দৈনিক খবর

পেঁয়াজের বীজ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা

বাজারদর ভালো থাকায় পেঁয়াজের বীজ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন জেলার স্থানীয় কৃষকরা। আমদানি নির্ভরতা কমাতে মেহেরপুরে সুখসাগর পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করে সফল হয়েছেন কৃষকরা। আগে আমদানি করা পেঁয়াজের বীজ রোপন করতে হতো। মৌসুম আসলেই বীজের জন্য অপেক্ষা করতে হতো। সেই সুযোগে কিছু অসাধু ব‍্যবসায়ী কৃষকদের কাছে নিম্নমানের বীজ বিক্রি করে কৃষিতে ক্ষতি করার চেষ্টা করতো। এতে কৃষকরা বিপর্যয়ের মুখে পড়তেন।

বর্তমানে কৃষি নির্ভর মেহেরপুর জেলার সদর ও মুজিব নগর উপজেলায় বিগত পাঁচ বছর যাবত সুখসাগর পেঁয়াজের চাষ করছেন সেখানকার চাষিরা। এই এলাকাগুলোতে আরও বেশ কয়েকটি জাতের পেঁয়াজ চাষ ও বেশ জনপ্রিয় তাদের মধ‍্যে অন‍্যতম তাহেরপুরি, বারি ৪, নাসিকা রেড ও ফিপটি। ফলে খরচের তুলনায় বেশি লাভবান হওয়া যায় এ সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষে। তবে আকারে বড় অধিক ফলন ও বীজ উৎপাদনের পাশাপাশি পেঁয়াজ ও পাওয়ায় এক খরচে দুই ফলন।

কৃষকদের মতে, নিজেদের উৎপাদিত পেঁয়াজের বীজে ঝুঁকি কম থাকে, ফলনও ভালো হয়। আর উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় অধিক মুনাফা পাওয়া যায়।

জেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ২৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে, যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫ হাজার ৬০০ টন। এটি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের রাজধানীসহ বিভিন্ন বাজারে রপ্তানি করা হবে।

মুজিব নগর গ্রামের কৃষক জাহিদ হাসান বলেন, পেঁয়াজের বীজের সংকট দেখা দিলে অনেক বেশি টাকা দিয়ে বীজ কিনতে হয়। আর নিজেরা উৎপাদন করলে বিঘাপ্রতি প্রায় ৮০-৯০ কেজি বীজ পাওয়া যায়। আমাদের স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি বীজ ২৫০০-৩০০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

একই এলাকার পেঁয়াজ চাষি রাজিবুল বলেন, সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ আবাদ করলে একসঙ্গে দুই ফসল পাওয়া যায়। প্রতি বিঘায় ৩৫-৪০ মণ পেঁয়াজ পাওয়ার পাশাপাশি বীজও পাওয়া যায়। শুধু বীজ নয়, ফুল থেকে বীজ সংগ্রহ করার পর গাছ থেকে পেঁয়াজও পাওয়া যায়।

মেহেরপুর সদর এলাকার চাষি রশিদ বলেন, আগে বাজার থেকে সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের বীজ কিনে এনে প্রতারিত হয়েছি। মাঠে বীজ বপণের পরে কোনো ফলনি পাইনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, মেহেরপুরের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন‍্য বেশ উপযোগী। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই পেঁয়াজ সরবরাহ তরা হবে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের চাষের পরামর্শের পাশাপাশি প্রনোদণাও দেয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ২৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে, যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫ হাজার ৬০০ টন।

Related Articles

Back to top button