Countrywideদৈনিক খবর

আমরা ভেবেছিলা হুজুর খুব ভালো মানুষ একি এখন দেখি হালায় পরকীয়া করে, এইসবও করে

দুই মাস আগে বাড়ি ভাড়া নিতে আসে এক  দম্পতি।  কর্তাকে হুজুরদেখে বাড়িওয়ালা ঘর ভাড়া কমিয়ে রাখে। তারা কখনো কল্পনাও করতে পারেনি এই হুজুরে এমন একটি কান্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারে।  এসব বিষয় নিয়ে বাড়িওয়ালা বলেন, হুজুরকে দেখে, কম দামে একটা বাসা ভাড়া দিয়েছি। আরে সেই হুজুর নাকি বাউরে কেরোসিন ধইলা মা/?রার চেষ্টা করছিল। হুজুর সাব বউয়ের শরীরে আ/?গুন লা/?গিয়ে ঘরে তালা মেরে পালিয়ে গেছে।

গভীর রাতে যে বাড়িতে স্ত্রীকে নি/?র্যাতন ও খু/?নের চেষ্টার ঘটনা ঘটে সেই বাড়ির মালিক রেজাউল হক সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে কথা বলছিলেন।

তিনি জানান, শনিবার বিকেল ৩টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার নবীনবাজারের আনসার রোড এলাকার বয়রাশালায় তার ভাড়াটিয়া মাওলানা শরীফ মাহমুদ তার স্ত্রী খুশি আক্তারের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আ/?গুন ধরিয়ে দেয়। তারপর ঘরে তালা দিয়ে বাইরে থাকে। পরে অন্য ভাড়াটিয়ারা তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে খবর দেয়।

তিনি বলেন, ‘স্থানীয় মাতব্বর নিজাম উদ্দিনের কথায় হুজুরের কাছে বাসা ভাড়া দিয়েছি। হুজুর এখানে দুই মাস ধরে আছেন তার এক মাসের ভাড়া এখনো বকেয়া আছে।

রেজাউল হক ইমামের চরিত্র দেখে বিস্মিত হন। তিনি বললেন, আমি ভেবেছিলাম জনাব সাবের একজন ভালো মানুষ, কিন্তু তিনি ভালো নন। আমি শুনেছি যে হুজুর পরকীয় করে। বউ পিটায়। আমি ভাবতে পারছি না। আমি তাকে আমার বাড়ি থেকে  তাড়ায়ে দিছি।

রেজাউলের বাড়ির পাশের ঘরের ভাড়াটিয়া গার্মেন্টস কর্মী কল্পনা রানী সরকার বলেন, “রাতে আ/?>গুন লেগেছে। গিয়ে খুশির মুখে পানি ঢালুন। দরজায় তহন হুজুর সাব দাঁড়িয়ে ছিলেন। তারপর দেহি হুজুর ভাগাভাগি করছেন।”

যৌতুক না পেয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে জোরে সাউন্ড বক্সে ওয়াজ বাজিয়ে নির্যাতন করে খুশী আক্তারের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মাওলানা শরীফ মাহমুদের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে মেয়েটির বাবা হাসেন আলী বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

নির্যাতনের শিকার খুশি আক্তারের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বদলগাড়ি গ্রামে।

খুশির পরিবার জানায়, ২০১৯ সালের ১২ জুন গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় এলাকায় মাওলানা শরীফ মাহমুদের সঙ্গে খুশির বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীপুর চলে যান শরীফ। সেখানে তিনি স্থানীয় ইয়াকুব আলী জামে মসজিদে ইমামতি শুরু করেন।

খুশির স্বজনরা জানায়, আর্থিক দারিদ্র্য ও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে শরীফ বেশ কিছুদিন ধরে তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। গত শনিবার রাতে শরীফ তার স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এ সময় শরীফ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি উত্থাপন করায় মারামারি শুরু করে।

এরপর রাত ৩টার দিকে সাউন্ড বক্সে জোরে ওয়াজ বাজিয়ে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আ/?>গুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে খুশির চিৎকারে পাশের ঘর থেকে এক মহিলা এসে প্রতিবেশীদের সহায়তায় খুশিকে উদ্ধার করে।

ঘটনার রাতে তিনি মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে গাইবান্ধা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। মেয়েটি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আ/?>গুনে খুশির শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে এখন তিনি নিরাপদে আছেন।

মেয়ের বাবা হাসান আলী অভিযোগ করেন, শরীফ তার মেয়ে খুশিকে যৌতুকের জন্য মারধর করত। সম্প্রতি শরীফ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় নির্যাতন বেড়ে যায়। মোমবাতির আ/?>গুনে প্রায়ই হাত-পা পুড়ে যেত খুশি।

তিনি বলেন, ‘ছোলতক মের্দাকে মারছে। আমি বাবা হয়ে সহ্য করতে পারি না। আল্লাহ ছোলা রক্ষা করলেন। সারা ত্বকে ফোসকা। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে খুশি আক্তার বলেন, ‘এখনও সেই রাতের কথা ভাবলেই মনটা ভেঙে যায়। যে (শরীফ) মানুষ নয়; পশু।’

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান এম এ হামিদ পলাশ জানান, খুশির নাভির নিচ থেকে পা পর্যন্ত ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে। স্তনের কিছু অংশও পুড়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘আজ রাতে রোগীর প্লাস্টার খুলে দেওয়া হবে। আমরা চিকিৎসা করছি। সুস্থ হতে সময় লাগবে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম হোসেন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। মামলা রেকর্ডসহ আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এ ঘটনায় সারা এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যে সৃষ্টি হয়।  বর্তমানে ওই হুজুর পলাতক অবস্থায় রয়েছেন।  তাকে সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ।

Related Articles

Back to top button