দৈনিক খবর

‘বেঁচে আছি, অবাক লাগছে’ তুরস্ক থেকে জানালেন অভিজ্ঞতা

সময় যত গড়াচ্ছে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে হতাহতের সংখ্যা ততই বাড়ছে। নিহতের সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার ছুঁই ছুঁই। খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের তীব্র সংকট চলছে সেখানে। সিরিয়া-তুরস্কে ভূমিকম্প আঘাত হানার পর একশ ঘণ্টারও বেশি সময় পার হওয়ার কারণে ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে জীবিত কাউকে উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা থেকে বেচে ফেরা বাঙালি ক্রিকেটার রোমিয়ো নাথ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারকে জানালেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা। বললেন, ‘বেঁচে আছি, অবাক লাগছে’।

ঘটনার বর্ণনায় রোমিয়ো নাথ বলেন, টিভির দিকে তাকাতেই পারছি না। বন্ধ করে রাখছি। গত ১১ বছর ধরে যে দেশে আমি থাকি, ক্রিকেটে যে দেশের প্রতিনিধিত্ব করি, সেটা এ ভাবে দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে! এত মৃত্যু! এত অসহায়তা! এত ভাঙাচোরা! বিশ্বাস হচ্ছে না, এই ধ্বংস উপত্যকায় আমি বেঁচে আছি!

সোমবার যে সময়টায় ভূমিকম্প হয়, তুরস্কে তখন ভোর। ঘুম ভাঙেনি কারও। ঘুমের মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ ‘চির ঘুমে’ চলে গেল! তবে আমি ভালো আছি। কেন জানেন? মাথার উপর ছাদ রয়েছে। দু’বেলা সপরিবার খেতে পাচ্ছি। এটাই অনেক। কারণ, তুরস্কের একটা অংশের মানুষের কাছে আজ এ দুটোর কোনওটাই নেই। তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুল। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সপরিবার এই শহরেই থাকি। এখানে ভূমিকম্পের কোনও প্রভাব পড়েনি। সোমবার ঘুম থেকে ওঠার পরে জানতে পেরেছিলাম, কী ঘটে গিয়েছে দেশের অন্য প্রান্তে। বাড়ি ফিরে রাতে সকলে ঘুমাচ্ছিলেন। ভোরের আলো ফোটার আগেই সব শেষ। অন্তত ৮০০০ বহুতল ভেঙে পড়েছে। এখানকার বহুতলগুলিতে একাধিক বাড়ি থাকে।

কত মানুষ যে আটকে গিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। তুরস্ক সরকার বলছে, ১৪ হাজার মানুষ মারা গিয়েছেন। আমার মনে হয়, ওই সংখ্যা শেষমেশ আরও তিন গুণ হবে। ভূমিকম্প হয়েছে কাহরামনমারাস, আদিয়ামানের দিকে। আমাদের শহর থেকে অনেকটাই দূর। তুরস্কের পশ্চিম দিকে ইস্তানবুল। আর ভূমিকম্প হয়েছে পূর্ব দিকে।

কিন্তু গোটা দেশটা চুপ করে গিয়েছে। বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে অর্জুন আর আমি। অর্জুনের স্কুল বন্ধ। আমিও অফিস যেতে পারছি না। ইচ্ছে করছে না। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জামাকাপড়, কম্বল, খাবার পাঠাচ্ছি। যে ভাবে পারছি সাহায্য করার চেষ্টা করছি। আমি একা নই, সবাই করছে। ১০টা শহরে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সে সব জায়গায় সাহায্য পাঠানো হচ্ছে দেশের অন্যান্য শহর থেকে। কিছু পৌঁছচ্ছে। কিছু এখনও রাস্তায় আটকে।

Related Articles

Back to top button