দৈনিক খবর

যেখানে প্রতিদিন বিক্রি হয় কোটি টাকার মাছ!

গত বছরের তুলনায় ৫-৭ শতাংশ মাছের উৎপাদন বেড়েছে। এই হাওরের মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যায়। বিক্রি হয় কোটি কোটি টাকার মাছ। এবছর এখনো মাছ ধরা শেষ না হলেও গত বছরের তুলনায় ৪ হাজার টন মাছ বেশি পাওয়া যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। দেশের ৪টি মাদার ফিসারিজের অন্যতম হলো হাকালুকি হাওর। প্রতি বছরই এই হাওরের মাছের উৎপাদন বড়ে। ব্যতিক্রম হয়নি এবছরও।

পূর্বে এ হাওরে ছিল ২৩৮টি বিল, বর্তমানে রয়েছে প্রায় ২০০টি। অর্থাৎ ৩৮টি বিল ইতোমধ্যে ভরাট হয়েছে অথবা ছোট হওয়ায় অন্য বিলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। বিলের পাড়ে অস্থায়ী নিলাম কেন্দ্র স্থাপন করেছেন ইজারাদাররা। সেখানে ভোর থেকে ব্যবসায়ীরা মাছ কেনার জন্য ভিড় করছেন। ইজারাদারদের অধীনে জেলেরা সারাদিন বিলে জাল ফেলে মাছ ধরছেন। ছোট ও বড় মাছ আলাদা করে বিক্রি করা হচ্ছে ঘাটে। এতে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার মাছ বিক্রি হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপর সেই মাছ নৌকায় করে ঘাটের নিলাম কেন্দ্রে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।

হাকালুকি হাওর ঘুরে দেখা যায়, হাওরের বিভিন্ন বিলে মাছ ধরার উৎসব চলছে। জেলেরা বিভিন্ন সাইজের মাছের পাশাপাশি ২০-৩০ কেজি ওজনের মাছও ধরতে পারছেন। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে মাছ ধরা। সেই মাছ ঘাট থেকে চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের বন্যার পর থেকে হাওরে মাছ উৎপাদনের রেকর্ড হয়। সে বছর ১৭ হাজার টন মাছ উৎপাদিত হয়। তারপর কিছুটা কমে গেলেও ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ৪৮ হাজার ১১২ টন মাছ উৎপাদন হয়। চলতি বছর হাওরে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার টন এবং জেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫৩ হাজার ১০৯ টন নির্ধারণ করা হয়েছে।

স্থানীয় জেলেরা বলেন, হাওরে বড় বড় রুই, বোয়াল, আইড়, কমন কার্প, মৃগেল মাছ বেশি হলেও অন্য জাতের দেশি মাছও ধরা পড়ছে। এছাড়াও চাপিলা, টেংরা, মলা ও চিংড়িসহ বিভিন্ন জাতের প্রচুর ছোট মাছও ধরা পড়ছে। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী ও কমিশন এজেন্ট নিরঞ্জন ঘোষ বলেন, আমি সারাদেশে হাকালুকি হাওরের মাছ বিক্রি করে থাকি। মাছের দাম বিভিন্ন সাইজ ও জাত অনুযায়ী ৪০০-১৫০০ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুহম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ২০২২ সালের সিলেটের বন্যার কারণে হাওরে মাছ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা হাওরে মাছ বৃদ্ধিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহন করেছি। আর এই মৌসুমে ৫৩ হাজার ১০৯ টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় বেশি। গত অর্থ বছরে মৌলভীবাজারে ৫২ হাজার ৩২৫ টন মাছ উৎপাদন হয়েছিল।

Related Articles

Back to top button