Politicsদৈনিক খবর

প্রথম আলো ১৭ মিনিটের মধ্যে ভুলের অবসান করেছে, একটা সরকার কতো নির্লজ্জ হলে এই চেহারা দাঁড়ায় : জোনায়েদ সাকি

দেশের দ্রব্যমূলের উর্ধগতির কারনে বিপাকে পড়ছে সাধারণ মানুষ এবং পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি তার বক্তব্যে বলেন ‘এই সরকার বাংলাদেশ ও স্বাধীনতাকে নিয়ে ঠাট্টা করতে শুরু করেছে’ মন্তব্য করে বলেন, ‘মানুষ যখন বাজারে গিয়ে চাল কিনতে পারে না, তখন আওয়ামী লীগের অনেকেই বলে যে, তাদের চেয়ে ভালো। তাদের সাথে পাকিস্তানের উদাহরণ। আওয়ামী লীগের লোকজন এখন বাজারের খারাপ অবস্থাকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সিন্ডিকেট ভাঙা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানো, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, শামসুজ্জামানকে নিঃশর্ত মুক্তি’ দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গত কয়েকদিনে সাংবাদিক শামসুজ্জামানের সঙ্গে কী হয়েছে জানেন। আমরা সবাই এখন গভীর উদ্বেগের মধ্যে আছি। সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে সবকিছু করছে। গত ২৬ তারিখে প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, ভাত-মাছ খাওয়ার কথা বলেছেন দিনমজুর জাকির হোসেন। সেখানে একটি শিশুর ছবিসহ একটি সংবাদ প্রচার হয়েছিল। প্রথম আলো ১৭ মিনিটের মধ্যে ছবি সরিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটায়। সেই খবর প্রকাশের জন্য গভীর রাতে প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়া হয়। এমনকি দিনভর তার হদিসও স্বীকার করেনি কর্তৃপক্ষ। তাকে ছেড়ে দিতে বলা হয় এবং তাকে অন্য বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। গভীর রাতে একটি মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সরকার কতটা নির্লজ্জ এই চেহারা দাঁড়িয়েছে। পুরো ব্যবস্থা ও আইনি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে তাকে গ্রেফতার করে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, “দ্রব্যমূল্যের এই বৃদ্ধির জন্য মার্কেট সিন্ডিকেট দায়ী, মানি লন্ডারিং দায়ী। সরকার এটা মানতে চায় না। সরকারের কাজ এগুলো সমাধান করা। কিন্তু সেটা না করে জনগণ ও মিডিয়া তাদের চেপে ধরেছে। গলা

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এনফোর্সমেন্ট মানে মিডিয়ার শ্বাসরোধ করা। একজন তথ্যমন্ত্রী আছেন, তিনি মিথ্যা কথা বলে সবকিছু জায়েজ করতে চান। তারা বলেন, এটা কি স্বাধীনতার ওপর হামলা, এত সহজে স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে? আমি বলতে চাই, আপনারাই ভয় দেখিয়ে স্বাধীনতার হুমকি দিচ্ছেন। যে সরকার জনগণকে কষ্টে রাখে সে স্বাধীনতার সরকার হতে পারে না। ভোট ছাড়া ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এই সরকার বিভিন্ন সময়ে নানা কথা বলে। তারা এখন সব ধরনের নির্বাচনকে ভয় পায় কারণ তারা নির্বাচনে হেরে যাবে। তারা বলেছেন, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন। মিথ্যা বলছে তারা নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করে না, আবারও র‌্যাব হেফাজতে এক নারীকে হত্যা করেছে। গুম ও খুনের ঘটনায় র‌্যাবকে সরকার ব্যবহার করেছে।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে মিডিয়ার গলা চেপে ধরতে চায়, মতিউর রহমানের মাধ্যমে সবাইকে শিক্ষা দিতে চায়। আসুন একসাথে তাদের ভয় ভাঙাই, তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। রাতের আঁধারে ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে তোলা যাবে না, আমরা এই আইন পরিবর্তন করব। এই সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার পরিপন্থী, তাই পরিবর্তন করতে হবে। সংবিধানের দোহাই দিয়ে যারা কয়েকদিন ক্ষমতায় থাকবেন তারাই জনগণকে ভয় দেখাবেন। আমাদের এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার পরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রাম। এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। মতিউর রহমান ও শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আমি এর নিন্দা জানাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল চাই। তোমার গলায় তোয়ালে জড়িয়ে দেব, সেই আন্দোলন শুরু হয়েছে।

আবুল হাসান রুবেল, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক মনির উদ্দিন পাপ্পু, বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, পপি রানী সরকারসহ সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, মাহে রমজান এর আগমনের সাথে সাথেই দেখা গিয়েছে দ্রব্যমূলের দাম কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছে এবং সেই সাথে দেখা গিয়েছে মানুষ অসীম দুর্ভোগের মধ্যে পরেগিয়েছে এই অসহনীয় দাম বৃদ্ধির কারণে। বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্ত যারা রয়েছেন তাদের জন্য এই পরিস্থিতি বেশ কষ্টের।

Related Articles

Back to top button