দৈনিক খবর

গুলশানে অগ্নিকাণ্ড: নিজের জামা খুলে পাইপের ফুটো বন্ধ করে পানি রক্ষার প্রচেষ্টা যুবকের

গতকাল রাতে গুলশান-২ নম্বরে একটি বহুতল ভবনে আগুনের ঘটনার সময় দেখা যায়, নিজের জামা খুলে পাইপের ফুটো বন্ধ করে পানি রক্ষার প্রচেষ্টা করে এক যুবক, যেন পানির অভাবে কোন প্রাণ না হারায়। এর ফলে প্রশংসায় ভাসছেন সেই যুবক। এদিকে আগুনের ঘটনার সময় প্রত্যক্ষ করছিলেন মো. সাইফুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, ‘আগুনের তাপ, বেলকনিতেও জায়গা নাই। তখন মানুষগুলো বাঁচার জন্য চেষ্টা করছিল। দেখলাম, চারটা লোক আমার সামনে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে গেছে। আগুন যখন বেশি ছড়াচ্ছিল তখন মানুষ ওপরের দিকে উঠছিল। আর নিচে যারা ছিল তারা বের হয়েছে।’

এদিকে গুলশান-২ নম্বরে গত রাতে একটি বহুতল ভবনে আগুনের ঘটনার সময় তা প্রত্যক্ষ করছিলেন মো. সাইফুল ইসলাম সেলিম। সেই আগুন নিভেছে, তবে তার আগে একজন নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে ঘটনাস্থলে এলেন সেই প্রত্যক্ষদর্শী মো. সাইফুল। যারা লাফ দিয়েছিলেন তারা বেঁচে আছেন কি না তা জানতে। এ সময় সাংবাদিকদের কথাগুলো বলেন তিনি।

তিনি বলেন, সন্ধ্যায় আমি এদিকে (গুলশান) একটি কাজে এলাম। এসে দেখি ভবনটিতে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসেছে। প্রথমে আগুনটা এত বেশি ছিল না। তখন ৯-১০ জন লোক নয় তলার বেলকনিতে আসে। তারা মোবাইলের ফ্ল্যাশ দিয়ে ডাকছিল। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তখন যায়নি, আমাদেরও ঢুকতে দেয়নি। পরে ফায়ার সার্ভিসসহ আমরা পাশের একটি তিনতলা ভবনে যাওয়ার কথা বলি। কিন্তু সেই ভবনে তালা দেওয়া ছিল।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী মো. সাইফুল বলেন, তখন আমরা জোর করে লাথি দিয়ে দরজা খুলেছি ভবনের। তাদের বলেছি ফায়ার সার্ভিসকে ঢুকতে দেন। তখন দেখলাম আগুন অনেক ছড়িয়ে পড়েছে। ভেতরে মনে হয় এসি বিস্ফোরণ হচ্ছে। আগুনের তাপ, তখন মানুষগুলো বাঁচার জন্য চেষ্টা করছিল। চারটা লোক আমার সামনে লাফ দিয়ে পড়ে গেছে।

এই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, আগুন যখন বেশি ছড়াচ্ছিল তখন মানুষগুলো ওপরের দিকে উঠেছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রথমে পানি পাচ্ছিলেন না। পরে পাশের অন্য একটি বিল্ডিং থেকে আমরা পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাসাটা আটকে না রাখলে আগুনটা এত ছড়াতো না। আর চারটা মানুষও লাফ দিতো না।

এর আগে গতকাল রবিবার ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ৫৯ মিনিটের দিকে গুলশান-২ নম্বরের ১০৪ নম্বর রোডে ১২ তলা আবাসিক ভবনে আগুন লাগে। এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে রাত ১১টার দিকে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আর কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

Related Articles

Back to top button