দৈনিক খবর

কী করেছি এসব: নিজের ব্যাটিং দেখে লিটন দাস

গতকাল ম্যাচ শেসে সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে তাকে দাঁড়াতে হলো মিনিট পাঁচেক। একের পর এক ছবি তোলার আবদার আসছে, লিটন দাসও দাঁড়িয়ে থাকলেন। যাওয়ার পথেও প্রায় একই অবস্থা। জাতীয় দলের বড় তারকা, কারণ তো এটা অবশ্যই। আরেকটা কারণ বিপিএলের শেষ দুই ম্যাচে তার ব্যাটিং। লিটনের ব্যাটিংয়ের মুগ্ধতার ব্যাপার তো নতুন নয়। বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, ইয়ান বিশপ, নাম লিখতে গেলে তালিকাটা লম্বাই হবে শুধু।

তার শট, টাইমিং, হাতে সময় নিয়ে খেলতে পারা; ক্রিকেট দর্শকদেরও টানে সবসময়ই। এবারের বিপিএলে গত দুই দিনে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ওরকম দুই ইনিংসই খেলেছেন লিটন। চট্টগ্রামের বিপক্ষে ম্যাচের পর এসে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস বলে গেছেন, ‘লিটনের ব্যাটিং দেখলে টিভির সামনে থেকে উঠা মুশকিল’। এমন প্রশংসা লিটনকে নিয়ে প্রথম কেউ করলেন, ব্যাপারটা এমনও নয়। কৌতূহল তাই জন্মালো লিটন নিজের ব্যাটিং দেখলে কেমন অনুভূতি হয়?

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা করতে লিটন থাকলেন জমাটবাধা মুখে, যেমন তিনি থাকেন সবসময়। এরপর বললেন, ‘দেখি…কিন্তু দেখে মনে হয় কী ব্যাটিং করছি…’ সংবাদ সম্মেলন কক্ষে হাসির শব্দ থামার পর লিটন বলেন, ‘একেকজনের ভিউ একেক রকম থাকে। আমার কাছে মনে হয় আরও ভালো করার সুযোগ আছে (ব্যাটিংয়ে)।’

এদিকে লিটনকে নিয়ে বলা বিখ্যাত লাইনগুলোর একটি ইয়ান বিশপের। ২০১৯ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার ইনিংস দেখে ধারাভাষ্যকক্ষে বসে তিনি বলেছিলেন, ‘লিটন দাস ইজ পেইন্টিং মোনালিসা হিয়ার ইন টনটন টুডে…’। শুনেছিলেন? লিটন এমন প্রশ্নের জবাবে এটুকু বলেছেন কেবল, ‘শুনেছিলাম মনে হয়, মনে নাই। হ্যাঁ, শুনেছিলাম মনে হয়।’

গত বছর শীর্ষ রান সংগ্রাহকদের তালিকাতে ছিলেন। বাবর আজমের ৫২ ইনিংসে ২৫৯৮ রানের পর ৫০ ইনিংসে লিটন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার পথে করেছিলেন ১৯২১ রান। তার ব্যাটে রীতিমতো রানের ফোয়ারা ছুটেছে। বিপিএলে শুরু ভালো না হলেও আগের দিন ২২ বলে ৪০ রানের পর তুলেছেন হাফ সেঞ্চুরি। এমন রান করার প্রস্তুতি আসলে কেমন?

লিটন বলেছেন, ‘দেখেন, প্রতিটা ক্রিকেটারই তো কিছু না কিছু না দিকে হার্ড ওয়ার্ক করে। অবশ্যই আমারও হার্ড ওয়ার্ক আছে। আমার মনে হয় মাইন্ড সেট-আপ ও খেলায় জড়িয়ে থাকা নিজে থেকে…। যেমন ধরেন, আপনি যখন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবেন, নিজের নামের পেছনে অনেক কিছু থাকে। পারফর্ম করতে হবে, না করলে দল থেকে বাদ পড়ার সুযোগ থাকে। মিডিয়া, ফ্যানস, এমনকি পরিবারের সদস্যরাও আপসেট থাকে খারাপ করলে।’

তিনি বলেন, ‘যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবেন, যখনই মাঠে নামি, তখনই চিন্তা থাকে- আজকে যদি নামি, একটা ইনিংস খারাপ করি, তাহলে একটা ইনিংস চলে গেল। সবাই তো ফলো করে স্ট্যাটটা, ক্রিকইনফোর যে… (প্রোফাইল) ফলো করে, ওই জিনিসটা যখন খারাপ থাকে। নিজের কাছেও দেখতে খারাপ লাগে। ওটাও সবসময় অনুপ্রাণিত করে ভালো খেলতে হবে।’

এখন মানসিক প্রস্তুতি কীভাবে নেন? এ নিয়েও কথা বলেছেন লিটন, ‘বলবো না যে হার্ড ওয়ার্ক করি না। হয়তো যতটা প্রস্তুতি দরকার, ততটাই করি। একেকজন মানুষের চিন্তা ধারা একেকরকম। কাজ, ওয়ার্ক এথিক আরেকরকম। আমার মনে হয় না আমি ওরকম (বেশি পরিশ্রমি)। আমি একটু রিল্যাক্সে থাকতে বেশি পছন্দ করি।’

তিনি বলেন, ‘ধরেন একটা যদি সিরিজ যায়, যেকোনো ফরম্যাট, বিপিএল খেলবেন; এতগুলো ম্যাচ খেললে মানসিকতার দিক দিয়ে বলেন বা যেকোনো দিকে…ব্রেইনে এফেক্ট পড়ে। আমি সবসময় যেকোনো সিরিজের পর এক দেড় সপ্তাহ বিরতি নেই। বলতে পারেন ফ্যামিলি টাইম বা যেকোনো কিছু…ক্রিকেটের বাইরে রাখার চেষ্টা করি। এরপর যখন ফিরে আসি, ওই ক্ষুধাটা থাকে।’

Related Articles

Back to top button