দৈনিক খবর

আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব

অবশেষে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে। আজ রবিবার ১৫ জানুয়ারি সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে মোনাজাত শুরু হয়। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়ের আহমেদ। দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে মোনাজাত শেষ হয়। এর আগে আজ ফজর নামাজের পর থেকে বয়ান শুরু হয়। বয়ান শুরু করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। হেদায়েতি বয়ানের পর পরই শুরু করা হয় আখেরি মোনাজাত।

এরপর আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইলের শুরা সদস্য ক্বারী মোহাম্মদ জুবায়ের। মোনাজাতে মুসলিম বিশ্বের কল্যাণ ও শান্তি চেয়ে লাখো মুসল্লি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মাহফুজ জানান, আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাত থেকেই ইজতেমাস্থল টঙ্গীর তুরাগ নদের তীর অভিমুখে মানুষের ঢল নামে। সকাল ৯টার দিকে ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শীত-ধুলো-বালি উপেক্ষা করে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, কার, ট্যাক্সি ও অন্যান্য যানবাহন রেখে হেঁটেই মুসুল্লিরা ছুটে যান ময়দানের দিকে।

মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে বিমান বন্দর থেকে বোর্ডবাজার-গাজীপুরা-টঙ্গী-আশুলিয়াসহ বিভিন্ন সড়ক মুসুল্লিতে একাকার হয়ে যায়। যে দিকেই চোখ যায় শুধু পাঞ্জাবি-টুপি পরা মানুষ আর মানুষ। ইজতেমা মাঠ বিস্তৃত হয়ে পড়ে গোটা মহাসড়ক, অলিগলি থেকে শুরু করে বাড়ি-ঘরের ছাদ সর্বত্রই ছিল মুসল্লি। মোনাজাতে অংশ নিতে অনেকে ইজতেমার মূল ময়দানে ঢুকতে না পেরে পত্রিকা, পাটি, চট, জায়নামাজ, পলিথিন বিছিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন মুসল্লিরা। অনেকেই আবার মোবাইল ফোনে দূর-দূরান্ত থেকে মোনাজাতে শরিক হন।

মূল ইজতেমা ময়দানে তাদের বসার কোনও ব্যবস্থা না থাকায় তারা ময়দানের বাইরে খালি জায়গায়, কলকারখানা ও বসতবাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা গেছে। টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান নেন শতাধিক নারী। কারোনা মহামারির সময় পেরিয়ে একত্রে আবারও সমবেত হতে পারায় মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন বারবার। তাদের মধ্যে নেই ভেদাভেদ ও বৈষম্য। সরেজমিন দেখা গেছে, ভোর ৪টা থেকে মুসল্লিরা আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ইজতেমা ময়দানের দিকে ছুটে যাচ্ছেন। অনেক মুসল্লি পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করেছেন।

এদিকে আখেরি মোনাজাতে নিরাপত্তার বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, সাদা পোশাকে মুসল্লিদের বেশে পুলিশ মোতায়েনসহ ১০ হাজার পুলিশ ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় রয়েছে। তারা আখেরি মোনাজাতের পর মুসল্লিদের বাড়ি ফেরা পর্যন্ত থাকবে। খুব দ্রুত ও নিরাপদে মুসল্লিরা যেন ময়দান ত্যাগ করতে পারে সে জন্য বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহনের ব্যবস্থা রয়েছে। এদিকে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি। মাওলানা সাদ কান্ধালভীর অনুসারীরা দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন।

Related Articles

Back to top button