Countrywideদৈনিক খবর

গৃহবধূ ৫০০ টাকায় রাজি না হওয়ায় টাকার অংক বৃদ্ধি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লাভু, অশালীন ফোনালাপ ফাঁস

এবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লাভুর একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপড় চলছে। যানা যায় অসত উদ্দেশ্যে এক নারীর সাথে ফোনে অসামাজিক প্রস্তাব দেয়। ওই নারী রাজি নাওয়ায় তকে এক পর্যায়ে হুমকি দেয় লাভু।

সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান (লাভু) সিরাজগঞ্জের এক গৃহবধূর সঙ্গে তার অশালীন ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। অডিও ক্লিপে দু’জনের মধ্যে কথোপকথন শোনা যায়, ওই গৃহবধূ একটি ধর্মীয় সভায় যোগ দিতে স্থানীয় জানজালিপাড়ায় ছিলেন। এ সময় আতাউর রহমান (লাভু) ওই গৃহবধূকে ডেকে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে বাসায় আসার পরামর্শ দেন। ছেলের বউকে নিয়ে আসতেও বললেন। দুইজনই ৫০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা দেবেন বলেও স্বীকার করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

আওয়ামী লীগ নেতার ৪ মিনিট ১ সেকেন্ডের কুরুচিপূর্ণ অডিও ক্লিপ এলাকাবাসীর মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বিষয়টি দ্রুত ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

গত ৭ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। ফোনালাপ বিশ্লেষণ করে শোনা যায় লাভু মহিলার খবর নিচ্ছেন। তারপর ওই মহিলাকে সকালে লাভুর বাড়ির ওই ঘরে আসতে বলা হয়।

অর্থাৎ এই মহিলা ওই ঘরের কথা জানেন। এরপর লাভু জানায়, তার ছেলে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘুমায়। তাই সকাল ৭টার মধ্যে তাকে আসতে হবে। মহিলা আসতে অস্বীকার করলে লাভু মহিলার ছেলের বউকে আনতে বলে। একপর্যায়ে তিনি ৫০০ টাকার পর এক হাজার টাকার প্রস্তাব দেন। এ সময় ওই নারী বলেন আমার ছেলের বউ তোমার ভাইসতে বউ। লাবু তখন বলে নাটক রাখ। তিনি বলেন, ওই নারী আসবেন কি না পরে জানাবেন। ফোনালাপে আরও কিছু বাজে মন্তব্য করা হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও সলঙ্গা থানার ঝুরকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লার রহমান জানান, ওই নারী প্রায় এক মাস আগে আমাকে বিষয়টি জানান। কিন্তু এমন লজ্জাজনক ঘটনার কোনো সমাধান দিতে পারিনি। আর একজন দায়িত্বশীল নেতার এমন অডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান লাভু সব বিষয় অস্বীকার করে বলেন, আমার জীবনে এমন খারাপ ঘটনা ঘটেনি। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে। ওই মেয়ের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এসব ষড়যন্ত্রের পেছনে জিল্লোর চেয়ারম্যান মো. ভয়েস রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কণ্ঠটি আমার কিন্তু কিভাবে এডিট করা হয়েছে তা আমি জানি না।” তিনি আরও বলেন, সলঙ্গা বাজারে জনগণের স্বার্থে জিল্লুর চেয়ারম্যান মার্কেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে আমাকে হেয় করার জন্য তিনি এমন করছেন। এমনকি আমার লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে জেলে পাঠানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, থানা আওয়ামী লীগ নেতা লাভু শুধু এই গৃহবধূ ও তার ছেলের বউ নয়, এলাকার অনেক নারীর ইজ্জত কেড়ে নিয়েছেন। এরকম আরো অডিও আছে তার অনৈতিক কর্মকান্ডের। মানুষ ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলে না। এ ধরনের কুৎসিত ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে বহিষ্কার করা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ তালুকদার বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। কিন্তু একজন দায়িত্বশীল নেতার মুখ থেকে এমন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য সত্যিই দুঃখজনক।

তবে এই বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা কোন মন্তব্য করেনি। বিষটি নিয়ে সোরগোল শুরু হওয়ার পর থেকে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা তার সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ। তার সাথে যোগাযোগ করতে পারলে আসল ঘটনা সম্পর্কে অবগত হওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন সংবাদকর্মীরা।

Related Articles

Back to top button