জাফরুল্লাহ চৌধুরী ড্রাগ পলিসির সঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ছিলেন: আব্দুল্লাহ
গতকাল মঙ্গলবার ১১ তারিখ রাতে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সবাইকে ছেড়ে চিরতরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী । সংবাদ সূত্র অনুযায়ী মৃত্যুর আগে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। চিকিৎসকের শত চেষ্টার পরও তাকে বাঁচানো যায়নি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে স্বাস্থ্য খাতে এক নক্ষত্রের পতন ঘটেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ। ড. জাফরুল্লাহর স্বপ্ন পূরণ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে ডাঃ এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, ডাঃ জাফরুল্লাহ সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় সবসময় উদার ছিলেন। তিনি সব সময় দেশের স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির জন্য চিন্তা ও চেষ্টা করতেন।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) রাতে ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুর পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন ।
এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য তিনি সব সময়ই চিন্তা করতেন। শুধুমাত্র স্বাস্থ্য খাতের কথা চিন্তা করেই তার অবদানকে বড় করে বলা যাবে না। তিনি পাবলিক হেলথ হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ তৈরি করেছেন, কম খরচে মানুষকে ওষুধ দেওয়ার জন্য ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিও তৈরি করেছেন। শিক্ষার অবদান হিসেবে তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি বলেন, ডাঃ জাফরুল্লাহ শুধু সাহসী ছিলেন না, তিনি ছিলেন আপসহীন। করোনার সময় তিনি ওষুধের দাম নিয়ে কথা বলেছিলেন, সুযোগ সন্ধানীরা যেন সুযোগ না নেয় সে বিষয়ে তিনি সোচ্চার ছিলেন। মানুষ যাতে কম খরচে করোনা পরীক্ষা করতে পারে সেজন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে কিট তৈরির ব্যবস্থা করেন তিনি। তিনি তার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নামমাত্র মূল্যে করোনা আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষা ও চিকিৎসা করেন।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের ড্রাগ পলিসির সঙ্গে ড. জাফরুল্লাহ ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। সাধারণ মানুষ যেন কম খরচে সঠিক চিকিৎসা পায় সে কথা তার মনে সবসময় ছিল।
তিনি আরো বলেন, তার সবচেয়ে বড় গুণ হলো তিনি কখনো কারো কাছ থেকে কাজের মূল্যায়ন আশা করেননি। আমি জানি না একজন গুণী ব্যক্তি হিসেবে আমরা তাকে কতটা প্রশংসা করতে পেরেছি। তবে এটুকু বলতে পারি, সাধারণ মানুষ তাকে চিরদিন মনে রাখবে।
জাফরুল্লাহর কাছে সমাজের প্রত্যাশা সম্পর্কে ডাঃ এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের একটাই অনুরোধ, ডাঃ জাফরুল্লাহর স্বপ্ন যেন সত্যি হয়। আপনি যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন তা শেষ হতে দিন। আমরা যদি এই দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালন করতে পারি, তাহলে আমরা তার প্রতি সম্মান দেখাব।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
হাপাতালে নেওয়ার পরে তাকে লাইফ সাপর্টে রাখা হয়। তকে বাঁচানর জন্য কয়েক বার মেডিকেল বোর্ড বসানো হয়। তবুও তার অবস্থার উন্নতি হয়না এক পর্যায়ে সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশ চলে যান তিনি।