দৈনিক খবর

সন্তানদের দিলেন না, কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দান করে দিলেন অসহায় বৃদ্ধ

বৃদ্ধ বয়সে বাবা মাকে অনেক সন্তান দেখাশুনা করেন না বা করলেও সেটা অনেক সময় অবহেলার সাথে করে থাকেন। যার কারনে বাবা-মা অসহায় বোধ করে থাকেন, তবে তারা নিরুপায় হওয়ার কারনে কোনো কিছু করতে বা বলতে পারেন না। অনেক সময় সন্তানেরা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়ে থাকেন কিংবা নিজেরাই স্বেচ্ছায় চলে যান বৃদ্ধাশ্রমে। এবার এক বৃদ্ধ বাবা ক্ষোভে নিলেন ভিন্ন এক সিদ্ধান্ত।

ভারতের উত্তর প্রদেশে ৮৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি তার সন্তানদের দেওয়ার পরিবর্তে সরকারকে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, নাথু সিং নামের ঐ বৃদ্ধ, যিনি তার সন্তানদের কাছে ‘বোঝা’ ছিলেন, তিনি তার মৃ”/তদেহ একটি মেডিকেল কলেজে উইল করে দেওয়ার ঘোষনা দিয়ে বলেছেন, যেন তার কোনো ছেলে ও মেয়ের কেউ যেন তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ না দেয়।

মুজাফফরনগরের বাসিন্দা নাথু সিংয়ের মালিকানাধীন বসতবাড়ি এবং জমির মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। তার একটি ছেলে আছে যে একজন স্কুল শিক্ষক। এ ছাড়া তার চার মেয়ে রয়েছে, যাদের সবাই বিবাহিত। স্ত্রীর প্রয়ানের পর থেকে বৃদ্ধ একাই থাকতেন। প্রায় সাত মাস আগে তিনি গ্রামের একটি বৃদ্ধাশ্রমে চলে যান।

৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলেন যখন তার সন্তানদের কেউ তাকে দেখতে আসেনি। তিনি তার সম্পত্তি সরকারের কাছে উইল করেন এবং তার প্রয়ানের পর সেখানে একটি হাসপাতাল বা একটি স্কুল নির্মাণ করতে বলেন।

টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে তিনি বলেন, “এই বৃদ্ধ বয়সে আমি আমার সন্তান এবং পুত্রবধূর সাথে থাকতে পারতাম, কিন্তু তারা কেউই আমাকে গ্রহণ করেনি।” তাই আমি আমার সম্পত্তি সরকারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

উইলে আরও বলা হয়েছে যে, তিনি গবেষণা ও একাডেমিক কাজে ব্যবহারের জন্য তার শরীরও দান করছেন। এমন ঘটনার পরও তার পরিবারের সদস্যরা এখনো এগিয়ে আসেননি।

বৃদ্ধাশ্রমের পরিচালক রেখা সিং জানান, প্রায় ছয় মাস আগে ওই বৃদ্ধ সেখানে থাকতে শুরু করেন। এরপর থেকে কেউ তাকে দেখতে আসেনি। বৃদ্ধ তার সন্তানদের নিয়ে খুব বিরক্ত ছিলেন এবং তার সম্পত্তি রাজ্য সরকারকে দিয়ে দিতে চাইতেন।

এলাকার সাব-রেজিস্ট্রার বলেছেন যে তারা নাথু সিংয়ের হলফনামা পেয়েছেন এবং তার প্রয়ানের পরে এটি কার্যকর হবে। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার।

ভারতে অনেক বয়স্ক মানুষ বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নেয়, যা অবসর গৃহ বা প্রবীণ জীবিত সম্প্রদায় নামেও পরিচিত। এই প্রবণতার জন্য বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

প্রসংগত, পরিবর্তনশীল সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে পরিবারগুলি ছোট এবং আরও বেশি অমানবিক হয়ে উঠছে, যার কারনে বয়স্ক ব্যক্তিদের তাদের যত্ন নেওয়ার জন্য কেউ থাকে না। কিছু বয়স্ক লোকের পরিবারের কোনো সদস্য বা বন্ধু অনেক সময় থাকে না যারা তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং যত্ন পায় না, যার কারনে এক সময় তারা বৃদ্ধাশ্রমে চলে যেতে বাধ্য হয়।

Related Articles

Back to top button