দৈনিক খবর

দেশে চিকিৎসা বিষয়ক ‘ফতোয়া বোর্ড’ গঠনের দাবি

দেশের চিকিৎসা সেবায় দৈনন্দিন নতুন নতুন বিজ্ঞানের সংযোজন ঘটছে। সেইসঙ্গে ধর্মীয় বিধিবিধান থেকে ভিন্ন কিছু চিকিৎসা পদ্ধতিও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও আলাদা ‘ফতোয়া বোর্ড’ গঠনের দাবি ধর্মীয় ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের।

শুক্রবার (৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মগবাজার কনভেনশন সেন্টারে র‍্যামফিট আয়োজিত ‘রোজায় চিকিৎসা সংক্রান্ত বিধিবিধান’ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সমন্বিত ফতোয়া বোর্ড হওয়া জরুরি। কারণ চিকিৎসা পেশা সংক্রান্ত ইসলামি বিধিবিধানের অনেক কিছুই পূর্বের যুগের বিধিবিধান থেকে ভিন্ন।

আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল শিরাপথে গ্লুকোজ স্যালাইন বা রক্ত নিলে রোজা ভেঙে যায় কিনা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন র‍্যামফিটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ডা. শরিফুল ইসলাম, শারীয়া উপদেষ্টা ডা. মুফতি ইসমাইল হোসেন, সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির চিফ একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর ডা. আশরাফুল আলম।

ডা. শরিফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসা পেশা সংক্রান্ত ইসলামি বিধিবিধানের অনেক কিছুই পূর্বের যুগের বিধিবিধান থেকে ভিন্ন। ইসলামি আইনের পরিভাষায় এমন জ্ঞানকে ফিকহুন নাওয়াযিল বলা হয়। অঙ্গ দেওয়া-নেওয়া, লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া, ব্রেইন ডেড রোগী থেকে অঙ্গ নেওয়া যাবে কিনা, সারোগেসি, লিঙ্গ পরিবর্তন ইত্যাদি। আজ থেকে এক হাজার বছর পূর্বে এ সমস্ত বিষয় ছিল না।

তিনি বলেন, চিকিৎসা বিদ্যার উন্নতির সঙ্গে নতুন নতুন বিষয় ইসলামি বিশেষজ্ঞদের (মুফতি) কাছে আসছে। এ সমস্ত বিষয় নিয়ে কাজ করার জন্য সারা বিশ্বে বিভিন্ন ইসলামিক প্রতিষ্ঠান আছে। যেমন- ইসলামিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ফর নর্থ আমেরিকা (ইমানা), ব্রিটিশ ইসলামিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিমা), মুসলিম ডক্টরস নেটওয়ার্ক ফর ইন্দোনেশিয়া (মুকিসি), ফেডারেশন অব ইসলামিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (ফিমা)। এছাড়া এ বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা এবং সারা বিশ্বব্যাপী সে জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আল বালাঘ একাডেমি। যার পরিচালক একজন ডাক্তার, মুফতি এবং দেওবন্দি মাসলাকের অনুসারী। আমাদের বাংলাদেশেও এমন একটা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা থেকেই র‍্যামফিটের যাত্রা শুরু।

এসময় ডা. মুফতি ইসমাইল হোসেন চিকিৎসা পেশা সংক্রান্ত ইসলামি বিধিবিধান প্রত্যেক ডাক্তারের জন্য জানার গুরুত্ব উপস্থাপন করে বলেন, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী (রা) বলেছেন, ‘প্রত্যেক পেশাজীবীর জন্য তার পেশা সংক্রান্ত ইসলামি বিধান জানা ফরজে আইন, যাতে করে সে হালাল-হারাম থেকে অনায়াসে বেঁচে থাকতে পারেন।’ এছাড়াও উমার (রা) বলেন, ‘তোমাদের মাঝে কেউ যেন ব্যবসার ইসলামি বিধিবিধান না জেনে আমাদের বাজারে কেনাবেচা করতে না আসে। তা না হলে সে অভিশপ্ত রিবায় জড়িয়ে পড়তে পারে।’

সভায় বক্তারা চিকিৎসকদের এবং সাধারণ মানুষদের রোজা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে চিকিৎসক সম্পর্কিত বিধিবিধানগুলোর ব্যাপারে সবার সচেতন হবার আহ্বান জানান।

Related Articles

Back to top button