দৈনিক খবর

দুবাই থেকে লাগেজভর্তি করে পেঁয়াজ আনছেন ফিলিপিনোরা

দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বিশ্বে সর্বোচ্চ। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ পেসো বা ১০ ডলার ৯০ সেন্ট দরে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১,১০০ টাকার বেশি। এ অবস্থায় দুবাই থেকে ফেরার পথে দামী ফোন ও সুগন্ধির পাশাপাশি লাগেজভর্তি পেঁয়াজ আনছেন ফিলিপাইনের প্রবাসী কর্মীরা।

ফিলিপাইনের দৈনিক র‌্যাপলার জানিয়েছে, সরকার দেশীয় চাহিদা পূরণে যথাসময়ে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না দেওয়ায় স্থানীয় বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম আকাশ ছোঁয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ৬০০ পেসো দরে বিক্রি হচ্ছে, যা বিশ্ববাজারে পেঁয়াজের গড় দামের প্রায় সাত গুণ। বৈশ্বিক বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৮৪ পেসো বা ১ ডলার ৫৪ সেন্ট।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাজার পর্যবেক্ষণ সেলের তথ্যে দেখা যায়, বিদায়ী বছরের তৃতীয় প্রান্তিক থেকে ফিলিপাইনে পেঁয়াজের দাম ক্রমশ বাড়ছে। সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় ডিসেম্বরে পেঁয়াজের দাম ছিল ৩২৮ শতাংশ বেশি। চলতি মাসে আরও বেড়েছে জরুরি কৃষি পণ্যটির দাম।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির পুরোটাই সরকারের অদূরদর্শীতার ফল, যার সুযোগ নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। বর্তমানে বাজারে ৬০০ পেসো দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ গত আগস্টে আড়ৎদাররা কৃষকের কাছ থেকে ১০০ পেসোর কমে কিনেছেন। কেউ কেউ প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০ পেসো দরে কিনে মজুত করেছেন।

এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্য নাশনাল জানিয়েছে, দেশের বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০ দিরহাম (১,১৩৫ টাকা) দরে বিক্রি হচ্ছে দেখে আমিরাতে প্রবাসী ফিলিপিনোরা দেশে অবস্থানরত পরিবার-স্বজনকে সাহায্যের উপায় খুঁজছেন। গোড়ার দিকে কেউ কেউ কিছুটা দ্বিধা নিয়ে লাগেজে পেঁয়াজের ব্যাগ ভরলেও এখন অনেকে সে পথে হাঁটছেন।

খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেঁয়াজের মতো দামী পণ্য নিয়ে যেতে বাধা থাকবে কিনা এ বিষয়ে দ্বিধান্বিত ছিলেন অনেক প্রবাসী ফিলিপিনো। পেঁয়াজ যেহেতু আমিরাতে নিয়ন্ত্রিত পণ্য হিসেবে শ্রেণিভূক্ত নয় এবং এয়ারলাইন্সের নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকাতেও নেই, তাই লাগেজ বোঝাই করে নিয়ে যেতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে না।

আমিরাতের বাজারে প্রতি কেজি ২ দিরহাম অথবা আরও কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ফিলিপিনো পরিবারগুলো তাই দুবাই ও আমিরাত থেকে দেশে প্রত্যাবর্তনরত স্বজন-বন্ধুদের বলছে যাতে তারা লাগেজে করে অতি দামী পণ্যটি নিয়ে যায়।

গোড়ার দিকে লাগেজে চকলেট, সুগন্ধি, চায়ের পাশে পেঁয়াজ রাখার বিষয়টি কারও কারও কাছে অদ্ভূত শোনাত। তবে এখন ফিলিপিনো প্রবাসীদের একাংশের কাছে বিষয়টি নিতান্তই স্বাভাবিক মনে হয়।

তবে দুবাইয়ে ফিলিপাইনের কনসুলেট-জেনারেলের এগ্রিকালচার অ্যাটাশে নোলেত ফালজেনসিও বলেছেন, লাগেজে করে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য পেঁয়াজ নিলেও তা আমদানি হিসেবে বিবেচিত হবে। এজন্য ব্যুরো অব প্ল্যান্ট ইন্ডাস্ট্রি (বিপিআই) থেকে প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টিন সার্টিফিকেট (পিকিউসি) নিতে হবে। আমিরাতে অবস্থানরতরা বিপিআইতে ইমেইল পাঠিয়ে আবেদন করতে পারেন।

Related Articles

Back to top button