিয়াম ও নাইট্রেটের কারণে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ এই কোলন ক্যান্সারেই প্রাণ হারিয়েছেন।

Related Articles

Back to top button