দৈনিক খবর

বিদেশে রপ্তানি হওয়ায় লাভবান টমেটো চাষিরা

এখান থেকে প্র্রায় ১০০ টন টমেটো বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। চলতি বছর কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত চাষিরা উপজেলা কৃষি বিভাগের তদারকিতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সবজি উৎপাদন শুরু করেছে। বর্তমান বাজারে টমেটোর দাম কমতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই ১০০ টন টমেটো বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা খুশি। টমেটো চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছেন মেহেরপুরের গাংনীর চাষিরা।

চলতি বছর এ অঞ্চলে ৬০ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদেশে টমেটো রপ্তানি শুরু হয়েছে। ঢাকার ফারমার্স অ্যাগ্রো প্রসেসিং প্রতিষ্ঠান গাংনীর কৃষকদের সাথে সমন্বয় করে বিদেশে টমেটোর রপ্তানি করছেন। কৃষকের আন্তর্জাতিক মানের টমেটো উৎপাদন থেকে বিদেশে রপ্তানি পর্যন্ত কৃষি বিভাগ তদারকি করছেন। এখানকার টমেটোর চালান মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব ও তাইওয়ানে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বাঁধাকপি ও ফুলকপিসহ সবজির গুণগত মান নিরূপণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

সবজি চাষের শুরুতেই ফারমার্স এগ্রো প্রসেসিংয়ের কর্মকর্তারা ও কৃষি অফিস কৃষকদের সঙ্গে সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুণগতমান ধরে রাখতে কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকে। এতে কৃষকদের ব্যয় কমছে এবং লাভ বাড়ছে। কৃষকের উৎপাদিত টমেটো পরিবহন করতে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের গাড়ি সরাসরি মাঠে চলে যাচ্ছে।

গাংনী পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের কৃষক মানিক বলেন, প্রথম দিকে টমেটোর ভালো দাম ছিল। কিন্ত আস্তে আস্তে দাম কমতে থাকে। বর্তমানে বাজারে ১ কেজি টমেটো ৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেখানে ফারমার্স অ্যাগ্রো প্রসেসিং প্রতিষ্ঠান সরাসরি মাঠ থেকে ১৪ টাকা অর্থাৎ দ্বিগুণ মূল্যে কিনে বিদেশে রপ্তানি করছেন। আমাদের চাষ করা টমেটো বিদেশে যাচ্ছে এটা ভেবেই ভালো লাগছে। স্থানীয় আরো কয়েকজন কৃষক মানিকের মতো একই কথা বলেছেন।

গাংনী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহায়তায় উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন সাহারবাটি, বামন্দী ও মটমুড়ায় প্রায় অর্ধ শতাধিক কৃষক কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের আওতায় টমেটো উৎপাদন করে লাভবান হয়েছেন।

জানা গেছে, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মাফিক প্রতি কেজিতে ৮-১০ পিছ টমেটো রপ্তানি করা হচ্ছে। মাঠ থেকে সরাসরি টমেটো সংগ্রহ করে তার রপ্তানি করার সিদ্ধান্তে কৃষকরা খুশি। এতে দেশের অর্থনীতি আরো আরো সমৃদ্ধ হবে। আগামীতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে সব ধরনের সবজি বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহায়মেন আক্তার বলেন, বিদেশে সবজি রপ্তানি করার লক্ষ্যে মানসস্মত সবজি উৎপাদনে আমরা মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং করেছি। কৃষকদের আন্তর্জাতিক মানের সবজি উৎপাদনের ব্যবস্থাপনা ও টেকনিক্যাল বিষয়ে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশের উৎপাদিত সবজি বিশ্ববাজারে ব্যাপক পরিচিতি পাবে বলেও মনে করেন ওই কৃষি কর্মকর্তা। স্থানীয় বাজারে যখন বাঁধাকপির দাম কমে যাচ্ছে তখন রপ্তানি শুরু হওয়ায় কৃষকরা আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হচ্ছেন। আশা করছি আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে সবজি উৎপাদন ও বিদেশে রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে।

Related Articles

Back to top button